ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লো বিএনপি

ঢাকায় মানববন্ধনে ভারত বিরোধী প্ল্যাকার্ড

বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে ক্যাম্পেইন করছিলো সরকার বিরোধী নানা গ্রুপ ও ব্যক্তি। বিএনপির সাথে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের ব্যানারেও এমন ক্যাম্পেইন পরিচালিত হতে দেখা গেছে। কিন্তু এতদিন বিএনপি দলীয়ভাবে বা তাদের সিনিয়র নেতারা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও অবস্থান নেননি।

শেষ পর্যন্ত বুধবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলটির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী তার নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের’ প্রচারণার প্রতি সংহতি জানান।

এর আগে তিনি বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান হয়েছে, তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে।”

পরে তিনি বলেন বাংলাদেশে গত নির্বাচনে ভারতের ভূমিকার কারণে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে যে সামাজিক আন্দোলন তৈরি হয়েছে তাতেই সংহতি প্রকাশ করেছেন তিনি।

কিন্তু এটি বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত বা অবস্থান কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটি গত নির্বাচনে ভারতীয় নীতি নির্ধারক ও কূটনীতিকরা যেভাবে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তার বিরুদ্ধে একটি সামাজিক প্রতিবাদে অংশ নেওয়া।”

বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই প্রচারণা দৃশ্যমান হয় মূলত সাতই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর থেকে।

ওই নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করলেও ভারতের বক্তব্য ছিল “নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ও বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে।”

এরপরই ধারণা সৃষ্টি হয় যে ভারতের অবস্থানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপ উপেক্ষা করে বিএনপিবিহীন নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও আবারো ক্ষমতায় আসতে পেরেছে আওয়ামী লীগ।

ওই নির্বাচনের পরপরই বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকায় একাধিক রাজনৈতিক সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেছেন।

নুর তখন বলেছিলেন, “ভারত যদি একপাক্ষিক সম্পর্ক মেইনটেইন করে তাহলে তো আমাদের অ্যান্টি ইন্ডিয়ান হওয়া ছাড়া কোনা উপায় নাই … এই সরকারের যেহেতু খুঁটির জোরটা হচ্ছে ভারত কাজেই সেই ভারতের বিরুদ্ধে জনগণকে আরও সংগঠিত করে একটা মুভমেন্ট দরকার যেটা মালদ্বীপের ক্ষেত্রে হয়েছে।”

একই সঙ্গে দেশের বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরাও একই ধরনের প্রচারণা শুরু করেন।

বুধবার নিজের গায়ের চাদর ফেলে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের আপত্তি ভারতীয় শাসকদের পলিসি বা নীতি নিয়ে।

“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-সহ সব জায়গা এখন ভারত আউট ক্যাম্পেইনে উত্তাল। ভারতীয় পণ্য বর্জন করে দেশের জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজধানীতে মিছিল সমাবেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে,”।

পরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ মনে করে ভারতীয় নীতিনির্ধারক ও কূটনীতিকদের কারণেই বাংলাদেশের মানুষ আবারো ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ কারণেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং সে ক্ষোভ থেকে পণ্য বর্জনের আন্দোলন শুরু হয়েছে”।

আরও পড়ুন : বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল : তথ্যপ্রতিমন্ত্রী

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লো বিএনপি

আপডেট সময় ১২:১২:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে ক্যাম্পেইন করছিলো সরকার বিরোধী নানা গ্রুপ ও ব্যক্তি। বিএনপির সাথে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের ব্যানারেও এমন ক্যাম্পেইন পরিচালিত হতে দেখা গেছে। কিন্তু এতদিন বিএনপি দলীয়ভাবে বা তাদের সিনিয়র নেতারা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও অবস্থান নেননি।

শেষ পর্যন্ত বুধবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও দলটির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী তার নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের’ প্রচারণার প্রতি সংহতি জানান।

এর আগে তিনি বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান হয়েছে, তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে।”

পরে তিনি বলেন বাংলাদেশে গত নির্বাচনে ভারতের ভূমিকার কারণে ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে যে সামাজিক আন্দোলন তৈরি হয়েছে তাতেই সংহতি প্রকাশ করেছেন তিনি।

কিন্তু এটি বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত বা অবস্থান কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটি গত নির্বাচনে ভারতীয় নীতি নির্ধারক ও কূটনীতিকরা যেভাবে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তার বিরুদ্ধে একটি সামাজিক প্রতিবাদে অংশ নেওয়া।”

বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই প্রচারণা দৃশ্যমান হয় মূলত সাতই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর থেকে।

ওই নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করলেও ভারতের বক্তব্য ছিল “নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ও বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে কারা দেশ পরিচালনা করবে।”

এরপরই ধারণা সৃষ্টি হয় যে ভারতের অবস্থানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপ উপেক্ষা করে বিএনপিবিহীন নির্বাচন হওয়া সত্ত্বেও আবারো ক্ষমতায় আসতে পেরেছে আওয়ামী লীগ।

ওই নির্বাচনের পরপরই বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা গণঅধিকার পরিষদ নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ঢাকায় একাধিক রাজনৈতিক সভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেছেন।

নুর তখন বলেছিলেন, “ভারত যদি একপাক্ষিক সম্পর্ক মেইনটেইন করে তাহলে তো আমাদের অ্যান্টি ইন্ডিয়ান হওয়া ছাড়া কোনা উপায় নাই … এই সরকারের যেহেতু খুঁটির জোরটা হচ্ছে ভারত কাজেই সেই ভারতের বিরুদ্ধে জনগণকে আরও সংগঠিত করে একটা মুভমেন্ট দরকার যেটা মালদ্বীপের ক্ষেত্রে হয়েছে।”

একই সঙ্গে দেশের বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরাও একই ধরনের প্রচারণা শুরু করেন।

বুধবার নিজের গায়ের চাদর ফেলে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের আপত্তি ভারতীয় শাসকদের পলিসি বা নীতি নিয়ে।

“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-সহ সব জায়গা এখন ভারত আউট ক্যাম্পেইনে উত্তাল। ভারতীয় পণ্য বর্জন করে দেশের জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজধানীতে মিছিল সমাবেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে,”।

পরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ মনে করে ভারতীয় নীতিনির্ধারক ও কূটনীতিকদের কারণেই বাংলাদেশের মানুষ আবারো ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ কারণেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এবং সে ক্ষোভ থেকে পণ্য বর্জনের আন্দোলন শুরু হয়েছে”।

আরও পড়ুন : বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল : তথ্যপ্রতিমন্ত্রী