ঢাকা ০৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলায় দুজনের সাজা কমলো

বহুল আলোচিত ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৯ আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

গত ৩০ এপ্রিল বহুল আলোচিত ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের জন্য গত ৮ মে দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ওইদিনই রায় পড়া শুরু করেন হাইকোর্ট। আজ সাজা ঘোষণা করা হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের ওপর শুনানি শেষ হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলার প্রায় ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন রায় ঘোষণা করেন নিম্ন আদালত।

রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

একই বছর বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ও আরিফ হাসান ওরফে সুমন হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল করেন। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন জেল আপিল করেন।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় মোট ১০ জন নিহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান ৯ জন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।

নিহতরা হলেন—আল-মামুন হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলী। একজনের পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় পুলিশ রমনা থানায় মামলা করে।

২০০৬ সালের ১৯ নভেম্বর এ মামলায় মুফতি আবদুল হান্নান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর ঘটনার জট খোলে। সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলার তদন্তে গতি সঞ্চার হয়। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে ওই ঘটনায় দুটি অভিযোগপত্র দেয়। এর একটি হত্যা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।

১৪ আসামির মধ্যে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন—মুফতি হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা তাজউদ্দিন (সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই) এবং হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর বদর। এদের মধ্যে প্রথম চারজন কারাগারে এবং শেষের চারজন পলাতক। অপর ছয় আসামিকেই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

কারাগারে আটক ছয় আসামি হলেন—হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েল।

একই ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটি এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলায় আগামী ১৭ মে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় রমনা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

চার দিনের রিমান্ডে মমতাজ

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলায় দুজনের সাজা কমলো

আপডেট সময় ০৫:৪৮:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

বহুল আলোচিত ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা তাজ উদ্দিন ও জুয়েলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৯ আসামির সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

গত ৩০ এপ্রিল বহুল আলোচিত ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের জন্য গত ৮ মে দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। ওইদিনই রায় পড়া শুরু করেন হাইকোর্ট। আজ সাজা ঘোষণা করা হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ের ওপর শুনানি শেষ হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলার প্রায় ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন রায় ঘোষণা করেন নিম্ন আদালত।

রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

একই বছর বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ও আরিফ হাসান ওরফে সুমন হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল করেন। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন জেল আপিল করেন।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় মোট ১০ জন নিহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান ৯ জন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন।

নিহতরা হলেন—আল-মামুন হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম, জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলী। একজনের পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় পুলিশ রমনা থানায় মামলা করে।

২০০৬ সালের ১৯ নভেম্বর এ মামলায় মুফতি আবদুল হান্নান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর ঘটনার জট খোলে। সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলার তদন্তে গতি সঞ্চার হয়। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে ওই ঘটনায় দুটি অভিযোগপত্র দেয়। এর একটি হত্যা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।

১৪ আসামির মধ্যে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন—মুফতি হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা তাজউদ্দিন (সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই) এবং হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর বদর। এদের মধ্যে প্রথম চারজন কারাগারে এবং শেষের চারজন পলাতক। অপর ছয় আসামিকেই হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

কারাগারে আটক ছয় আসামি হলেন—হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান, হাফেজ ইয়াহিয়া, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মাওলানা আবদুর রউফ ও শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েল।

একই ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটি এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলায় ৮৪ জনের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলায় আগামী ১৭ মে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় রমনা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

চার দিনের রিমান্ডে মমতাজ