ঢাকা ০৬:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্থির আশুলিয়া, একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণা

তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর সামনে শিল্প পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি, এমনকি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান মোতায়ন করেও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। অস্থিরতা ছড়িয়েছে গোটা শিল্প এলাকায়। ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো

শ্রমিকরা একযোগে বিভিন্ন কারখানা থেকে বেরিয়ে আসায় মহাসড়কে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। শ্রমিক নেতা ও স্থানীয় নেতাদের নিরাপত্তার আশ্বাসে আজ শনিবার সকাল থেকে উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দেয় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

ভোর থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় পুলিশের সাঁজোয়া যান। সর্বাত্মক নিরাপত্তা প্রস্তুতির মধ্যেই কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। এদিন অস্থিরতার সূচনা হয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অপসারিত বিতর্কিত ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে। নাসা গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা কারখানায় ঢুকে হৈ হট্টগোল করে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসে।

মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে তারা একযোগে বের হয়ে এলে প্রস্তুতির অবনতির আশঙ্কায় পার্শ্ববর্তী অনন্ত গ্রুপের কারখানায় ছুটির ঘোষণা করা হয়। একপর্যায়ে সেই ঢেউ আছড়ে পড়ে নরসিংহপুর এলাকার শারমিন গ্রুপে।

শারমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, তার প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার শ্রমিক দুপুরের খাবার নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করেন। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিকদের কাছে ফোন আসতে থাকে কিছুক্ষণ পর শ্রমিকরা কারখানা ছেড়ে বের হয়ে যান।

এমন পরিস্থিতিতে একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করায় ক্রমশ নাজুক হয়ে পড়েছে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি।

বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পাঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে। আমরা মনে করেছিলাম, গাজীপুর শিল্পাঞ্চল শান্ত হয়ে পড়েছে। আশুলিয়ায় সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। কিন্তু হলো উল্টোটা। এভাবে চলতে থাকলে তৈরি পোশাক শিল্প খাদে পড়বে। মালিকরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।’

আশুলিয়ার বাইপাইলের অদূরে পলাশবাড়ী এলাকায় অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শনিবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ভারতীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পার্ল‌ গার্মেন্টস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তায় কারখানার সামনে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সৃষ্টি করা হচ্ছে। একটি কারখানার শ্রমিকরা বের হয়ে পার্শ্ববর্তী অপর কারখানা লক্ষ্য করে পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। নিরাপত্তার কারণে সেসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।’

শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

অস্থির আশুলিয়া, একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণা

আপডেট সময় ০২:২৮:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর সামনে শিল্প পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি, এমনকি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান মোতায়ন করেও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে পরিস্থিতির তেমন হেরফের হয়নি। অস্থিরতা ছড়িয়েছে গোটা শিল্প এলাকায়। ছুটি দিতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো

শ্রমিকরা একযোগে বিভিন্ন কারখানা থেকে বেরিয়ে আসায় মহাসড়কে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। শ্রমিক নেতা ও স্থানীয় নেতাদের নিরাপত্তার আশ্বাসে আজ শনিবার সকাল থেকে উৎপাদনে ফেরার ঘোষণা দেয় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

ভোর থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় পুলিশের সাঁজোয়া যান। সর্বাত্মক নিরাপত্তা প্রস্তুতির মধ্যেই কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। এদিন অস্থিরতার সূচনা হয় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সদ্য অপসারিত বিতর্কিত ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদারের মালিকানাধীন তৈরি পোশাক কারখানা থেকে। নাসা গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা কারখানায় ঢুকে হৈ হট্টগোল করে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসে।

মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে তারা একযোগে বের হয়ে এলে প্রস্তুতির অবনতির আশঙ্কায় পার্শ্ববর্তী অনন্ত গ্রুপের কারখানায় ছুটির ঘোষণা করা হয়। একপর্যায়ে সেই ঢেউ আছড়ে পড়ে নরসিংহপুর এলাকার শারমিন গ্রুপে।

শারমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, তার প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার শ্রমিক দুপুরের খাবার নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করেন। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে শ্রমিকদের কাছে ফোন আসতে থাকে কিছুক্ষণ পর শ্রমিকরা কারখানা ছেড়ে বের হয়ে যান।

এমন পরিস্থিতিতে একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করায় ক্রমশ নাজুক হয়ে পড়েছে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি।

বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পাঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে। আমরা মনে করেছিলাম, গাজীপুর শিল্পাঞ্চল শান্ত হয়ে পড়েছে। আশুলিয়ায় সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। কিন্তু হলো উল্টোটা। এভাবে চলতে থাকলে তৈরি পোশাক শিল্প খাদে পড়বে। মালিকরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।’

আশুলিয়ার বাইপাইলের অদূরে পলাশবাড়ী এলাকায় অব্যাহত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শনিবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ভারতীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পার্ল‌ গার্মেন্টস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তায় কারখানার সামনে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

একের পর এক কারখানায় ছুটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির সৃষ্টি করা হচ্ছে। একটি কারখানার শ্রমিকরা বের হয়ে পার্শ্ববর্তী অপর কারখানা লক্ষ্য করে পাটকেল নিক্ষেপ করছেন। নিরাপত্তার কারণে সেসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।’

শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।