ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেমালের তান্ডবে মারা যাওয়া সুন্দরবনের আরও ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার

মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে বনের কটকা ও দুবলা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আরও ১৫টি আহত হরিণকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে বনরক্ষকীরা। এছাড়া রিমেলের তান্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবন পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর।
খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো সোমবার (২৮ মে) দুপুরে  এই তথ্য নিশ্চিত করেন। আরও মৃত হরিণের সন্ধানে পুরো সুন্দরবনে তল্লাশি চলছে বলেও জানান তিনি।
মিহির কুমার দো বলেন, রবিবার বিকাল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহলবোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়াণ্যে অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহলফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
সুন্দরনে অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাশাশি বাঘ, হরিনসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে।
সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সুন্দরবনের কটকা এবং দুবলা এলাকার নদ থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। এসময় দুবলা এলাকা থেকে আহত আরও ১৫টি হরিণ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে বনরক্ষীরা। তবে হরিণের পাশাপাশি আরও বণ্যপ্রাণী মারা যেতে পারে উল্লেখ করে বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো আরও বলেন, সেই সব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙ্গে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়’।
এ বিষয়ে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড.শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সুন্দরবনের বন্য প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত উঁচু টিলা ও শ্লেটার রাখা জরুরী। তাহলে এ ধরণের ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। মিঠা পানির পুকুরের পাড় ও অনেক উঁচু করতে হবে যাতে বন্যার পনি প্রবেশ করতে না পারে’।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

রেমালের তান্ডবে মারা যাওয়া সুন্দরবনের আরও ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার

আপডেট সময় ১০:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
মাসুদ রানা, মোংলা প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়ে বনের কটকা ও দুবলা এলাকা থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আরও ১৫টি আহত হরিণকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে বনরক্ষকীরা। এছাড়া রিমেলের তান্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবন পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর।
খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো সোমবার (২৮ মে) দুপুরে  এই তথ্য নিশ্চিত করেন। আরও মৃত হরিণের সন্ধানে পুরো সুন্দরবনে তল্লাশি চলছে বলেও জানান তিনি।
মিহির কুমার দো বলেন, রবিবার বিকাল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহলবোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়াণ্যে অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহলফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
সুন্দরনে অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাশাশি বাঘ, হরিনসহ বন্যপ্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে।
সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সুন্দরবনের কটকা এবং দুবলা এলাকার নদ থেকে ৩০টি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। এসময় দুবলা এলাকা থেকে আহত আরও ১৫টি হরিণ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে বনরক্ষীরা। তবে হরিণের পাশাপাশি আরও বণ্যপ্রাণী মারা যেতে পারে উল্লেখ করে বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো আরও বলেন, সেই সব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙ্গে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়’।
এ বিষয়ে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড.শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘সুন্দরবনের বন্য প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত উঁচু টিলা ও শ্লেটার রাখা জরুরী। তাহলে এ ধরণের ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। মিঠা পানির পুকুরের পাড় ও অনেক উঁচু করতে হবে যাতে বন্যার পনি প্রবেশ করতে না পারে’।
আরো পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় রিমাল : উপকূলে জলোচ্ছ্বাস, সারা দেশে বৃষ্টিপাত