ঢাকা ০২:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫ টাকা করে লাউ কিনলেন সাংবাদিক আখতার

এশিয়ান টেলিভিশনের রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান আখতার রহমান শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আড়ানী পৌর বাজারের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে নিজ বাড়ি বাঘা সদরে যাচ্ছিলেন। দেখনে কিছু কৃষক লাউ নিয়ে বিক্রি করার জন্য রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়ি থেকে নেমে তাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে জানতে চান লাউ কত করে বিক্রি করবেন। কৃষকরা জবাব দেন ক্রেতা পাচ্ছিনা, কার কাছে বিক্রি করব। কেউ দাম বলছেনা। অবশেষে তিনি বাউসা ইউনিয়নের চক বাউসা গ্রামের নাজমুল হাবিবেরর জমি থেকে প্রতিপিচ ৫ টাকা দরে ১২০টি লাউ ক্রয় করেন।

এ সময় যুগান্তরের স্থানীয় বাঘা প্রতিনিধি আমানুল হক আমানের সাথে দেখা হয় সাংবাদিক আকতার রহমানের। তিনি বলেন, লাউগুলো এলাকায় নিয়ে গরীবদের মাঝ বিলি কবর। তার মানবিক কাজটি দেখে ভাল লেগেছে। নাজমুল হাবিব বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে লাউ এর আবাদ করেছি। মাচা তৈরির বাঁশ, সেচ, সার, শ্রমিকসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ টাকা। এরমধ্যে বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকার লাউ। স্থানীয় সিন্ডিকেটের জন্য লাউ এর দাম পাচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

এ দিকে আড়ানী পৌর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী বিধান হালদার বলেন, আড়ানী পৌর বাজারের হাটে শনিবার সকালে ২৮ পিচ লাউ কিনেছেন ৫০ টাকায়। বাড়ি পৌঁছাতে ভ্যান ভাড়া লেগেছে আরও ২০ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। এতগুলো লাউ একসঙ্গে কেনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দামে সস্তা হওয়ায় বাড়িতে নিজেদের তরকারি খাওয়াসহ গরুকে খাওয়ানোর জন্য কিনেছি। এক সপ্তাহ আগে মঙ্গলবারের হাটে ১০৬টি লাউ কিনেছিলেন ১১০ টাকায়। সেই হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা।

গোচর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, হাটে নিয়ে প্রতি পিচ লাউ ৫ টাকা হিসাবে ২০০টি বিক্রি করেছি। জমিতে লাউ তোলা শ্রমিক ও পরিবহন ব্যয়সহ প্রতিটি লাউয়ে খরচ হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। খরচ বাদে প্রতিটি লাউ বিক্রি হয়েছে আড়াই টাকা। গোচর গ্রামের আরেক লাউ চাষি জহুরুল ইসলাম সোনা বলেন, বিক্রির উপযোগী প্রতিটি লাউয়ের পেছনে খরচ হয় কমপক্ষে ৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে পাইকারিতে প্রতিটি লাউ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫ টাকায়। তবে মাস খানেক আগে প্রতিটি লাউ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ক্রেতার অভাবে গাছের লাউ বেচতে পারছি না।

আড়ানী বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আলান উাদ্দন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রতিটি লাউ কিনেছিলেন ১৫-২০ টাকা। ঢাকায় নিয়ে সেই লাউ বিক্রি করে বিভিন্ন খাতে খরচের হিসাবে লোকসান হয়েছে। তাই কয়েক হাট পরে শনিবার আড়ানী বাজার থেকে মাঝারি ও বড় সাইজের ৫০০ পিচ লাউ শহরে বিক্রির জন্য কিনলাম। গড় হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ৫ টাকা।

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আফরিন হোসেন বলেন, আড়ানী বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন একটি লাউ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫-১০ টাকা। তবে কৃষকেরা যাতে পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। শীত কমে আসার কারণে লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে।

আরও পড়ুন : রাবিতে ছিনতাইকারী আটক

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

৫ টাকা করে লাউ কিনলেন সাংবাদিক আখতার

আপডেট সময় ০৭:৩৬:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

এশিয়ান টেলিভিশনের রাজশাহী বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান আখতার রহমান শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আড়ানী পৌর বাজারের উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে নিজ বাড়ি বাঘা সদরে যাচ্ছিলেন। দেখনে কিছু কৃষক লাউ নিয়ে বিক্রি করার জন্য রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়ি থেকে নেমে তাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে জানতে চান লাউ কত করে বিক্রি করবেন। কৃষকরা জবাব দেন ক্রেতা পাচ্ছিনা, কার কাছে বিক্রি করব। কেউ দাম বলছেনা। অবশেষে তিনি বাউসা ইউনিয়নের চক বাউসা গ্রামের নাজমুল হাবিবেরর জমি থেকে প্রতিপিচ ৫ টাকা দরে ১২০টি লাউ ক্রয় করেন।

এ সময় যুগান্তরের স্থানীয় বাঘা প্রতিনিধি আমানুল হক আমানের সাথে দেখা হয় সাংবাদিক আকতার রহমানের। তিনি বলেন, লাউগুলো এলাকায় নিয়ে গরীবদের মাঝ বিলি কবর। তার মানবিক কাজটি দেখে ভাল লেগেছে। নাজমুল হাবিব বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে লাউ এর আবাদ করেছি। মাচা তৈরির বাঁশ, সেচ, সার, শ্রমিকসহ বিভিন্ন খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ টাকা। এরমধ্যে বিক্রি করেছেন ৬০ হাজার টাকার লাউ। স্থানীয় সিন্ডিকেটের জন্য লাউ এর দাম পাচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

এ দিকে আড়ানী পৌর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী বিধান হালদার বলেন, আড়ানী পৌর বাজারের হাটে শনিবার সকালে ২৮ পিচ লাউ কিনেছেন ৫০ টাকায়। বাড়ি পৌঁছাতে ভ্যান ভাড়া লেগেছে আরও ২০ টাকা। সে হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। এতগুলো লাউ একসঙ্গে কেনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দামে সস্তা হওয়ায় বাড়িতে নিজেদের তরকারি খাওয়াসহ গরুকে খাওয়ানোর জন্য কিনেছি। এক সপ্তাহ আগে মঙ্গলবারের হাটে ১০৬টি লাউ কিনেছিলেন ১১০ টাকায়। সেই হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা।

গোচর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, হাটে নিয়ে প্রতি পিচ লাউ ৫ টাকা হিসাবে ২০০টি বিক্রি করেছি। জমিতে লাউ তোলা শ্রমিক ও পরিবহন ব্যয়সহ প্রতিটি লাউয়ে খরচ হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা। খরচ বাদে প্রতিটি লাউ বিক্রি হয়েছে আড়াই টাকা। গোচর গ্রামের আরেক লাউ চাষি জহুরুল ইসলাম সোনা বলেন, বিক্রির উপযোগী প্রতিটি লাউয়ের পেছনে খরচ হয় কমপক্ষে ৮ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে পাইকারিতে প্রতিটি লাউ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৫ টাকায়। তবে মাস খানেক আগে প্রতিটি লাউ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন ক্রেতার অভাবে গাছের লাউ বেচতে পারছি না।

আড়ানী বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আলান উাদ্দন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রতিটি লাউ কিনেছিলেন ১৫-২০ টাকা। ঢাকায় নিয়ে সেই লাউ বিক্রি করে বিভিন্ন খাতে খরচের হিসাবে লোকসান হয়েছে। তাই কয়েক হাট পরে শনিবার আড়ানী বাজার থেকে মাঝারি ও বড় সাইজের ৫০০ পিচ লাউ শহরে বিক্রির জন্য কিনলাম। গড় হিসাবে প্রতিটি লাউয়ের দাম পড়েছে ৫ টাকা।

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আফরিন হোসেন বলেন, আড়ানী বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন একটি লাউ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৫-১০ টাকা। তবে কৃষকেরা যাতে পণ্যের ন্যায্য মূল্য পান, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। শীত কমে আসার কারণে লাউয়ের চাহিদা কমে গেছে।

আরও পড়ুন : রাবিতে ছিনতাইকারী আটক