ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেটফ্লিক্স সিরিজে ‘হিন্দু-মুসলিম’ বিতর্ক

১৯৯৯ সাল। তখন ভারতীয় একটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা নিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্সে একটি সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। আর এই সিরিজে ‘হিন্দু-মুসলিম’ ইস্যু নিয়ে ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আইসি ৮১৪’ নামের এই সিরিজ পরিচালনা করেছেন অনুভব সিনহা। বাস্তবে, ‘আইসি ৮১৪’ নামের একটি বিমান নেপালের কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।

মূলত, ভারতের জেলে আটক থাকা বেশ কয়েকজন জঙ্গির মুক্তির দাবিতেই ওই বিমানটি ছিনতাই করা হয়।

বিমান ছিনতাইয়ের পর আট দিন ধরে চলে দীর্ঘ আলোচনা। তারপর বিমানের যাত্রীদের ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ভারত সরকার মাসুদ আজহারসহ তিন জঙ্গিকে মুক্তি দেয়। এই ভুলের ভারী মূল্য দিতে হয় ভারতকে।

কারণ- মুক্তির পর ‘জয়শ-ই-মোহাম্মদ’ গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আজহার। পরবর্তী সময়ে ভারতে বেশ কয়েকটি হামলার জন্য তার বাহিনীকে দায়ী করা হয়। মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণাও করে জাতিসংঘ।

আজহারসহ এবং অন্যান্য জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভারতে এখনো বিতর্কিত। বিরোধীরা প্রায় সময়ই এ ঘটনার জন্য বর্তমানে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি)-কে দায়ী করে। কারণ, ১৯৯৯ সালে বিজেপি-ই ভারতের ক্ষমতায় ছিলো।

ছয় পর্বের ওই সিরিজ ‘ফ্লাইট ইনটু ফিয়ার: দ্য ক্যাপ্টেনস স্টোরি’ নামে দেবী শরণের লেখা একটি বই এবং সাংবাদিক শ্রীঞ্জয় চৌধুরীর তথ্য অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। ছিনতাই হওয়া বিমানটির ক্যাপ্টেন ছিলেন দেবী শরণ।

গত সপ্তাহে, মুক্তি পাওয়া সিরিজটি শুরু হয়েছে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিনতাইকারীদের ফ্লাইটে ওঠার মধ্য দিয়ে। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাঁচ জঙ্গি ঘোষণা করে, ১১ জন ক্রু, ১৭৯ জন যাত্রীসহ বিমানটি তারা ছিনতাই করেছে।

সিরিজ মুক্তি পাওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সিরিজে দেখানো ছিনতাইকারীদের নাম নিয়ে আপত্তি জানাতে শুরু করে। সিরিজে দেখা যায়, ছিনতাইকারীরা একে অপরকে ভোলা এবং শংকরের মতো সাধারণ হিন্দু নামে সম্বোধন করছেন।

যদিও তাদের প্রকৃত নামগুলো ছিল ইব্রাহিম আতহার, শহীদ আখতার সাঈদ, সানি আহমেদ কাজী, মিস্ত্রি জহুর ইব্রাহিম এবং শাকির। তাঁরা সবাই ছিলেন মুসলিম এবং পাকিস্তানের নাগরিক।

হিন্দু নাম ব্যবহারের বিষয়ে এক্সে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য মত দিয়েছেন, সিরিজে ছিনতাইকারীদের ‘অমুসলিম’ উপনাম ব্যবহার করে চলচ্চিত্র নির্মাতারা বোঝাতে চেয়েছেন, হিন্দুরা-ই ‘আইসি-৮১৪’ হাইজ্যাক করেছে।

আরো পড়ুন : ফ্রি’তে দেখা যাবে ওসি হারুনকে

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

কয়রায় যৌথ অভিযানে ধারালো অস্ত্রসহ নাশকতারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

নেটফ্লিক্স সিরিজে ‘হিন্দু-মুসলিম’ বিতর্ক

আপডেট সময় ১২:২৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৯৯৯ সাল। তখন ভারতীয় একটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা নিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্সে একটি সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। আর এই সিরিজে ‘হিন্দু-মুসলিম’ ইস্যু নিয়ে ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আইসি ৮১৪’ নামের এই সিরিজ পরিচালনা করেছেন অনুভব সিনহা। বাস্তবে, ‘আইসি ৮১৪’ নামের একটি বিমান নেপালের কাঠমান্ডু থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে ছিনতাই করে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।

মূলত, ভারতের জেলে আটক থাকা বেশ কয়েকজন জঙ্গির মুক্তির দাবিতেই ওই বিমানটি ছিনতাই করা হয়।

বিমান ছিনতাইয়ের পর আট দিন ধরে চলে দীর্ঘ আলোচনা। তারপর বিমানের যাত্রীদের ছেড়ে দেওয়ার শর্তে ভারত সরকার মাসুদ আজহারসহ তিন জঙ্গিকে মুক্তি দেয়। এই ভুলের ভারী মূল্য দিতে হয় ভারতকে।

কারণ- মুক্তির পর ‘জয়শ-ই-মোহাম্মদ’ গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আজহার। পরবর্তী সময়ে ভারতে বেশ কয়েকটি হামলার জন্য তার বাহিনীকে দায়ী করা হয়। মাসুদ আজহারকে সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণাও করে জাতিসংঘ।

আজহারসহ এবং অন্যান্য জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভারতে এখনো বিতর্কিত। বিরোধীরা প্রায় সময়ই এ ঘটনার জন্য বর্তমানে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি)-কে দায়ী করে। কারণ, ১৯৯৯ সালে বিজেপি-ই ভারতের ক্ষমতায় ছিলো।

ছয় পর্বের ওই সিরিজ ‘ফ্লাইট ইনটু ফিয়ার: দ্য ক্যাপ্টেনস স্টোরি’ নামে দেবী শরণের লেখা একটি বই এবং সাংবাদিক শ্রীঞ্জয় চৌধুরীর তথ্য অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। ছিনতাই হওয়া বিমানটির ক্যাপ্টেন ছিলেন দেবী শরণ।

গত সপ্তাহে, মুক্তি পাওয়া সিরিজটি শুরু হয়েছে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছিনতাইকারীদের ফ্লাইটে ওঠার মধ্য দিয়ে। উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাঁচ জঙ্গি ঘোষণা করে, ১১ জন ক্রু, ১৭৯ জন যাত্রীসহ বিমানটি তারা ছিনতাই করেছে।

সিরিজ মুক্তি পাওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সিরিজে দেখানো ছিনতাইকারীদের নাম নিয়ে আপত্তি জানাতে শুরু করে। সিরিজে দেখা যায়, ছিনতাইকারীরা একে অপরকে ভোলা এবং শংকরের মতো সাধারণ হিন্দু নামে সম্বোধন করছেন।

যদিও তাদের প্রকৃত নামগুলো ছিল ইব্রাহিম আতহার, শহীদ আখতার সাঈদ, সানি আহমেদ কাজী, মিস্ত্রি জহুর ইব্রাহিম এবং শাকির। তাঁরা সবাই ছিলেন মুসলিম এবং পাকিস্তানের নাগরিক।

হিন্দু নাম ব্যবহারের বিষয়ে এক্সে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য মত দিয়েছেন, সিরিজে ছিনতাইকারীদের ‘অমুসলিম’ উপনাম ব্যবহার করে চলচ্চিত্র নির্মাতারা বোঝাতে চেয়েছেন, হিন্দুরা-ই ‘আইসি-৮১৪’ হাইজ্যাক করেছে।

আরো পড়ুন : ফ্রি’তে দেখা যাবে ওসি হারুনকে