ঢাকা ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

চলমান বার্তা ডেস্ক রিপোর্ট:
ভারতের নাগরিকরা আজ ১৯ এপ্রিল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য দেশটির লোকসভা সদস্যদের নির্বাচন করতে শুরু করেছে। এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য ভোটে লড়ছেন। বিভিন্ন জনমত জরিপে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি আর তার জোট সঙ্গীদের এগিয়ে রেখেছে।

বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের বিপরীতে লড়াই করছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। কংগ্রেসসহ ২৪ জনেরও বেশি বিরোধী দল এই জোটে রয়েছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্যদের বেছে নেয়ার এই নির্বাচন হচ্ছে এক তিক্ত পরিবেশের মধ্যে।
বিরোধীরা অভিযোগ করছে, তারা পক্ষপাতিত্বের শিকার হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় অ্যাজেন্সিগুলো অনেক বিরোধী নেতাদের বাড়িতেই তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

কংগ্রেস বলছে, ছয় সপ্তাহ ধরে আয়কর বিভাগ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে রেখেছে। যার ফলে নির্বাচনী প্রচারণার খরচ চালাতে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

আবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতাকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই সব দুর্নীতির অভিযোগ অবশ্য তারা সকলেই অস্বীকার করছেন।

বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করেছিল। সেই নির্বাচন কমিশনও আবার তাদের স্বাতন্ত্র্য নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যদিও নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা সব দল এবং প্রার্থীদের সমান নজরে দেখছে, পক্ষপাতিত্ব করছে না।

পরিসংখ্যান মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে
প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত বিশ্বের সব থেকে জনবহুল দেশ। এমন একটা দেশের নির্বাচন-সংক্রান্ত সংখ্যাগুলোর দিকে তাকালে মাথা ঘুরে যেতে পারে।

লোকসভার ৫৪৩ জন সদস্যকে নির্বাচন করতে ছয় সপ্তাহ ধরে সাত দফায় ভোট নেয়া হবে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন। এই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৯৬ কোটি ৯০ লাখ।

এবারের ভোটারদের মধ্যে ৪৯ কোটি ৭০ লাখ পুরুষ এবং ৪৭ কোটি ১০ লাখ নারী। প্রথমবার ভোট দেবেন, অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮-১৯ বছর, এমন ভোটার এক কোটি ৮০ লাখ। প্রবীণ ভোটার, যাদের বয়স ৮৫ থেকে ৯৯ বছর, এমন ৮২ লাখ মানুষের নাম আছে ভোটার তালিকায়।

ভোটের হেভিওয়েট যারা
দেশের ২২টি রাজ্য আর কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে এক দিনেই ভোট নেয়া হয়ে যাবে, তবে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ আর বিহারের মতো বড় রাজ্যগুলোতে সাত দফায় ভোটগ্রহণ হবে।

বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি আর সিপিআইএম-সহ ছয়টি জাতীয় স্তরের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ছাড়াও আরো কয়েক হাজার প্রার্থী এই নির্বাচনে লড়তে চলেছেন। জাতীয় দলগুলো ছাড়াও ৫৮ টি আঞ্চলিকভাবে স্বীকৃত দল এবং আরো অনেক ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও ভোটের ময়দানে নেমেছেন।

তবে সবার নজর থাকবে হেভিওয়েট প্রার্থীদের দিকে। প্রথমেই নাম করতে হয় নরেন্দ্র মোদির। তিনি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। জনমত সমীক্ষাগুলো জানাচ্ছে, তিনিই সম্ভবত ফিরে আসতে চলেছেন। যদি ৭৩ বছর বয়সী মোদি এবারো জিততে পারেন, তাহলে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন।

একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মোদির বড় সমর্থক গোষ্ঠী আছেন, যারা মনে করেন তিনি সুশাসন দিতে পেরেছেন এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ‘মাথা উঁচু’ করেছেন।

অন্যদিকে তার সমালোচকরা বলেন যে পেশীশক্তির প্রদর্শন করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের যে রাজনীতি তিনি করেন, সেখানে সংখ্যালঘুদের কোনো জায়গা নেই আর তিনি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ যে ভাবমূর্তি ছিল, সেটাও নষ্ট করে দিচ্ছেন।

নরেন্দ্র মোদি যেভাবে ধর্ম আর ধর্মীয় প্রতীকগুলোকে ব্যবহার করেন, তা খুবই কার্যকরি হয়। কারণ দেশটির ৮০ ভাগ মানুষই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

এ বছরের নির্বাচনে তার প্রধান স্লোগান হয়ে উঠেছে, ‘এবার ৪০০ পার’, অর্থ তার দল সংসদে ৪০০টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তবে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ২৭২টি আসন। গত নির্বাচনে, ২০১৯ সালে দলটি ৩০৩ টি আসনে জয়ী হয়েছিল।

আরো পড়ুন : ইরানে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

আপডেট সময় ১১:২৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চলমান বার্তা ডেস্ক রিপোর্ট:
ভারতের নাগরিকরা আজ ১৯ এপ্রিল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য দেশটির লোকসভা সদস্যদের নির্বাচন করতে শুরু করেছে। এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য ভোটে লড়ছেন। বিভিন্ন জনমত জরিপে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি আর তার জোট সঙ্গীদের এগিয়ে রেখেছে।

বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের বিপরীতে লড়াই করছে ‘ইন্ডিয়া’ জোট। কংগ্রেসসহ ২৪ জনেরও বেশি বিরোধী দল এই জোটে রয়েছে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্যদের বেছে নেয়ার এই নির্বাচন হচ্ছে এক তিক্ত পরিবেশের মধ্যে।
বিরোধীরা অভিযোগ করছে, তারা পক্ষপাতিত্বের শিকার হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রীয় অ্যাজেন্সিগুলো অনেক বিরোধী নেতাদের বাড়িতেই তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

কংগ্রেস বলছে, ছয় সপ্তাহ ধরে আয়কর বিভাগ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে রেখেছে। যার ফলে নির্বাচনী প্রচারণার খরচ চালাতে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

আবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো বেশ কয়েকজন বিরোধী নেতাকে দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই সব দুর্নীতির অভিযোগ অবশ্য তারা সকলেই অস্বীকার করছেন।

বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনকে হস্তক্ষেপ করার জন্য আবেদন করেছিল। সেই নির্বাচন কমিশনও আবার তাদের স্বাতন্ত্র্য নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যদিও নির্বাচন কমিশন বলছে, তারা সব দল এবং প্রার্থীদের সমান নজরে দেখছে, পক্ষপাতিত্ব করছে না।

পরিসংখ্যান মাথা ঘুরিয়ে দিতে পারে
প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত বিশ্বের সব থেকে জনবহুল দেশ। এমন একটা দেশের নির্বাচন-সংক্রান্ত সংখ্যাগুলোর দিকে তাকালে মাথা ঘুরে যেতে পারে।

লোকসভার ৫৪৩ জন সদস্যকে নির্বাচন করতে ছয় সপ্তাহ ধরে সাত দফায় ভোট নেয়া হবে। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন। এই নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৯৬ কোটি ৯০ লাখ।

এবারের ভোটারদের মধ্যে ৪৯ কোটি ৭০ লাখ পুরুষ এবং ৪৭ কোটি ১০ লাখ নারী। প্রথমবার ভোট দেবেন, অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮-১৯ বছর, এমন ভোটার এক কোটি ৮০ লাখ। প্রবীণ ভোটার, যাদের বয়স ৮৫ থেকে ৯৯ বছর, এমন ৮২ লাখ মানুষের নাম আছে ভোটার তালিকায়।

ভোটের হেভিওয়েট যারা
দেশের ২২টি রাজ্য আর কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে এক দিনেই ভোট নেয়া হয়ে যাবে, তবে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ আর বিহারের মতো বড় রাজ্যগুলোতে সাত দফায় ভোটগ্রহণ হবে।

বিজেপি, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি আর সিপিআইএম-সহ ছয়টি জাতীয় স্তরের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ছাড়াও আরো কয়েক হাজার প্রার্থী এই নির্বাচনে লড়তে চলেছেন। জাতীয় দলগুলো ছাড়াও ৫৮ টি আঞ্চলিকভাবে স্বীকৃত দল এবং আরো অনেক ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরাও ভোটের ময়দানে নেমেছেন।

তবে সবার নজর থাকবে হেভিওয়েট প্রার্থীদের দিকে। প্রথমেই নাম করতে হয় নরেন্দ্র মোদির। তিনি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। জনমত সমীক্ষাগুলো জানাচ্ছে, তিনিই সম্ভবত ফিরে আসতে চলেছেন। যদি ৭৩ বছর বয়সী মোদি এবারো জিততে পারেন, তাহলে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন।

একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মোদির বড় সমর্থক গোষ্ঠী আছেন, যারা মনে করেন তিনি সুশাসন দিতে পেরেছেন এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ‘মাথা উঁচু’ করেছেন।

অন্যদিকে তার সমালোচকরা বলেন যে পেশীশক্তির প্রদর্শন করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের যে রাজনীতি তিনি করেন, সেখানে সংখ্যালঘুদের কোনো জায়গা নেই আর তিনি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ যে ভাবমূর্তি ছিল, সেটাও নষ্ট করে দিচ্ছেন।

নরেন্দ্র মোদি যেভাবে ধর্ম আর ধর্মীয় প্রতীকগুলোকে ব্যবহার করেন, তা খুবই কার্যকরি হয়। কারণ দেশটির ৮০ ভাগ মানুষই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

এ বছরের নির্বাচনে তার প্রধান স্লোগান হয়ে উঠেছে, ‘এবার ৪০০ পার’, অর্থ তার দল সংসদে ৪০০টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তবে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের প্রয়োজন ২৭২টি আসন। গত নির্বাচনে, ২০১৯ সালে দলটি ৩০৩ টি আসনে জয়ী হয়েছিল।

আরো পড়ুন : ইরানে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল