ঢাকা ০১:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলায় বিপর্যস্ত রপ্তানীযোগ্য চিংড়ি শিল্প, সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতি

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি:
ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগ, ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র তান্ডব ও চলতি অতিবৃষ্টির ফলে ত্রি-মুখী বিপর্যয় নেমে এসেছে মোংলার চিংড়ি চাষি ও ঘের মালিকদের। বন্যার দিনে মোংলা উপকুলীয় এলাকার বাধ ভেঙ্গে তলিয়েছিল ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী চিংড়ী ঘের ও প্রকল্পের পুকুর, মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। অভাবের ফলে ঘেরের ভেড়ি সংস্কার ও মাছ ছাড়া সহ ঘুরে দাড়াতে সরকারী সহায়তার দাবী ক্ষতিগ্রস্থদের।

 নতুন করে চিংড়ী চাষ শুরু করতে না পারলে রপ্তানী বানিজ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাবেব আশংকা করছে সচেতন নাগরিক সমাজ। মৎস্য বিভাগ বলছে, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এ চিংড়ী শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী সহায়তা ও প্রনোদনার জন্য তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে উর্ধতন কর্তৃৃপক্ষের কাছে।

মোংলা এলাকার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানীযোগ্য একটি বড় শিল্প হলো চিংড়ি শিল্প। মোংলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকার চাষকৃত বাগদা ও গলদা চিংড়ী এ দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে সরকার। মৌসুমের শুরুতেই একটি বড় সমস্য দেখা দেয় ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগে, ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় ঘের মালিকদের। সম্প্রতি চলে যাওয়া প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ৭/৮ ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে মোংল্য়া তলিয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমির ৫ হাজার চিংড়ী ঘের। ধার-দেনা করে তৈরী করা ঘের থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ভেসে গেছে কয়েকশ মন বাগদা ও গলদা চিংড়ী সহ সাদা মাছ। এতে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে মোংলা উপজেলার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা। এবারের ঘুর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির মধ্যে পড়েছে এ অঞ্চলের মৎস্য চাষিরা। একদিকে ঘেরে ভাইরাস, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিবৃষ্টি, কোন দিকেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না এখানকার ঘের মালিকরা। সরকারী সহায়তা পেলে ঘেরগুলো পুর্ন সংস্কার করে নতুন ভাবে ঘুরে দাড়াতে পারবে এ শিল্পের সাথে জড়িত সংশিথøষ্টরা।

মোংলার  সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্ত অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, দেশের রপ্তানীযোগ্য সাদা সোনা ক্ষ্যাত এ চিংড়ি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে। প্রনোদনা সহ সরকারী সহায়তার চেষ্টা চলছে বলে জানায় মোংলা উপজেলা এই মৎস্য কর্মকর্তা।

মোংলা  নাগরিক সমাজের  সভাপতি শেখ মোঃ নুর আলম বলেন   মোংলা উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় রেমাল’র ৪০ ঘন্টার তান্ডবে চিংড়ি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি একটি রপ্তানী মুখী শিল্প, সরকার এ ক্ষাত থেকে বৈদেশূ মুদ্রা অর্জন করে তাকে। উপক’লীয় এলাকার এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারের বড় পরিকল্পনা থাকার জরুরী।

মোংলা উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর রয়েছে। এখান থেকে বছরে প্রায় ৯/১০ হাজার মেট্রিক টন বাগদাঁ ও গলদা চিংড়ি এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন সাদা মাছ চাষ করা হয়।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মোংলায় বিপর্যস্ত রপ্তানীযোগ্য চিংড়ি শিল্প, সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতি

আপডেট সময় ০৪:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি:
ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগ, ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র তান্ডব ও চলতি অতিবৃষ্টির ফলে ত্রি-মুখী বিপর্যয় নেমে এসেছে মোংলার চিংড়ি চাষি ও ঘের মালিকদের। বন্যার দিনে মোংলা উপকুলীয় এলাকার বাধ ভেঙ্গে তলিয়েছিল ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী চিংড়ী ঘের ও প্রকল্পের পুকুর, মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। অভাবের ফলে ঘেরের ভেড়ি সংস্কার ও মাছ ছাড়া সহ ঘুরে দাড়াতে সরকারী সহায়তার দাবী ক্ষতিগ্রস্থদের।

 নতুন করে চিংড়ী চাষ শুরু করতে না পারলে রপ্তানী বানিজ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাবেব আশংকা করছে সচেতন নাগরিক সমাজ। মৎস্য বিভাগ বলছে, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এ চিংড়ী শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারী সহায়তা ও প্রনোদনার জন্য তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে উর্ধতন কর্তৃৃপক্ষের কাছে।

মোংলা এলাকার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানীযোগ্য একটি বড় শিল্প হলো চিংড়ি শিল্প। মোংলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকার চাষকৃত বাগদা ও গলদা চিংড়ী এ দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে সরকার। মৌসুমের শুরুতেই একটি বড় সমস্য দেখা দেয় ঘেরে ভাইরাস জনিত রোগে, ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হয় ঘের মালিকদের। সম্প্রতি চলে যাওয়া প্রলয়ংকারী ঘুর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ৭/৮ ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে মোংল্য়া তলিয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জমির ৫ হাজার চিংড়ী ঘের। ধার-দেনা করে তৈরী করা ঘের থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ভেসে গেছে কয়েকশ মন বাগদা ও গলদা চিংড়ী সহ সাদা মাছ। এতে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে মোংলা উপজেলার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা। এবারের ঘুর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতির মধ্যে পড়েছে এ অঞ্চলের মৎস্য চাষিরা। একদিকে ঘেরে ভাইরাস, অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিবৃষ্টি, কোন দিকেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না এখানকার ঘের মালিকরা। সরকারী সহায়তা পেলে ঘেরগুলো পুর্ন সংস্কার করে নতুন ভাবে ঘুরে দাড়াতে পারবে এ শিল্পের সাথে জড়িত সংশিথøষ্টরা।

মোংলার  সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্ত অঞ্জন বিশ্বাস বলেন, দেশের রপ্তানীযোগ্য সাদা সোনা ক্ষ্যাত এ চিংড়ি শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে পাঠানো হয়েছে। প্রনোদনা সহ সরকারী সহায়তার চেষ্টা চলছে বলে জানায় মোংলা উপজেলা এই মৎস্য কর্মকর্তা।

মোংলা  নাগরিক সমাজের  সভাপতি শেখ মোঃ নুর আলম বলেন   মোংলা উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় রেমাল’র ৪০ ঘন্টার তান্ডবে চিংড়ি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি একটি রপ্তানী মুখী শিল্প, সরকার এ ক্ষাত থেকে বৈদেশূ মুদ্রা অর্জন করে তাকে। উপক’লীয় এলাকার এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারের বড় পরিকল্পনা থাকার জরুরী।

মোংলা উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ৫শ চিংড়ি ঘের ও পুকুর রয়েছে। এখান থেকে বছরে প্রায় ৯/১০ হাজার মেট্রিক টন বাগদাঁ ও গলদা চিংড়ি এবং ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন সাদা মাছ চাষ করা হয়।

আরো পড়ুন : মোংলায় এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন