ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে আনসারদের হামলায় পিতার মৃত্যু

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
ছেলে আন্দোলনে, তাই বসে থাকতে পারেননি বাবা। ছেলে ও শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে শেষমেশ প্রাণ গেলো বাবার। নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের লাশের জানাজা শেষে তার গ্রামে বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। সরকারের কাছে শহীদী মর্যাদাসহ পরিবারের দাবী অন্তত একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার।
গত ২৫আগস্ট ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করে আনসার সদস্যরা। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যান রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল। ঘটনার দিন বিকেলে ছেলে বিশাল আন্দোলনে যাওয়ার খবরে বাবা শাহিন হাওলাদার আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। রাতে তিনিও ছুটে যান ওই আন্দোলনে। গিয়ে দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর আনসার বাহিনীর হামলা চলছে। তখন তিনি তা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া শাহিন বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে ওই দিনই তার লাশ নেয়া হয় গ্রামের বাড়ী মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ডে। সেখানে বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
বাড়ীতে লাশ নেয়ার পর কান্নায় ভারী হয়ে উঠে এলাকা। ছুটে আসেন শতশত মানুষ। বিএনপি সমর্থিত শাহিন পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। বিএনপির কর্মী হওয়ার তার জানাজায় শরীক হন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। আসেন পুলিশ প্রশাসনও। শাহিন ঢাকায় রেন্ট-এ কার চালক ছিলেন। থাকতেন পরিবারসহ ঢাকাতেই।
নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ভাই শিপন হাওলাদার বলেন, আনসাররা আমার ভাইর মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মাথায় অস্ত্রপাচারও হয়। তারপর আইসিইউতে থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল বলেন, আমি ছাত্রদের সাথে আনসার বিরোধী আন্দোলন ছিলাম। সেই খবর শুনে তিনিও ছুটে আসেন। পরে সেখানে এসে বাবা দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে মারধর করছে আনসার সদস্যরা। হাসনাত আব্দুল্লাহকে ঠেকাতে গেলে সেখানে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্ত্রী দীপ্তা বেগম বলেন, আনসার সদস্যরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি এর বিচার চাই। আর পরিবার নিয়ে বেচে থাকার জন্য একটি চাকুরীর দাবী জানাচ্ছি সরকারের কাছে।
মা কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের যেন বিচার হয়। আমার ছেলের পরিবার চলবে কিভাবে, সেজন্য একটা চাকুরীর ব্যবস্থা হলে ভাল হয়।
পরিবারের দাবী একটি চাকুরীর। যদিও শহীদ শাহিনের পরিবারকে একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলে জানান নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ছেলে শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

কয়রায় যৌথ অভিযানে ধারালো অস্ত্রসহ নাশকতারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে আনসারদের হামলায় পিতার মৃত্যু

আপডেট সময় ০১:৪০:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
ছেলে আন্দোলনে, তাই বসে থাকতে পারেননি বাবা। ছেলে ও শিক্ষার্থীদের টানে আন্দোলন গিয়ে শেষমেশ প্রাণ গেলো বাবার। নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের লাশের জানাজা শেষে তার গ্রামে বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। সরকারের কাছে শহীদী মর্যাদাসহ পরিবারের দাবী অন্তত একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার।
গত ২৫আগস্ট ঢাকায় সচিবালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করে আনসার সদস্যরা। সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যান রাজধানীর কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল। ঘটনার দিন বিকেলে ছেলে বিশাল আন্দোলনে যাওয়ার খবরে বাবা শাহিন হাওলাদার আর ঘরে বসে থাকতে পারেননি। রাতে তিনিও ছুটে যান ওই আন্দোলনে। গিয়ে দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর আনসার বাহিনীর হামলা চলছে। তখন তিনি তা ঠেকাতে গেলে তাকেও মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া শাহিন বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে ওই দিনই তার লাশ নেয়া হয় গ্রামের বাড়ী মোংলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বাজিকরখন্ডে। সেখানে বৃহস্পতিবার সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
বাড়ীতে লাশ নেয়ার পর কান্নায় ভারী হয়ে উঠে এলাকা। ছুটে আসেন শতশত মানুষ। বিএনপি সমর্থিত শাহিন পরিবার আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। বিএনপির কর্মী হওয়ার তার জানাজায় শরীক হন বিএনপি ও জামায়াত নেতারা। আসেন পুলিশ প্রশাসনও। শাহিন ঢাকায় রেন্ট-এ কার চালক ছিলেন। থাকতেন পরিবারসহ ঢাকাতেই।
নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ভাই শিপন হাওলাদার বলেন, আনসাররা আমার ভাইর মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মাথায় অস্ত্রপাচারও হয়। তারপর আইসিইউতে থাকার পর মৃত্যু হয় তার।
ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল বলেন, আমি ছাত্রদের সাথে আনসার বিরোধী আন্দোলন ছিলাম। সেই খবর শুনে তিনিও ছুটে আসেন। পরে সেখানে এসে বাবা দেখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে মারধর করছে আনসার সদস্যরা। হাসনাত আব্দুল্লাহকে ঠেকাতে গেলে সেখানে তাকেও মারধর করা হয়। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
স্ত্রী দীপ্তা বেগম বলেন, আনসার সদস্যরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি এর বিচার চাই। আর পরিবার নিয়ে বেচে থাকার জন্য একটি চাকুরীর দাবী জানাচ্ছি সরকারের কাছে।
মা কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের যেন বিচার হয়। আমার ছেলের পরিবার চলবে কিভাবে, সেজন্য একটা চাকুরীর ব্যবস্থা হলে ভাল হয়।
পরিবারের দাবী একটি চাকুরীর। যদিও শহীদ শাহিনের পরিবারকে একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলে জানান নিহত শহীদ শাহিন হাওলাদারের ছেলে শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বিশাল।
আরো পড়ুন : মোংলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতের মত বিনিময় সভা