ঢাকা ১২:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদসহ ৫ জনের নামে মামলা সাড়ে ৯ লাখ টাকার জুতা পরেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান মেগা প্রজেক্টের নামে দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার : বিএনপি মহাসচিব জার্মানিতে ব্যাটারিচালিত ট্রেনের যুগে টেসলার অভিষেক সেনাবাহিনীকে সবখানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া ঠিক হবে না: ফখরুল অর্পিত দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা চাইলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না : উপদেষ্টা ফাওজুল কবির যুক্তরাষ্ট্রে ইউনূস-মোদি বৈঠক হচ্ছে না চয়নিকার সিনেমায় দেবকে নায়ক হিসেবে চান , নায়িকা কে হবেন? ঢাবিতে যুবক ও জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা: আইন হাতে তুলে না নিতে আহ্বান

মীলাদুন্নবীর তাৎপর্য

সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষের পক্ষ ও প্রতিপক্ষ হিসেবে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষ চেয়েছে মানুষের চরম সর্বনাশ ও ধ্বংস। যিনি বিশাল ক্ষমতাধর ও শেষদিবস পর্যন্ত দীর্ঘ হায়াতের অধিকারী, বিশাল তার কর্মী বাহিনী, অসাধারণ তার কর্মতৎপরতা। তিনি সারাক্ষণ তার সকল ক্ষমতা ও বাহিনী নিয়োজিত রাখেন মানুষের বিনাশ কর্মে। তিনি কখনো ক্লান্ত হননা, বিশ্রাম নেন না, নিরলসভাবে চলে তার এই মনুষ্য বিনাশী কর্মতৎপরতা। মানুষের ধ্বংসের জন্য প্রতিনিয়ত চলতে থাকে তার গবেষণা কর্ম, তিনি বিজ্ঞ আলেম ও মেধাবী উদ্ভাবক। উদ্ভাবন করেন নতুন নতুন ফর্মুলা এবং তা প্রয়োগ করেন মানুষের উপর,সফল হন, উল্লাস করেন, কিন্তু মানুষ এ ব্যাপারে বড়ই বে-খবর।

তিনি জাতে জ্বীন, অবাধ তার বিচরণ ক্ষমতা মুহুর্তেই পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে পারেন, পারেন বিভিন্ন রুপ ধারণ করতে। তার মুল ক্ষমতা তিনি মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। প্ররোচিত করতে পারেন অশালীন ও দূষ্কর্মে । তিনি সাবেক ফিরিস্তা সর্দার আজাযিল যার রুপান্তরিত নাম ইবলিশ যার রয়েছে সূ-দীর্ঘ কর্মময় সোঁনালী ইতিহাস। কিন্তু অতি দূ:খের বিষয় আজ তিনি আমাদের প্রতিপক্ষ, চরম দুশমন খোদাদ্রোহী চির অভিশপ্ত।

অন্য পক্ষে রয়েছেন আমাদের স্রষ্টা এবং প্রভূ প্রতিপালক দয়াময় আল্লাহ, যিনি সর্বদা আমাদের মঙ্গল ও হেদায়াত প্রত্যাশী।শয়তানের কালো হাত থেকে মুক্তির জন্য যুগে যুগে এই পৃথিবীতে মানুষের হেদায়াত ও কল্যাণের নিমিত্তে মাবুদ আল্লাহ প্রেরণ করেছেন অসংখ্য নবী রাসুল ও আসমানী কিতাব। যখনি মানুষের হেদায়াতের জন্য কোন নবী-রাসুল বা আসমানি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তখনি শয়তানের মুখ গোমড়া হয়েছে, তিনি এটাকে তার মিশনের বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ঐ দিনগুলিকে তিনি “কালো দিন ” হিসেবে আক্ষায়িত করেছেন, পৃথিবী থেকে মুছে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু যারা হেদায়েত প্রত্যাশী যুগে যুগে এ দিনগুলিকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন। খুশীতে উৎযাপন করেছেন, শুকরিয়া আদায় করেছেন,এবং এগুলিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন।

অপরদিকে শয়তান চেয়েছে এগুলোকে বন্ধ করতে। এজন্য তারা প্রয়োগ করেছে বিভিন্ন যুক্তি, মতবাদ এবং ব্যবহার করেছে এক শ্রেনীর আলেম নামধারী অজ্ঞ ও ভন্ড ধর্ম ব্যাবসায়িদের।

মানুষের মুক্তির জন্য যতবেশী শক্তিশালী উসিলা এসেছে শয়তান তত বেশী নাখোশ হয়েছে। মাবুদ আল্লাহর পক্ষ থেকে এ যাবদ কাল যত কালাম এসেছে তন্মধ্যে ” সুরা ফাতিহা” সর্বোচ্চ নেয়ামতপূর্ণ, যার ফজিলত বর্ণনা করা মানুষের সাধ্যের অতিত। সুরা ফাতিহা বান্দা ও তার রবের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।

অন্যদিকে যত রাসুল এসেছেন তন্মধ্যে আমাদের রাসুল ” আহম্মদ মোস্তোফা মোহাম্মদ মোস্তফা’ নূরে মুজাস্সাম’ সাইয়েদুল মুর্সালিন হযরত মুহাম্মদ (সঃ)” সর্বাধিক আলোকিত, সফল কাম ও মর্যাদাপূর্ণ রাসুল। উনার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আজ আমরা মুসলমান। উনার কর্ম প্রচেষ্টার কারনে ইসলাম নামের একটি মহান ধর্ম আজ পৃথিবীতে বিরাজমান। মাবুদ আল্লাহর নাম প্রকাশিত হয়েছে পৃথিবীতে নয়তো শ্রষ্টার সাথে সৃষ্টির মিলন-পরিচয় থেকে যেত অধরা। ঈমানের মহা নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হতাম আমরা, হতাম চির জাহান্নামী৷ তারই প্রচেষ্টায় আজ দিকে দিকে উচ্চারিত হয় আজানের ধ্বনী আল্লাহু আকবর। মানুষ খুঁজে পেয়েছে তার রবকে, খুঁজে পেয়েছে মহা গন্তব্য, পেয়েছে পৃথিবী ও পরবর্তী পৃথিবীর শান্তি ও সফলতার সঠিক নির্দেশনা নয়তো এ ধরা হয়ে উঠতো আরও কন্টকময়, অশান্ত ও অনিরাপদ।

তিনি পৃথিবীর জন্য নিয়ে এসেছেন শান্তির বাণী, প্রবাহিত করেছেন শান্তির ধারা। যা আজও বহমান। তিনিই স্রষ্টার সর্বাধিক প্রসংশাকারী আহম্মদ এজন্যই তিনি সর্বাধিক প্রসংশিত অর্থাৎ মুহাম্মদ। রবের পরে তিনিই সর্বোচ্চ প্রসংশার দাবীদার মাবুদ আল্লাহ নিজেই তার প্রসংশায় পঞ্চমুখ। মুহাম্ম দ( স:) কে প্রসংশার জন্য আমরা মাবুদ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আদিষ্ট। এটা এমন নয় যে আমার ইচ্ছাধীন। আমাদেরকে চিন্তায় ও কর্মে আল্লাহ ও তার রাসুলের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে হবে উচ্চাসনে। পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তাদের, সেটাই এখলাছ ও ঈমান।

তারপর ইবাদতের বিষয় আসবে। অজ্ঞতার কারনে অনেকে নামাজ, রোজা প্রভৃতি ইবাদতের গুরুত্ব বুঝলেও রাসুলে পাকের মর্যাদার বিষয়ে উদাসীন। এ বিষয়টাকে মুল্যবান মনে করেননা। কেউ বলেন নফল।তারা না বুঝে এটাকে ইবাদতের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। বলেন নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত ফরজ এগুলোই সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে ঈমানের গুরুত্ব। ঈমান অসম্পূর্ণ থেকে গেলে আপনার কষ্টের ইবাদত হয়ে যাবে মুল্যহীন। কারণ আল্লাহ ও রাসুলের মর্যাদা ও প্রসংশার বিষয়টি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। এগুলো ফরজ ইবাদতের বহু উর্ধ্বে। পূর্ণ ঈমান ব্যাতিত নিছক আমলের বিনিময়ে ভাল প্রতিদান অলিক কল্পনা মাত্র।

রাসুলের প্রাপ্য মর্যাদা তার হক, যা মাবুদ আল্লাহ তার জন্য নির্ধারিত করেছেন, সেখানে আপনার আমার কার্পণ্য থাকতে পারেনা। রাসুলে পাকের মাধ্যমেই আমরা দুনিয়াতে রবকে চিনেছি, হেদায়েতের পথ পেয়েছি। তেমনি পরকালেও রাসুলে পাকের সুপারিশের মাধ্যমেই নাজাত প্রাপ্ত হব ইনশাল্লাহ।

সুতরাং কোন শয়তানের প্ররোচনায় কর্ণপাত করে যদি আমরা নবী(সা:)কে স্বাগত জানাতে না পারি। না পারি তার প্রসংশা প্রশস্তিতে শামিল হতে তবে খুশী হবে শয়তান।পরাজিত হব আমরা। নষ্ট হবে ঈমান, নষ্ট হবে পরকাল। আখেরে বিপদগ্রস্থ হব আমরা।

আপনার জানা উচিত যে রাসুলেপাকের প্রতি দূরুদ ব্যতিত কোন নামাজ বা প্রার্থনা পূর্ণতা পায়না, তেমনি রাসুলের রওজা যিয়ারত ব্যাতিত হজ্জ পূর্ণ হয়না। এগুলো আপনার বোঝা উচিত। অন্যের প্ররোচনায় কেন আপনি রাসুলে পাকের শানের খেলাফ জীবন যাপন করবেন। রাসুলে পাকের নাম উচ্চারিত হলেই আপনি উচ্ছাসিত হবেন। খুশীতে উদ্বেলিত হবেন, সেটাই কাম্য।

হিজরতের দিন মদীনার মুসলিম মুশরিক নির্বিশেষে সকল শ্রেনীর মানুষ নবীজিকে মদীনা শহরের বাহিরে এসে উল্লাসে স্বাগত জানিয়েছিলেন। আজ মুসলিম হয়েও আমরা শুধু শয়তানের প্ররোচনায় নবীর আগমনের দিনে তাকে স্বাগত জানাতে পারিনা। বিভিন্ন খোড়া যুক্তি আকড়ে ধরে বসে আছি। দূর্ভাগ্য আমাদের।

আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি রহমতের নবী – ” রহমাতাল্লিল আলামিন” তাই বর্তমান সমস্যা শংকুল পৃথিবীতে যদি আমরা মাবুদ আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি আশা করি তবে রহমতের নবীকেই উসিলা হিসেবে ধরতে হবে, কারন মাবুদ আল্লাহ মাধ্যম হিসেবে তাকেই বেশী পছন্দ করেন। তাই সম্পর্ক বাড়াতে হবে আমাদের রাসুলের সাথে। দূনিয়ার জমিনে যত বাড়বে রাসুল প্রেম ও তার জীবনী চর্চা ততই দুরিভূত হবে সমস্যার কালমেঘ। প্রবাহিত হবে খোদা তায়ালার রহমতের বৃষ্টি।

সুরা ফাতিহা নাজিল ও দয়াল নবীর আগমনের দিনটি ছিল শয়তানের সর্বাপেক্ষা না-খুশীর দিন। আমরা যেন তার পদাঙ্ক অনুসরণ না করি।

রবিউল আউয়ালের বাতাস শুরু হলেই নবী প্রেমীরা পেয়ে যান রাসুলের মিষ্টি ঘ্রাণ, আনন্দে উদ্বেলিত হয় তাদের মন, খুশীতে নেচে ওঠেন তারা। এই একটি মাস তারা অন্যরকম আমেজে কাটান। তাই আমরা সবাই যেন শামিল হই এই মহা নেয়ামতের স্রোতে। সাধ্যমত উৎযাপন করবো আমাদের প্রিয় নবী(স:)এর আগমণী দিন,মাস। মিষ্টি বিতরণ হবে, সাজ সাজ রবে জেগে উঠবে সারা শহর, গ্রাম। জেগে উঠবে মুহাম্মদী প্রেম, জেগে উঠবে মুহাম্মদ (স:) এর উম্মত। নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর,
নারায়ে রিছালত ইয়া রাসুলাল্লাহ(স:) ধ্বনীতে মুখরিত করবো চারপাশ, দুরিভূত হবে শয়তান, কেটে যাবে সব কালমেঘ। জশনে জুলুছ ঈদে মীলাদূন্নবী(স:)।

আরো পড়ুন : দেশ-বিদেশের স্বৈরশাসকদের করুণ পরিণতি

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদসহ ৫ জনের নামে মামলা

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মীলাদুন্নবীর তাৎপর্য

আপডেট সময় ১১:১০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সৃষ্টির শুরু থেকেই মানুষের পক্ষ ও প্রতিপক্ষ হিসেবে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষ চেয়েছে মানুষের চরম সর্বনাশ ও ধ্বংস। যিনি বিশাল ক্ষমতাধর ও শেষদিবস পর্যন্ত দীর্ঘ হায়াতের অধিকারী, বিশাল তার কর্মী বাহিনী, অসাধারণ তার কর্মতৎপরতা। তিনি সারাক্ষণ তার সকল ক্ষমতা ও বাহিনী নিয়োজিত রাখেন মানুষের বিনাশ কর্মে। তিনি কখনো ক্লান্ত হননা, বিশ্রাম নেন না, নিরলসভাবে চলে তার এই মনুষ্য বিনাশী কর্মতৎপরতা। মানুষের ধ্বংসের জন্য প্রতিনিয়ত চলতে থাকে তার গবেষণা কর্ম, তিনি বিজ্ঞ আলেম ও মেধাবী উদ্ভাবক। উদ্ভাবন করেন নতুন নতুন ফর্মুলা এবং তা প্রয়োগ করেন মানুষের উপর,সফল হন, উল্লাস করেন, কিন্তু মানুষ এ ব্যাপারে বড়ই বে-খবর।

তিনি জাতে জ্বীন, অবাধ তার বিচরণ ক্ষমতা মুহুর্তেই পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে পারেন, পারেন বিভিন্ন রুপ ধারণ করতে। তার মুল ক্ষমতা তিনি মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। প্ররোচিত করতে পারেন অশালীন ও দূষ্কর্মে । তিনি সাবেক ফিরিস্তা সর্দার আজাযিল যার রুপান্তরিত নাম ইবলিশ যার রয়েছে সূ-দীর্ঘ কর্মময় সোঁনালী ইতিহাস। কিন্তু অতি দূ:খের বিষয় আজ তিনি আমাদের প্রতিপক্ষ, চরম দুশমন খোদাদ্রোহী চির অভিশপ্ত।

অন্য পক্ষে রয়েছেন আমাদের স্রষ্টা এবং প্রভূ প্রতিপালক দয়াময় আল্লাহ, যিনি সর্বদা আমাদের মঙ্গল ও হেদায়াত প্রত্যাশী।শয়তানের কালো হাত থেকে মুক্তির জন্য যুগে যুগে এই পৃথিবীতে মানুষের হেদায়াত ও কল্যাণের নিমিত্তে মাবুদ আল্লাহ প্রেরণ করেছেন অসংখ্য নবী রাসুল ও আসমানী কিতাব। যখনি মানুষের হেদায়াতের জন্য কোন নবী-রাসুল বা আসমানি কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তখনি শয়তানের মুখ গোমড়া হয়েছে, তিনি এটাকে তার মিশনের বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ঐ দিনগুলিকে তিনি “কালো দিন ” হিসেবে আক্ষায়িত করেছেন, পৃথিবী থেকে মুছে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু যারা হেদায়েত প্রত্যাশী যুগে যুগে এ দিনগুলিকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন। খুশীতে উৎযাপন করেছেন, শুকরিয়া আদায় করেছেন,এবং এগুলিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন।

অপরদিকে শয়তান চেয়েছে এগুলোকে বন্ধ করতে। এজন্য তারা প্রয়োগ করেছে বিভিন্ন যুক্তি, মতবাদ এবং ব্যবহার করেছে এক শ্রেনীর আলেম নামধারী অজ্ঞ ও ভন্ড ধর্ম ব্যাবসায়িদের।

মানুষের মুক্তির জন্য যতবেশী শক্তিশালী উসিলা এসেছে শয়তান তত বেশী নাখোশ হয়েছে। মাবুদ আল্লাহর পক্ষ থেকে এ যাবদ কাল যত কালাম এসেছে তন্মধ্যে ” সুরা ফাতিহা” সর্বোচ্চ নেয়ামতপূর্ণ, যার ফজিলত বর্ণনা করা মানুষের সাধ্যের অতিত। সুরা ফাতিহা বান্দা ও তার রবের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।

অন্যদিকে যত রাসুল এসেছেন তন্মধ্যে আমাদের রাসুল ” আহম্মদ মোস্তোফা মোহাম্মদ মোস্তফা’ নূরে মুজাস্সাম’ সাইয়েদুল মুর্সালিন হযরত মুহাম্মদ (সঃ)” সর্বাধিক আলোকিত, সফল কাম ও মর্যাদাপূর্ণ রাসুল। উনার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আজ আমরা মুসলমান। উনার কর্ম প্রচেষ্টার কারনে ইসলাম নামের একটি মহান ধর্ম আজ পৃথিবীতে বিরাজমান। মাবুদ আল্লাহর নাম প্রকাশিত হয়েছে পৃথিবীতে নয়তো শ্রষ্টার সাথে সৃষ্টির মিলন-পরিচয় থেকে যেত অধরা। ঈমানের মহা নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হতাম আমরা, হতাম চির জাহান্নামী৷ তারই প্রচেষ্টায় আজ দিকে দিকে উচ্চারিত হয় আজানের ধ্বনী আল্লাহু আকবর। মানুষ খুঁজে পেয়েছে তার রবকে, খুঁজে পেয়েছে মহা গন্তব্য, পেয়েছে পৃথিবী ও পরবর্তী পৃথিবীর শান্তি ও সফলতার সঠিক নির্দেশনা নয়তো এ ধরা হয়ে উঠতো আরও কন্টকময়, অশান্ত ও অনিরাপদ।

তিনি পৃথিবীর জন্য নিয়ে এসেছেন শান্তির বাণী, প্রবাহিত করেছেন শান্তির ধারা। যা আজও বহমান। তিনিই স্রষ্টার সর্বাধিক প্রসংশাকারী আহম্মদ এজন্যই তিনি সর্বাধিক প্রসংশিত অর্থাৎ মুহাম্মদ। রবের পরে তিনিই সর্বোচ্চ প্রসংশার দাবীদার মাবুদ আল্লাহ নিজেই তার প্রসংশায় পঞ্চমুখ। মুহাম্ম দ( স:) কে প্রসংশার জন্য আমরা মাবুদ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আদিষ্ট। এটা এমন নয় যে আমার ইচ্ছাধীন। আমাদেরকে চিন্তায় ও কর্মে আল্লাহ ও তার রাসুলের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে হবে উচ্চাসনে। পূর্ণ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তাদের, সেটাই এখলাছ ও ঈমান।

তারপর ইবাদতের বিষয় আসবে। অজ্ঞতার কারনে অনেকে নামাজ, রোজা প্রভৃতি ইবাদতের গুরুত্ব বুঝলেও রাসুলে পাকের মর্যাদার বিষয়ে উদাসীন। এ বিষয়টাকে মুল্যবান মনে করেননা। কেউ বলেন নফল।তারা না বুঝে এটাকে ইবাদতের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। বলেন নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত ফরজ এগুলোই সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আপনাকে প্রথমে বুঝতে হবে ঈমানের গুরুত্ব। ঈমান অসম্পূর্ণ থেকে গেলে আপনার কষ্টের ইবাদত হয়ে যাবে মুল্যহীন। কারণ আল্লাহ ও রাসুলের মর্যাদা ও প্রসংশার বিষয়টি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। এগুলো ফরজ ইবাদতের বহু উর্ধ্বে। পূর্ণ ঈমান ব্যাতিত নিছক আমলের বিনিময়ে ভাল প্রতিদান অলিক কল্পনা মাত্র।

রাসুলের প্রাপ্য মর্যাদা তার হক, যা মাবুদ আল্লাহ তার জন্য নির্ধারিত করেছেন, সেখানে আপনার আমার কার্পণ্য থাকতে পারেনা। রাসুলে পাকের মাধ্যমেই আমরা দুনিয়াতে রবকে চিনেছি, হেদায়েতের পথ পেয়েছি। তেমনি পরকালেও রাসুলে পাকের সুপারিশের মাধ্যমেই নাজাত প্রাপ্ত হব ইনশাল্লাহ।

সুতরাং কোন শয়তানের প্ররোচনায় কর্ণপাত করে যদি আমরা নবী(সা:)কে স্বাগত জানাতে না পারি। না পারি তার প্রসংশা প্রশস্তিতে শামিল হতে তবে খুশী হবে শয়তান।পরাজিত হব আমরা। নষ্ট হবে ঈমান, নষ্ট হবে পরকাল। আখেরে বিপদগ্রস্থ হব আমরা।

আপনার জানা উচিত যে রাসুলেপাকের প্রতি দূরুদ ব্যতিত কোন নামাজ বা প্রার্থনা পূর্ণতা পায়না, তেমনি রাসুলের রওজা যিয়ারত ব্যাতিত হজ্জ পূর্ণ হয়না। এগুলো আপনার বোঝা উচিত। অন্যের প্ররোচনায় কেন আপনি রাসুলে পাকের শানের খেলাফ জীবন যাপন করবেন। রাসুলে পাকের নাম উচ্চারিত হলেই আপনি উচ্ছাসিত হবেন। খুশীতে উদ্বেলিত হবেন, সেটাই কাম্য।

হিজরতের দিন মদীনার মুসলিম মুশরিক নির্বিশেষে সকল শ্রেনীর মানুষ নবীজিকে মদীনা শহরের বাহিরে এসে উল্লাসে স্বাগত জানিয়েছিলেন। আজ মুসলিম হয়েও আমরা শুধু শয়তানের প্ররোচনায় নবীর আগমনের দিনে তাকে স্বাগত জানাতে পারিনা। বিভিন্ন খোড়া যুক্তি আকড়ে ধরে বসে আছি। দূর্ভাগ্য আমাদের।

আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি রহমতের নবী – ” রহমাতাল্লিল আলামিন” তাই বর্তমান সমস্যা শংকুল পৃথিবীতে যদি আমরা মাবুদ আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি আশা করি তবে রহমতের নবীকেই উসিলা হিসেবে ধরতে হবে, কারন মাবুদ আল্লাহ মাধ্যম হিসেবে তাকেই বেশী পছন্দ করেন। তাই সম্পর্ক বাড়াতে হবে আমাদের রাসুলের সাথে। দূনিয়ার জমিনে যত বাড়বে রাসুল প্রেম ও তার জীবনী চর্চা ততই দুরিভূত হবে সমস্যার কালমেঘ। প্রবাহিত হবে খোদা তায়ালার রহমতের বৃষ্টি।

সুরা ফাতিহা নাজিল ও দয়াল নবীর আগমনের দিনটি ছিল শয়তানের সর্বাপেক্ষা না-খুশীর দিন। আমরা যেন তার পদাঙ্ক অনুসরণ না করি।

রবিউল আউয়ালের বাতাস শুরু হলেই নবী প্রেমীরা পেয়ে যান রাসুলের মিষ্টি ঘ্রাণ, আনন্দে উদ্বেলিত হয় তাদের মন, খুশীতে নেচে ওঠেন তারা। এই একটি মাস তারা অন্যরকম আমেজে কাটান। তাই আমরা সবাই যেন শামিল হই এই মহা নেয়ামতের স্রোতে। সাধ্যমত উৎযাপন করবো আমাদের প্রিয় নবী(স:)এর আগমণী দিন,মাস। মিষ্টি বিতরণ হবে, সাজ সাজ রবে জেগে উঠবে সারা শহর, গ্রাম। জেগে উঠবে মুহাম্মদী প্রেম, জেগে উঠবে মুহাম্মদ (স:) এর উম্মত। নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবর,
নারায়ে রিছালত ইয়া রাসুলাল্লাহ(স:) ধ্বনীতে মুখরিত করবো চারপাশ, দুরিভূত হবে শয়তান, কেটে যাবে সব কালমেঘ। জশনে জুলুছ ঈদে মীলাদূন্নবী(স:)।

আরো পড়ুন : দেশ-বিদেশের স্বৈরশাসকদের করুণ পরিণতি