ঢাকা ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আবারো লেবাননে বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল সাইবার নিরাপত্তাসহ সকল কালো আইন অবশ্যই বাতিল হবে : আসিফ নজরুল ১০ বছর পর বিশ্বকাপে জয় পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টাইম ম্যাগাজিনের উদীয়মান ১০০ বিশ্বনেতার তালিকায় নাহিদ ইসলাম সরকারের সর্বত্র শেখ হাসিনার ভূতরা সক্রিয় : রিজভী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে বসে এখনও ষড়যন্ত্র করছেন : শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ১০ কোটিতে ডিসি নিয়োগ, কেলেঙ্কারির স্ক্রিনশট ফাঁস ড. ইউনূসের ৬৬৬ কোটি টাকা করের রায়ে বিব্রত হাইকোর্ট, নথি গেলো প্রধান বিচারপতির কাছে দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮ নির্দেশনা জামিন পেলেন মাহমুদুর রহমান

টানা ৪৮ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ আশুলিয়ায়, যানজটে দুর্ভোগ

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে দুটি মহাসড়কের প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তিন দিন ধরে গাড়ির চাকা না ঘোরার কারণে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। একই স্থানে আটকে আছে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন। অবরোধের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে অবরোধ করে রাখার পর আজ (বুধবার) সকালেও সেখানে অবস্থান করছেন স্থানীয় বার্ডস গ্রুপ নামে বন্ধ থাকা একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

জানা গেছে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লে-অফ ঘোষণা করা বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকদের সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দিন ধার্য করা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ কোনও পাওনা পরিশোধ না করে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি তিন মাস সময় চেয়ে কারখানার গেটে একটি নোটিশও দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা পাওনাদি পাওয়ার আশায় সকালে কারখানায় গেলে নোটিশে আরও তিন মাস সময় চাওয়ার বিষয়টি দেখতে পান। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সব শ্রমিক নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বুড়িরবাজার রোড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। টানা ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনও আশ্বাস না পাওয়ায় অবরোধ প্রত্যাহার করেনি শ্রমিকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্ডস গ্রুপের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের চুক্তির দিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিশ্বাসযোগ্য লোকজন ছিলেন। কিন্তু সেই চুক্তিও ভঙ্গ করলো মালিকপক্ষ। আমাদের অনেক শ্রমিক চাকরি না পেয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। তারা বকেয়া পাওনাদির জন্য গ্রাম থেকে এসেছেন। এখন মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। আমাদের সবাই হতাশ করেছে। পাওনাদি না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহারের কোনও সুযোগ নেই।’

এদিকে, ৪৮ ঘণ্টা ধরে গুরুত্বপূর্ণ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বহু মানুষ। দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন আটকে আছে মহাসড়কটির প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। এর প্রভাবে আশপাশের ঢাকা-আরিচা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন মানুষ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশমাইল থেকে নবীনগর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর থেকে শ্রীপুর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

ট্রাকচালক রহমত আলী বলেন, ‘মালামাল নিয়ে দুই দিন ধরে যানজটে পলাশবাড়ী এলাকায় আটকে আছি। গাড়ির চাকা কোনোভাবেই নড়ছে না। শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখছে তিন দিন ধরে। এভাবে কতক্ষণ সড়কে বসে থাকা যায়? দুই দিন ধরে ভালোভাবে খাওয়া, গোসল আর ঘুম নেই। আমাদের দুর্দশা আর দুর্ভোগের কথা আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ভাবা উচিত। কারণ আমরাও তো তাদের মতোই শ্রমিক। আর এত সময় ধরে শ্রমিকরা সড়ক বন্ধ করে রাখলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ কেন নিচ্ছে না, সেটাও বুঝছি না। পুলিশের কাউকেই দুই দিনে এখানে আসতে দেখিনি।’

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করেননি শ্রমিকরা। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসবেন।’

আরো পড়ুন  :

 

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

নামাজের প্রাণ ‘বিনয় ও একাগ্রতা’

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

টানা ৪৮ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ আশুলিয়ায়, যানজটে দুর্ভোগ

আপডেট সময় ১২:২২:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে দুটি মহাসড়কের প্রায় সাত কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তিন দিন ধরে গাড়ির চাকা না ঘোরার কারণে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। একই স্থানে আটকে আছে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন। অবরোধের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে অবরোধ করে রাখার পর আজ (বুধবার) সকালেও সেখানে অবস্থান করছেন স্থানীয় বার্ডস গ্রুপ নামে বন্ধ থাকা একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

জানা গেছে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) লে-অফ ঘোষণা করা বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকদের সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দিন ধার্য করা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ কোনও পাওনা পরিশোধ না করে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি তিন মাস সময় চেয়ে কারখানার গেটে একটি নোটিশও দেয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকরা পাওনাদি পাওয়ার আশায় সকালে কারখানায় গেলে নোটিশে আরও তিন মাস সময় চাওয়ার বিষয়টি দেখতে পান। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সব শ্রমিক নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বুড়িরবাজার রোড এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। টানা ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনও আশ্বাস না পাওয়ায় অবরোধ প্রত্যাহার করেনি শ্রমিকরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্ডস গ্রুপের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমাদের চুক্তির দিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিশ্বাসযোগ্য লোকজন ছিলেন। কিন্তু সেই চুক্তিও ভঙ্গ করলো মালিকপক্ষ। আমাদের অনেক শ্রমিক চাকরি না পেয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। তারা বকেয়া পাওনাদির জন্য গ্রাম থেকে এসেছেন। এখন মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। আমাদের সবাই হতাশ করেছে। পাওনাদি না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহারের কোনও সুযোগ নেই।’

এদিকে, ৪৮ ঘণ্টা ধরে গুরুত্বপূর্ণ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বহু মানুষ। দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন আটকে আছে মহাসড়কটির প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। এর প্রভাবে আশপাশের ঢাকা-আরিচা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন মানুষ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিশমাইল থেকে নবীনগর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর থেকে শ্রীপুর পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

ট্রাকচালক রহমত আলী বলেন, ‘মালামাল নিয়ে দুই দিন ধরে যানজটে পলাশবাড়ী এলাকায় আটকে আছি। গাড়ির চাকা কোনোভাবেই নড়ছে না। শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখছে তিন দিন ধরে। এভাবে কতক্ষণ সড়কে বসে থাকা যায়? দুই দিন ধরে ভালোভাবে খাওয়া, গোসল আর ঘুম নেই। আমাদের দুর্দশা আর দুর্ভোগের কথা আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ভাবা উচিত। কারণ আমরাও তো তাদের মতোই শ্রমিক। আর এত সময় ধরে শ্রমিকরা সড়ক বন্ধ করে রাখলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ কেন নিচ্ছে না, সেটাও বুঝছি না। পুলিশের কাউকেই দুই দিনে এখানে আসতে দেখিনি।’

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করেননি শ্রমিকরা। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসবেন।’

আরো পড়ুন  :