ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলার ওসির বিরুদ্ধে নেত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ

মোংলা প্রতিনিধি
যশোরের পাগলাদহ এলাকার এক নেত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে মোংলা থানায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হীরন্ময় সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘ ৫ বছর যাবত প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ও তথ্য গোপন করে তার সাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসও করছিল বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওসি তদন্ত হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আবুল হাসনাত খাঁন।

যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার পাগলাদহ এলাকার ভুক্তভোগী নারী লিখিত অভিযোগে বলেন, ৫ বছর আগে আগে পুলিশ কর্মকর্তা হীরন্ময় সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে সময় তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী হলেও নিজেকে মুসলিম বলে তাকে জানান। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক, পরে বিয়ের আশ্বাসে প্রথমে ধর্ষণ করে পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হীরন্ময় সরকার। এক সময় তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। দীর্ঘ কয়েক বছর যশোর ও ঢাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত সবার কাছে ভুক্তভোগীকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন হীরন্ময় বলে অভিযোগ করে ওই ভুক্তভোগী নারী।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করান। তবে বিয়ের কথা বললেও নানা অজুহাত দিতে থাকেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে মোংলা থানায় পুলিশ পরিদর্শকের (তদন্ত) দায়িত্ব পাওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থানা ভবনে থাকা শুরু করেন অভিযুক্ত হিরনময় সরকার। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এরপর তার খোঁজে (৯ মে) মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও থানার ওসিকে এম আজিজুল ইসলামের সাথে দেখা করার জন্য মোংলায় আসেন ভুক্তভোগী এ নারী। বৃহস্পতিবার রাতে মোংলা আবাসিক হোটেল টাইগারে অবস্থান নেয় এবং বিষয়টি থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম ও মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষারকে জানানো হয়। শনিবার বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তিনি রোববার মোংলা থেকে যশোর চলে যান।

শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে হীরন্ময় সরকার বলেন, যখন আমি যশোরে পিবিআইতে সংযুক্ত ছিলাম তখন তার সাথে পরিচয় হয় এটা তথ্য কিন্ত তার সাথে কোন প্রেম বা শারীরিক সম্পর্ক এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি, ওই নারী শুধুই বন্ধু ছিলেন। এখন তিনি যেসব অভিযোগ করছেন, সে বিষয়ে কিছু বলার নেই। তবে আমাকে ফাসাঁনো হচ্ছে বলেও দাবী অভিযুক্ত ওই পুরিশ কর্মকর্তার।

মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, ওসি তদন্ত হীরন্ময় সরকার গত বছরের ৬ নভেম্বর মোংলা থানায় যোগদান করেছে। এর মধ্যে এরকম কোন ঘটনা আমাদের কাছে আসেনি, কিন্ত হঠাৎ করে এমন খবরে আমরা অবাক হচ্ছি। তবে ভুক্তভোগী ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়টি সোনার পর পরই জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে হীরন্মময় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পরিদর্শক হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেরা এসপি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন : প্রতারণা করে বিয়ের নেশায় মোংলার বীথি আক্তার

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মোংলার ওসির বিরুদ্ধে নেত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৯:৩৮:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

মোংলা প্রতিনিধি
যশোরের পাগলাদহ এলাকার এক নেত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে মোংলা থানায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হীরন্ময় সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘ ৫ বছর যাবত প্রতারণার মাধ্যমে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ও তথ্য গোপন করে তার সাথে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাসও করছিল বলে জানা যায়। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওসি তদন্ত হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আবুল হাসনাত খাঁন।

যশোর জেলার কোতোয়ালি থানার পাগলাদহ এলাকার ভুক্তভোগী নারী লিখিত অভিযোগে বলেন, ৫ বছর আগে আগে পুলিশ কর্মকর্তা হীরন্ময় সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে সময় তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী হলেও নিজেকে মুসলিম বলে তাকে জানান। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক, পরে বিয়ের আশ্বাসে প্রথমে ধর্ষণ করে পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হীরন্ময় সরকার। এক সময় তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে। দীর্ঘ কয়েক বছর যশোর ও ঢাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ পরিচিত সবার কাছে ভুক্তভোগীকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতেন হীরন্ময় বলে অভিযোগ করে ওই ভুক্তভোগী নারী।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করান। তবে বিয়ের কথা বললেও নানা অজুহাত দিতে থাকেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে মোংলা থানায় পুলিশ পরিদর্শকের (তদন্ত) দায়িত্ব পাওয়ার পর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থানা ভবনে থাকা শুরু করেন অভিযুক্ত হিরনময় সরকার। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এরপর তার খোঁজে (৯ মে) মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও থানার ওসিকে এম আজিজুল ইসলামের সাথে দেখা করার জন্য মোংলায় আসেন ভুক্তভোগী এ নারী। বৃহস্পতিবার রাতে মোংলা আবাসিক হোটেল টাইগারে অবস্থান নেয় এবং বিষয়টি থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম ও মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষারকে জানানো হয়। শনিবার বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। পরে পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তিনি রোববার মোংলা থেকে যশোর চলে যান।

শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে হীরন্ময় সরকার বলেন, যখন আমি যশোরে পিবিআইতে সংযুক্ত ছিলাম তখন তার সাথে পরিচয় হয় এটা তথ্য কিন্ত তার সাথে কোন প্রেম বা শারীরিক সম্পর্ক এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি, ওই নারী শুধুই বন্ধু ছিলেন। এখন তিনি যেসব অভিযোগ করছেন, সে বিষয়ে কিছু বলার নেই। তবে আমাকে ফাসাঁনো হচ্ছে বলেও দাবী অভিযুক্ত ওই পুরিশ কর্মকর্তার।

মোংলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার বলেন, ওসি তদন্ত হীরন্ময় সরকার গত বছরের ৬ নভেম্বর মোংলা থানায় যোগদান করেছে। এর মধ্যে এরকম কোন ঘটনা আমাদের কাছে আসেনি, কিন্ত হঠাৎ করে এমন খবরে আমরা অবাক হচ্ছি। তবে ভুক্তভোগী ওই নারীর কাছ থেকে অভিযোগের বিষয়টি সোনার পর পরই জেলা পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে হীরন্মময় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পরিদর্শক হীরন্ময় সরকারকে মোংলা থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেরা এসপি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন : প্রতারণা করে বিয়ের নেশায় মোংলার বীথি আক্তার