ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

 মোঃ হারুনার রশিদ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান ও সহযোগী অন্যান্য কর্মচারীদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিক্ষুব্ধকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে পাশ্ববর্তী ইসলামপুর গ্রামের ছেলেরা  বিদ্যালয়ে ঢুকে আন্দোলনকারীদের উপর উপর্যোপুরি আঘাত করতে থাকে। এসময় উক্ত স্কুলের চারজন ছাত্র গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে খবর পেয়ে আলমপুর বাজার এলাকার স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, ছাত্র ছাত্রীদের বই বিক্রী, বেতনের টাকা আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিস্তর অভিযোগে এর আগে ১৬ দফা আদায়ের কর্মসূচি দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। পরে ১৫টি দাবী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে ক্লাসে ফিরিয়ে নেন শিক্ষার্থীদের। পরে ওই দাবীগুলো জলে ভেসে যাওয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরে ফুলে ফেঁপে উঠছিল শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দূর্নীতি রোধে প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ জড়িতদের পদত্যাগের  একদফা দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পাশ্ববর্তী গ্রামের ছেলেরা এসে ছত্রভঙ্গ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
দশম শ্রেণির ছাত্র নাহিদ হাসান বলেন, এর আগে আমরা ১৬ দফা দাবী করেছিলাম। তখন ১৫টি দাবী মেনে নিলেও পরে আর রোধ করেননি। অনিয়ম রোধ না করে পাল্টা আন্দোলনকারীদের নাম তালিকাভুক্ত করে শাস্তি দেবার নামে নানা ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। দুর্নীতি মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আজ সকালে সবাই একত্রিত হয়ে আন্দোলন চলাকালে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সহকারি প্রধান রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক আফরোজা,  মনিরা পারভীন মুন্নি, দপ্তরী শিহাব পরিকল্পনা করে পাশ্ববর্তী ইসলামপুর গ্রামের ছেলেদের মধ্যে সাদ্দাম, ফিরোজ, শিহাব, মাসুদ, আমানুল্লাহ, সহ অনেককে ভাড়া করে এনে আমাদের উপর হামলা চালায়। এসময়  রিফাত দশম শ্রেণী , আসিফ নবম শ্রেণী, সোহান নবম শ্রেণী, দশম শ্রেণী আসিফসহ প্রায় ১৪০-১৫০ জন ছাত্র ছাত্রী আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হিমা খাতুন বলেন, অনিয়মতান্ত্রিক বেতন বৃদ্ধি, শিক্ষকদের ফাঁকিবাজি, অশ্লীল আচরণ, যৌন নির্যাতনের শিকার, বাহিরে বই বিক্রী, ইভটিজিংসহ নানা অনিয়ম করে আসছে প্রধান শিক্ষকসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী। এনিয়ে আমরা এর আগে তাদের বললেও কোন কর্নপাত করেন না। তারা বলে নেতা। তাদের অনেক ক্ষমতা। নানারকম আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। এদের পদত্যাগ না করলে আমাদের উপর আজকে যে আঘাত করেছে এর শাস্তি চাই।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মে জর্জরিত। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। দিনে দুপুরে চেয়ার টেবিল পাঠ্যবই বাজারে বিক্রী করে। এনিয়ে অনেকদিন আগে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ৭১ টিভিতে সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করায় ছেলেমেয়েদের যেভাবে মারলো আমরা হতবাক হয়ে গেছি। ছাত্রছাত্রীদের শত্রু কি শিক্ষকগণ হতে পারে? এই আঘাতের বিচার পাওয়ার দাবিতে স্থানীয়রাও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এনিয়ে দুই এলাকা মানুষের মাঝেে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

আলমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৮:১৪:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
 মোঃ হারুনার রশিদ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা বহুলী ইউনিয়নের আলমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান ও সহযোগী অন্যান্য কর্মচারীদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিক্ষুব্ধকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে পাশ্ববর্তী ইসলামপুর গ্রামের ছেলেরা  বিদ্যালয়ে ঢুকে আন্দোলনকারীদের উপর উপর্যোপুরি আঘাত করতে থাকে। এসময় উক্ত স্কুলের চারজন ছাত্র গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে খবর পেয়ে আলমপুর বাজার এলাকার স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, ছাত্র ছাত্রীদের বই বিক্রী, বেতনের টাকা আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ বিস্তর অভিযোগে এর আগে ১৬ দফা আদায়ের কর্মসূচি দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। পরে ১৫টি দাবী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে ক্লাসে ফিরিয়ে নেন শিক্ষার্থীদের। পরে ওই দাবীগুলো জলে ভেসে যাওয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরে ফুলে ফেঁপে উঠছিল শিক্ষার্থীরা।
এ নিয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে বিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দূর্নীতি রোধে প্রধান শিক্ষক, সহকারি প্রধান শিক্ষকসহ জড়িতদের পদত্যাগের  একদফা দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে পাশ্ববর্তী গ্রামের ছেলেরা এসে ছত্রভঙ্গ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
দশম শ্রেণির ছাত্র নাহিদ হাসান বলেন, এর আগে আমরা ১৬ দফা দাবী করেছিলাম। তখন ১৫টি দাবী মেনে নিলেও পরে আর রোধ করেননি। অনিয়ম রোধ না করে পাল্টা আন্দোলনকারীদের নাম তালিকাভুক্ত করে শাস্তি দেবার নামে নানা ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। দুর্নীতি মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় আজ সকালে সবাই একত্রিত হয়ে আন্দোলন চলাকালে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, সহকারি প্রধান রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক আফরোজা,  মনিরা পারভীন মুন্নি, দপ্তরী শিহাব পরিকল্পনা করে পাশ্ববর্তী ইসলামপুর গ্রামের ছেলেদের মধ্যে সাদ্দাম, ফিরোজ, শিহাব, মাসুদ, আমানুল্লাহ, সহ অনেককে ভাড়া করে এনে আমাদের উপর হামলা চালায়। এসময়  রিফাত দশম শ্রেণী , আসিফ নবম শ্রেণী, সোহান নবম শ্রেণী, দশম শ্রেণী আসিফসহ প্রায় ১৪০-১৫০ জন ছাত্র ছাত্রী আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হিমা খাতুন বলেন, অনিয়মতান্ত্রিক বেতন বৃদ্ধি, শিক্ষকদের ফাঁকিবাজি, অশ্লীল আচরণ, যৌন নির্যাতনের শিকার, বাহিরে বই বিক্রী, ইভটিজিংসহ নানা অনিয়ম করে আসছে প্রধান শিক্ষকসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী। এনিয়ে আমরা এর আগে তাদের বললেও কোন কর্নপাত করেন না। তারা বলে নেতা। তাদের অনেক ক্ষমতা। নানারকম আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। এদের পদত্যাগ না করলে আমাদের উপর আজকে যে আঘাত করেছে এর শাস্তি চাই।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মে জর্জরিত। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। দিনে দুপুরে চেয়ার টেবিল পাঠ্যবই বাজারে বিক্রী করে। এনিয়ে অনেকদিন আগে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ৭১ টিভিতে সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করায় ছেলেমেয়েদের যেভাবে মারলো আমরা হতবাক হয়ে গেছি। ছাত্রছাত্রীদের শত্রু কি শিক্ষকগণ হতে পারে? এই আঘাতের বিচার পাওয়ার দাবিতে স্থানীয়রাও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এনিয়ে দুই এলাকা মানুষের মাঝেে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এসব বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মিজানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
আরো পড়ুন : সলঙ্গায় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন