ঢাকা ০২:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের ছুটিতে বাসার নিরাপত্তায় যা করতে হবে

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ছুটি লম্বা হওয়ায় আরো বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। কিন্তু এই ছুটির সময় ফাঁকা ঢাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে যায়।

তাই নগরবাসীকে পুলিশের পক্ষ থেকে এবার ১৪টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আর পুলিশও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে। গত কোরবানির ঈদের চার দিনে ঢাকার ৫০টি থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ১০০-রও বেশি।

এর মধ্যে ফার্মগেট এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ কনস্টেবলও নিহত হয়েছেন। আর বাড্ডা এলাকায় দিনের বেলা একটি বাসার পাঁচজনকে হাত পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনা ঘটে ওই ছুটির মধ্যেই। ডাকাতরা নগদ ১১ লাখ ৩০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী, গৃহস্থরা যা বলেন:
ঈদের ছুটিতে দোকানপাট, মার্কেট বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানগুলো ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি এবং অলঙ্কার নিকেতনের মালিক এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘যাদের বড় মার্কেটে স্বর্ণের দোকান তাদের নিরাপত্তা নিয়ে তেমন উদ্বেগ নাই। কারণ সেখানে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। পুরো মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায়। নিরাপত্তা প্রহরীরাও প্রশিক্ষিত। আর যাদের দোকান ছোট মার্কেটে বা আলাদা তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি। ওই সব দোকানেই ঈদের সময় চুরি ডাকাতি হয়। অনেক সময় সিকিউরিটি গার্ডরাও এর সাথে যুক্ত থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দাবি, ছুটির সময় যেন মার্কেট এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়। বিশেষ করে রাতে এই টহল বেশি হওয়া জরুরি। আর যেসব এলাকা একটু বেশি ফাঁকা সেখানে টহল বেশি রাখা দরকার।’

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো: হেলালউদ্দিন এমনই দাবি করে বলেন, ‘দোকানগুলোর ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই এখন সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে। মার্কেটগুলোও সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো কোথাও কোথাও সিকিউরিটি গার্ডরাই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তখন কিছু করার থাকে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এবার সিকিউরিটি গার্ডদের ছুটি না দেয়ার জন্য বলেছি। ঈদের ছুটির পর তাদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়া হবে।’

এ দিকে, মিরপুরের গৃহিণী জেসমিন লিপি বলেন, ‘চোর চক্র কৌশল পাল্টিয়েছে৷ তারা তাদের দলের নারী সদস্যদের ব্যবহার করছে। তারা সাথে শিশুদের নিয়ে এমনভাবে যায় যে তারা কোনো বাসায় বেড়াতে এসেছে। এভাবে কৌশলে তারা ফ্ল্যাটে ঢুকে চুরি করে। আবার কোনো ফ্ল্যাটে দু’জন দারোয়ান থাকলে যখন একজন ছুটিতে থাকে তখন সুযোগ বুঝে চোর দিনের বেলাতেই ঢুকে পড়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আর আলাদা বা ছোট বাড়িতে গ্রিলকাটা চোর বা ডাকাতরা সুযোগ নেয়।’

জেসমিন আরো বলেন, ‘এই সময়ে ফাঁকা ঢাকায় ছিনতাইকারী ও প্রতারক চক্র বেড়ে যায়। রাস্তার পাশে অসুস্থতার ভান করে কেউ শুয়ে থাকেন। আপনি সহায়তা করতে গেলেই বিপদে পড়ার আশঙ্কা আছে। আপনাকে চেতনানাশক দিয়ে প্রতারক সব কিছু কেড়ে নিতে পারে।’

কোন এলাকা অপরাধ প্রবণ:
ঢাকার তিনটি এলাকাকে বেশি অপরাধপ্রবণ বলে বিবেচনা করা হয়। এই তিনটি এলাকা হলো মিরপুর, রমনা এবং তেজগাঁও।২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) আটটি বিভাগে চুরির মামলা হয়েছে এক হাজার ৭৮৬টি, ডাকাতি ৩৭টি, দস্যুতা ২৫০টি, খুন ১৮০টি ও অপহরণের ৭৭টি মামলা হয়েছে। আর ১৭৪টি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। এই সময়ে পুলিশের তেজগাঁ বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৩৯২টি চুরির মামলা হয়েছে৷ ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৭১টি৷ ডাকাতি-দস্যুতার মামলা হয়েছে ৭৭টি৷ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮০টি চুরির মামলা হয়েছে রমনা বিভাগে। ওই বিভাগে ডাকাতি ও দস্যুতার ৩২টি এবং ছিনতাইয়ের ১৪টি মামলা হয়েছে। মিরপুর বিভাগে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ২৬টি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ডাকাতি ও দস্যুতার ২৩টি, চুরির ১৯৪টি, খুনের ২১টি ও অপহরণের আটটি মামলা হয়েছে। এইসব এলাকায় পুলিশ এবার ছুটিতে বিশেষ নজর রাখবে বলে জানিয়েছে৷

পুলিশের পরামর্শ ও নিরাপত্তা:
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন জানান, ‘ঈদের ছুটিতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা আছে। আর নগরবাসীকেও আমরা ১৪ ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। আমরা বাড়তি টহল, চেকপোস্ট, নজরদারি ছুটির মধ্যে এগুলো বাড়াব। আর নগরবাসীকেও তাদের বাসাবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। আমরা ফাঁকা ঢাকায় মোটরসাইকেলসহ যানবাহনের গতিও নিয়ন্ত্রণে রাখব।’

ডিএমপির পরামর্শের মধ্যে আছে নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালঙ্কার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রাখা। রাতে কিংবা দিনে একসাথে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন, পানির লাইন, সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে রাখা। বাসা বাড়িতে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে দরজা জানালা খুলে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের করার পর গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করা। চুরি প্রতিরোধে বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসানোসহ আগের বসানো সিসি ক্যামেরা সচল রাখা৷ বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা। প্রয়োজনে ৯৯৯-ফোন করে জানানো। মোটরসাইকেল চুরি রোধে এলার্ম লাগাতে হবে।

খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সব পরামর্শ পুলিশের আওতায় পড়ে না। তবুও সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা পরামর্শ দিয়েছি। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে কথা বলেছি। কথা বলেছি বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির কর্মকর্তাদের সাথে। প্রত্যেক জোনের ডিসি এবং ওসিরা এই দায়িত্ব পালন করেছেন। আর স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তার জন্য বাজুসের সাথে আলাদা বৈঠক করেছি। আমাদের পরামর্শ হলো, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে আইপি সিসি ক্যামেরা লাগানো। সেটা করলে আপনি বিদেশে গেলেও সেখান থেকে মনিটরিং করতে পারবেন। আর বাসায় যদি কাউকে রেখে যান এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সঠিক পরিচয় নিশ্চিত হবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার প্রবেশ পথ ছাড়াও নির্জন এলাকায় বাড়তি চেকপোস্ট থাকবে। আর টহল বাড়ানো হবে নির্জন ঢাকায় চুরি ও ছিনতাই রোধে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির ধারণা, এবার ঈদে ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ ঢাকার বাইরে যাবেন৷ এর মধ্যে রাজধানী থেকেই ঢাকা ছাড়বেন এক কোটি মানুষ৷ তাদের হিসাবে গত ঈদে রাজধানী এবং আশপাশ এলাকা থেকে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন।

আরো পড়ুন : হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিকার

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ঈদের ছুটিতে বাসার নিরাপত্তায় যা করতে হবে

আপডেট সময় ০১:২৩:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ছুটি লম্বা হওয়ায় আরো বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। কিন্তু এই ছুটির সময় ফাঁকা ঢাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে যায়।

তাই নগরবাসীকে পুলিশের পক্ষ থেকে এবার ১৪টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আর পুলিশও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে। গত কোরবানির ঈদের চার দিনে ঢাকার ৫০টি থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ১০০-রও বেশি।

এর মধ্যে ফার্মগেট এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ কনস্টেবলও নিহত হয়েছেন। আর বাড্ডা এলাকায় দিনের বেলা একটি বাসার পাঁচজনকে হাত পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনা ঘটে ওই ছুটির মধ্যেই। ডাকাতরা নগদ ১১ লাখ ৩০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী, গৃহস্থরা যা বলেন:
ঈদের ছুটিতে দোকানপাট, মার্কেট বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানগুলো ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি এবং অলঙ্কার নিকেতনের মালিক এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘যাদের বড় মার্কেটে স্বর্ণের দোকান তাদের নিরাপত্তা নিয়ে তেমন উদ্বেগ নাই। কারণ সেখানে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। পুরো মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায়। নিরাপত্তা প্রহরীরাও প্রশিক্ষিত। আর যাদের দোকান ছোট মার্কেটে বা আলাদা তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি। ওই সব দোকানেই ঈদের সময় চুরি ডাকাতি হয়। অনেক সময় সিকিউরিটি গার্ডরাও এর সাথে যুক্ত থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দাবি, ছুটির সময় যেন মার্কেট এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হয়। বিশেষ করে রাতে এই টহল বেশি হওয়া জরুরি। আর যেসব এলাকা একটু বেশি ফাঁকা সেখানে টহল বেশি রাখা দরকার।’

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো: হেলালউদ্দিন এমনই দাবি করে বলেন, ‘দোকানগুলোর ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই এখন সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে। মার্কেটগুলোও সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো কোথাও কোথাও সিকিউরিটি গার্ডরাই অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তখন কিছু করার থাকে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এবার সিকিউরিটি গার্ডদের ছুটি না দেয়ার জন্য বলেছি। ঈদের ছুটির পর তাদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়া হবে।’

এ দিকে, মিরপুরের গৃহিণী জেসমিন লিপি বলেন, ‘চোর চক্র কৌশল পাল্টিয়েছে৷ তারা তাদের দলের নারী সদস্যদের ব্যবহার করছে। তারা সাথে শিশুদের নিয়ে এমনভাবে যায় যে তারা কোনো বাসায় বেড়াতে এসেছে। এভাবে কৌশলে তারা ফ্ল্যাটে ঢুকে চুরি করে। আবার কোনো ফ্ল্যাটে দু’জন দারোয়ান থাকলে যখন একজন ছুটিতে থাকে তখন সুযোগ বুঝে চোর দিনের বেলাতেই ঢুকে পড়ে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আর আলাদা বা ছোট বাড়িতে গ্রিলকাটা চোর বা ডাকাতরা সুযোগ নেয়।’

জেসমিন আরো বলেন, ‘এই সময়ে ফাঁকা ঢাকায় ছিনতাইকারী ও প্রতারক চক্র বেড়ে যায়। রাস্তার পাশে অসুস্থতার ভান করে কেউ শুয়ে থাকেন। আপনি সহায়তা করতে গেলেই বিপদে পড়ার আশঙ্কা আছে। আপনাকে চেতনানাশক দিয়ে প্রতারক সব কিছু কেড়ে নিতে পারে।’

কোন এলাকা অপরাধ প্রবণ:
ঢাকার তিনটি এলাকাকে বেশি অপরাধপ্রবণ বলে বিবেচনা করা হয়। এই তিনটি এলাকা হলো মিরপুর, রমনা এবং তেজগাঁও।২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) আটটি বিভাগে চুরির মামলা হয়েছে এক হাজার ৭৮৬টি, ডাকাতি ৩৭টি, দস্যুতা ২৫০টি, খুন ১৮০টি ও অপহরণের ৭৭টি মামলা হয়েছে। আর ১৭৪টি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। এই সময়ে পুলিশের তেজগাঁ বিভাগে সবচেয়ে বেশি ৩৯২টি চুরির মামলা হয়েছে৷ ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৭১টি৷ ডাকাতি-দস্যুতার মামলা হয়েছে ৭৭টি৷ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮০টি চুরির মামলা হয়েছে রমনা বিভাগে। ওই বিভাগে ডাকাতি ও দস্যুতার ৩২টি এবং ছিনতাইয়ের ১৪টি মামলা হয়েছে। মিরপুর বিভাগে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ২৬টি, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ডাকাতি ও দস্যুতার ২৩টি, চুরির ১৯৪টি, খুনের ২১টি ও অপহরণের আটটি মামলা হয়েছে। এইসব এলাকায় পুলিশ এবার ছুটিতে বিশেষ নজর রাখবে বলে জানিয়েছে৷

পুলিশের পরামর্শ ও নিরাপত্তা:
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন জানান, ‘ঈদের ছুটিতে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা আছে। আর নগরবাসীকেও আমরা ১৪ ধরনের পরামর্শ দিয়েছি। আমরা বাড়তি টহল, চেকপোস্ট, নজরদারি ছুটির মধ্যে এগুলো বাড়াব। আর নগরবাসীকেও তাদের বাসাবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। আমরা ফাঁকা ঢাকায় মোটরসাইকেলসহ যানবাহনের গতিও নিয়ন্ত্রণে রাখব।’

ডিএমপির পরামর্শের মধ্যে আছে নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালঙ্কার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রাখা। রাতে কিংবা দিনে একসাথে মুখে মাস্ক এবং মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। গ্যাস সিলিন্ডার অথবা গ্যাসের লাইন, পানির লাইন, সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে রাখা। বাসা বাড়িতে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে দরজা জানালা খুলে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের করার পর গ্যাসের চুলা জ্বালানো কিংবা বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করা। চুরি প্রতিরোধে বাসা-বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসানোসহ আগের বসানো সিসি ক্যামেরা সচল রাখা৷ বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখা। প্রয়োজনে ৯৯৯-ফোন করে জানানো। মোটরসাইকেল চুরি রোধে এলার্ম লাগাতে হবে।

খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সব পরামর্শ পুলিশের আওতায় পড়ে না। তবুও সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা পরামর্শ দিয়েছি। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে কথা বলেছি। কথা বলেছি বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির কর্মকর্তাদের সাথে। প্রত্যেক জোনের ডিসি এবং ওসিরা এই দায়িত্ব পালন করেছেন। আর স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তার জন্য বাজুসের সাথে আলাদা বৈঠক করেছি। আমাদের পরামর্শ হলো, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে আইপি সিসি ক্যামেরা লাগানো। সেটা করলে আপনি বিদেশে গেলেও সেখান থেকে মনিটরিং করতে পারবেন। আর বাসায় যদি কাউকে রেখে যান এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সঠিক পরিচয় নিশ্চিত হবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার প্রবেশ পথ ছাড়াও নির্জন এলাকায় বাড়তি চেকপোস্ট থাকবে। আর টহল বাড়ানো হবে নির্জন ঢাকায় চুরি ও ছিনতাই রোধে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির ধারণা, এবার ঈদে ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ ঢাকার বাইরে যাবেন৷ এর মধ্যে রাজধানী থেকেই ঢাকা ছাড়বেন এক কোটি মানুষ৷ তাদের হিসাবে গত ঈদে রাজধানী এবং আশপাশ এলাকা থেকে এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন।

আরো পড়ুন : হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিকার