ঢাকা ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলা সমুদ্র বন্দরে বেড়েছে আমদানি রপ্তানি; রাজস্ব আয় ৩১৯ কোটি টাকা

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলার আধুনিকায়নে বর্তমান সরকারের সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় বন্দরে বেশি সংখ্যক জাহাজ আগমনের পাশাপাশি বিদেশি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, কার্গো ক্যান্ডলিং এবং রাজস্ব আদায়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোংলা বন্দরের সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মত।

পদ্মা সেতু ও মোংলা-খুলনা রেল নেটওয়ার্কে মোংলা বন্দর যুক্ত হওয়ায় উন্নত হিন্টারল্যান্ড যোগাযোগ ও অবকাঠামো সক্ষমতার সুযোগে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে মোংলা বন্দরের ওপর ব্যবহারকারীদের নির্ভরতা দ্রুত বাড়ছে। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বন্দরটিতে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বেড়েছে। ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান নিয়মিত মোংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করলে বন্দরে জাহাজ আরো বাড়বে। কাজে আসবে বন্দরের বর্ধিত সক্ষমতা। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায় মোংলা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে কর্মচাঞ্চলতা বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে বন্দরের রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৭ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে ৮৪০টি বিদেশি জাহাজ আনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ৬টি বেড়ে এ অর্থবছরে মোংলায় জাহাজ এসেছে ৮৪৬টি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোংলা বন্দর রাজস্ব আয় করেছে ৩১৯ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দরের রাজস্ব আয় ছিল ৩০২ কোটি টাকা। এক বছরে আয় বেড়েছে ১৭ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে বন্দরে কন্টেইনার জাহাজ আসার সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশি সুফল পাচ্ছে মোংলা বন্দর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে মোট ৩১ হাজার ৪৪ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৪ হাজার ৪৬১ টিইইউজ বেশি। ওই বছর বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ৫৮৩ টিইইউজ। এছাড়াও বিদায়ী অর্থবছরে বন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে যেখানে কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল ৯৯.০৫ লক্ষ মেট্রিকটন সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয় ১০৮.৬৫ লক্ষ মেট্টিকটন। দেশে মোট আমদানির ৬০ শতাংশ রিকন্ডিশন গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হয়। বিদেশ থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ গাড়ি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাস হওয়ায় বেড়েছে রাজস্ব আয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে মোট গাড়ি আমদানি করা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৪০টি। সবমিলিয়ে বিগত বছরগুলোর তুলনায় সবগুলো সূচকেই মোংলা বন্দরের অবস্থান উর্ধ্বমূখী।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে ৮৪৬টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয় ১৫ হাজার ৩৪০ ইউনিট। এ সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিংও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল সূচক পজিটিভ ধারায় থাকার ফলে বন্দরে নিট মুনাফা ২৮.৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে।

আরো পড়ুন : মোংলায় বিধবা নারীর ২ কোটি টাকার জমি দুই প্রতারক দালালের কব্জায় !

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মোংলা সমুদ্র বন্দরে বেড়েছে আমদানি রপ্তানি; রাজস্ব আয় ৩১৯ কোটি টাকা

আপডেট সময় ১০:৩৬:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলার আধুনিকায়নে বর্তমান সরকারের সুদূরপ্রসারী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় বন্দরে বেশি সংখ্যক জাহাজ আগমনের পাশাপাশি বিদেশি রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, কার্গো ক্যান্ডলিং এবং রাজস্ব আদায়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোংলা বন্দরের সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মত।

পদ্মা সেতু ও মোংলা-খুলনা রেল নেটওয়ার্কে মোংলা বন্দর যুক্ত হওয়ায় উন্নত হিন্টারল্যান্ড যোগাযোগ ও অবকাঠামো সক্ষমতার সুযোগে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে মোংলা বন্দরের ওপর ব্যবহারকারীদের নির্ভরতা দ্রুত বাড়ছে। অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় বন্দরটিতে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বেড়েছে। ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান নিয়মিত মোংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করলে বন্দরে জাহাজ আরো বাড়বে। কাজে আসবে বন্দরের বর্ধিত সক্ষমতা। বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বৃদ্ধি পাওয়ায় মোংলা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমে কর্মচাঞ্চলতা বেড়েছে। এক বছরের ব্যবধানে বন্দরের রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৭ কোটি টাকা।

বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে ৮৪০টি বিদেশি জাহাজ আনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ৬টি বেড়ে এ অর্থবছরে মোংলায় জাহাজ এসেছে ৮৪৬টি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোংলা বন্দর রাজস্ব আয় করেছে ৩১৯ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দরের রাজস্ব আয় ছিল ৩০২ কোটি টাকা। এক বছরে আয় বেড়েছে ১৭ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে বন্দরে কন্টেইনার জাহাজ আসার সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে বেশি সুফল পাচ্ছে মোংলা বন্দর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে মোট ৩১ হাজার ৪৪ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৪ হাজার ৪৬১ টিইইউজ বেশি। ওই বছর বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ৫৮৩ টিইইউজ। এছাড়াও বিদায়ী অর্থবছরে বন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে যেখানে কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল ৯৯.০৫ লক্ষ মেট্রিকটন সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং করা হয় ১০৮.৬৫ লক্ষ মেট্টিকটন। দেশে মোট আমদানির ৬০ শতাংশ রিকন্ডিশন গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হয়। বিদেশ থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ গাড়ি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে খালাস হওয়ায় বেড়েছে রাজস্ব আয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বন্দরে মোট গাড়ি আমদানি করা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৪০টি। সবমিলিয়ে বিগত বছরগুলোর তুলনায় সবগুলো সূচকেই মোংলা বন্দরের অবস্থান উর্ধ্বমূখী।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মোংলা বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে ৮৪৬টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানি হয় ১৫ হাজার ৩৪০ ইউনিট। এ সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিংও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল সূচক পজিটিভ ধারায় থাকার ফলে বন্দরে নিট মুনাফা ২৮.৫৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট প্রকল্পের আওতায় অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে।

আরো পড়ুন : মোংলায় বিধবা নারীর ২ কোটি টাকার জমি দুই প্রতারক দালালের কব্জায় !