ঢাকা ০৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতি কথন ধ্বংসের কারণ

শাহাদাত হোসাইন
কথাবার্তা মানুষের যোগাযোগের বাহন। আল্লাহর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত; যা মানুষকে অন্য সব সৃষ্টি জীব থেকে আলাদা করেছে। আমরা যে সব নিয়ামত অপচয়ে অভ্যস্ত কথন-নিয়ামত তার অন্যতম। আমরা সর্বক্ষণ অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও অনর্থক কথাবার্তা আর বাগি¦তণ্ডায় মজে থাকি। কথায় ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ হয়, আবার মূর্খতাও প্রকাশিত হয়। আল্লাহ আমাদেরকে জবান ও ভাষা দিয়েছেন, মানব ও মানবতার কল্যাণ সাধনার্থে। যে কথায় কারো কোনো উপকার নেই, সে কথা না বলাই শ্রেয়। লোকমান আ: বলেছেন, ‘চুপ থাকাই প্রজ্ঞা, তবে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিই তা মান্য করে।’ (আল-জামে-৫০৭)

কথাবার্তা রবের বিশেষ দান
কথাবার্তার শক্তি বান্দার প্রতি মহান রবের বিশেষ দান। আল্লাহ স্বীয় কৃপাগুণে মানুষকে কথাবার্তা শিক্ষা দিয়েছেন। সূরা আর-রহমানে বর্ণিত হয়েছে- ‘তিনিই মানুষকে ভাষাশৈলী শিখিয়েছেন (৪)। জিহ্বা তাঁরই দান। আল্লাহ বলেন- ‘আমি কি তাকে (মানুষকে) দেইনি চক্ষুুদ্বয়, জিহ্বা ও ওষ্ঠদ্বয়?’ (সূরা বালাদ : ৯-১০) মানুষের কর্তব্য হলো, আল্লাহর দেয়া এই নিয়ামতের ব্যবহারে তার বিধি-নিষেধের প্রতি খেয়াল রাখা। এক ব্যক্তি নবীজীকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার জন্য কোন জিনিসকে অধিক ভয়ানক বলে মনে করেন? তখন তিনি হাত দিয়ে স্বীয় জিহ্বা ধরলেন। (আল-জামে-৪১২) এর মাধ্যমে নবীজী বুঝিয়েছেন, কথা মানুষের জন্য বড্ড ভয়ানক।

কথার হিফাজতকারী সর্বোত্তম মুসলিম
মূর্খ-শিক্ষিত দুনিয়ার কোনো ব্যক্তিই বাচালকে পছন্দ করে না। আল্লাহ তায়ালাও তাকে পছন্দ করেন না। বাচাল ব্যক্তি তার অযাচিত কথার দ্বারা অন্যকে আঘাত দেয়। হজরত আলী রা: বলেছেন, কথার আঘাত তরবারির আঘাতের চেয়েও অধিক কষ্টদায়ক। নবীজী বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি যার হাত ও মুখ থেকে (কথার) অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (মুসলিম-১০)

বচন-দোষ ধ্বংস আনে
মধ্যমপন্থা সব ক্ষেত্রেই উপকারী। বাড়াবাড়ি কোনো ক্ষেত্রেই কাম্য নয়। অতিরিক্ত কথা ব্যক্তিকে সমস্যা ও বিপদে ফেলে। নিজের সাথে সাথে অন্যকেও কষ্টে নিপতিত করে। অতিরিক্ত কথা ব্যক্তিকে লজ্জার মুখোমুখি করে। হজরত দাউদ আ: বলেছেন, ‘কথার কারণে অনেক সময় লজ্জিত হয়েছি, কিন্তু চুপ থাকার কারণে কখনো লজ্জিত হইনি।’ (আল-জামে-৪১৮) অতিরিক্ত কথা দুনিয়া ও আখিরাত বিনষ্টের কারণ।

মানুষের প্রতিটি কথা আমল
আমাদের জীবনের প্রতিটি কথা একেকটি আমল, যার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব কিয়ামতে আল্লাহর দরবারে দিতে হবে। অতএব, কথা বলার আগে একটু হলেও ভাবা উচিত এবং নিয়ন্ত্রিত কথা বলা উচিত। অনিয়ন্ত্রিত কথার কারণে দুনিয়াতে যেমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, আখিরাতেও এর জবাবদিহিতা করতে হবে। দুনিয়াতে পার পেলেও আখিরাতে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় কথাবার্তাকে আমল ও চরিত্রকে দ্বীন হিসেবে দেখে না, সে নিজের অজান্তেই ধ্বংস হয়ে যায়। (আল-জামে ১ : ৬১) বস্তুত যে ব্যক্তি কথাকে আমল মনে করে নিশ্চয়ই সে অল্প কথা বলে। (আয-জুহুদ-৩৮৩)

কথায় জান্নাত কথায় জাহান্নাম
কথার ভিত্তিতে মানুষের জান্নাত হবে, কথার ভিত্তিতে হবে জাহান্নাম। যে কথায় সৃষ্টি জীবের উপকার হয়, সে কথায় আল্লাহ খুশি হন। আর যে কথায় ক্ষতি হয়, তাতে আল্লাহ ক্রোধান্বিত হন। কুরআনে এসেছে- ‘তাদের অধিকাংশ শলাপরামর্শ (কথাবার্তা) ভালো নয়, কিন্তু যে কথাবার্তা দান-খয়রাত, সৎকাজ কিংবা মানুষের মধ্যে সন্ধি স্থাপনের জন্য হয় তা ভিন্ন। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এমনটি করে, আমি তাকে বিরাট সওয়াব দান করব।’ (সূরা নিসা-১১৪) নবীজী বলেছেন, ‘অনেক কথার কারণে আল্লাহ বান্দার সম্মান বৃদ্ধি করে এবং জান্নাত দেন এবং অনেক কথার কারণে বান্দাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়।’ (আল-জামে-৪০৭)

অধিক কথায় ফেতনা
কথার আধিক্য ব্যক্তিকে বিভিন্ন ফেতনা ও বিপদের সম্মুখীন করে। নিত্যনতুন সমস্যায় জর্জরিত করে। হজরত ইয়াজিদ ইবনে হাবিব রহ: বলেন, অধিক বাগ্মিতা ব্যক্তিকে ফেতনায় আক্রান্ত করে আর নীরব ও নিস্তব্ধতা ব্যক্তিকে রহমতের উপযুক্ত করে। (আল-জামে-৪৩৯) ফেতনা বিমুখ ব্যক্তিমাত্রই অধিক-কথন পরিহারকারী। জিহ্বার হিফাজতকারী সম্পর্কে নবীজী বলেছেন, ‘আল্লাহ যাকে দুটো জিনিসের খারাবি থেকে রক্ষা করবেন তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। জিহ্বা (কথাবার্তা) এবং লজ্জাস্থানের খারাবি।’ (বুখারি-৬৪৭৪)

বেশি কথায় বেশি ভুল
হজরত ইবনে ওয়াহাব রহ: বলেন, যে ব্যক্তির কথা বেশি তার ভুলও বেশি। (আল-জামে-৪৯৫) প্রকৃতপক্ষে ত্রুটিমুক্ত কথা বলতে অধিক জ্ঞানের প্রয়োজন। আর যখন কোনো ব্যক্তি প্রকৃত জ্ঞানের অধিকারী হয়, তখন তার কথা কমে যায়। বনি ইসরাইলের একজন তাপস বলেছেন, নারীর সৌন্দর্য লজ্জায় আর জ্ঞানীর সৌন্দর্য অল্প কথায়। (আয-জুহুদ-৩৮৩)

নীরবতা নিরাপদ
নবীজী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিরাপদ থাকতে পছন্দ করে, সে যেন চুপ থাকাকে আবশ্যকীয়ভাবে অবলম্বন করে। (আত-তারগিব : ৪ : ২৬) একবার হজরত আবুজার রা:-কে নবীজী বললেন, আমি তোমাকে এমন দুটো স্বভাবের কথা জানিয়ে দেবো? যা প্রকাশ সহজ তবে মিজানে ভারী।’ তিনি বললেন, হ্যাঁ। নবীজী বলেন, ‘সুন্দর ব্যবহার এবং চুপ থাকা।’ (আয-জুহুদ-৩৮৪)

সফলতার পূর্বশর্ত
সূরা মুমিনুনে সফলকাম মুমিনের গুণাবলির বর্ণনায় আল্লাহ বলেন- ‘যারা অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে’ (৩)। নবীজী বলেছেন, ‘অনর্থক কথা-কাজ পরিহার করাই মুসলিম ব্যক্তির সৌন্দর্য।’ (তিরমিজি-২৩১৭)

যে কথা বলা উচিত
অনর্থক কথাবার্তায় সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। তবে সত্য কথায় চুপ থাকা অনুচিত। সাহাবি আবু জার রা: বলেছেন, সত্য কথায় চুপ থাকার থেকে বলা উত্তম। আর অনর্থক কথা বলার থেকে চুপ থাকা উত্তম। (আল-জামে-৪৫৭) নবীজী সা: বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই কথকের জিহ্বার পাশে আল্লাহর অবস্থান। অতএব, কথাবার্তার ক্ষেত্রে মানুষ যেন আল্লাহকে ভয় করে।’ (আল-জামে লি-ইবনে ওয়াহাব-৪৫০)

লেখক : খতিব, বায়তুল আজিম জামে মসজিদ, রংপুর

আরো পড়ুন : হজে যাওয়ার আগে যে ৫ কাজ করা জরুরি

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

অতি কথন ধ্বংসের কারণ

আপডেট সময় ১১:৪৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

শাহাদাত হোসাইন
কথাবার্তা মানুষের যোগাযোগের বাহন। আল্লাহর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিয়ামত; যা মানুষকে অন্য সব সৃষ্টি জীব থেকে আলাদা করেছে। আমরা যে সব নিয়ামত অপচয়ে অভ্যস্ত কথন-নিয়ামত তার অন্যতম। আমরা সর্বক্ষণ অযৌক্তিক, অপ্রয়োজনীয় ও অনর্থক কথাবার্তা আর বাগি¦তণ্ডায় মজে থাকি। কথায় ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ হয়, আবার মূর্খতাও প্রকাশিত হয়। আল্লাহ আমাদেরকে জবান ও ভাষা দিয়েছেন, মানব ও মানবতার কল্যাণ সাধনার্থে। যে কথায় কারো কোনো উপকার নেই, সে কথা না বলাই শ্রেয়। লোকমান আ: বলেছেন, ‘চুপ থাকাই প্রজ্ঞা, তবে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিই তা মান্য করে।’ (আল-জামে-৫০৭)

কথাবার্তা রবের বিশেষ দান
কথাবার্তার শক্তি বান্দার প্রতি মহান রবের বিশেষ দান। আল্লাহ স্বীয় কৃপাগুণে মানুষকে কথাবার্তা শিক্ষা দিয়েছেন। সূরা আর-রহমানে বর্ণিত হয়েছে- ‘তিনিই মানুষকে ভাষাশৈলী শিখিয়েছেন (৪)। জিহ্বা তাঁরই দান। আল্লাহ বলেন- ‘আমি কি তাকে (মানুষকে) দেইনি চক্ষুুদ্বয়, জিহ্বা ও ওষ্ঠদ্বয়?’ (সূরা বালাদ : ৯-১০) মানুষের কর্তব্য হলো, আল্লাহর দেয়া এই নিয়ামতের ব্যবহারে তার বিধি-নিষেধের প্রতি খেয়াল রাখা। এক ব্যক্তি নবীজীকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার জন্য কোন জিনিসকে অধিক ভয়ানক বলে মনে করেন? তখন তিনি হাত দিয়ে স্বীয় জিহ্বা ধরলেন। (আল-জামে-৪১২) এর মাধ্যমে নবীজী বুঝিয়েছেন, কথা মানুষের জন্য বড্ড ভয়ানক।

কথার হিফাজতকারী সর্বোত্তম মুসলিম
মূর্খ-শিক্ষিত দুনিয়ার কোনো ব্যক্তিই বাচালকে পছন্দ করে না। আল্লাহ তায়ালাও তাকে পছন্দ করেন না। বাচাল ব্যক্তি তার অযাচিত কথার দ্বারা অন্যকে আঘাত দেয়। হজরত আলী রা: বলেছেন, কথার আঘাত তরবারির আঘাতের চেয়েও অধিক কষ্টদায়ক। নবীজী বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলিম সেই ব্যক্তি যার হাত ও মুখ থেকে (কথার) অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ (মুসলিম-১০)

বচন-দোষ ধ্বংস আনে
মধ্যমপন্থা সব ক্ষেত্রেই উপকারী। বাড়াবাড়ি কোনো ক্ষেত্রেই কাম্য নয়। অতিরিক্ত কথা ব্যক্তিকে সমস্যা ও বিপদে ফেলে। নিজের সাথে সাথে অন্যকেও কষ্টে নিপতিত করে। অতিরিক্ত কথা ব্যক্তিকে লজ্জার মুখোমুখি করে। হজরত দাউদ আ: বলেছেন, ‘কথার কারণে অনেক সময় লজ্জিত হয়েছি, কিন্তু চুপ থাকার কারণে কখনো লজ্জিত হইনি।’ (আল-জামে-৪১৮) অতিরিক্ত কথা দুনিয়া ও আখিরাত বিনষ্টের কারণ।

মানুষের প্রতিটি কথা আমল
আমাদের জীবনের প্রতিটি কথা একেকটি আমল, যার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব কিয়ামতে আল্লাহর দরবারে দিতে হবে। অতএব, কথা বলার আগে একটু হলেও ভাবা উচিত এবং নিয়ন্ত্রিত কথা বলা উচিত। অনিয়ন্ত্রিত কথার কারণে দুনিয়াতে যেমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, আখিরাতেও এর জবাবদিহিতা করতে হবে। দুনিয়াতে পার পেলেও আখিরাতে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় কথাবার্তাকে আমল ও চরিত্রকে দ্বীন হিসেবে দেখে না, সে নিজের অজান্তেই ধ্বংস হয়ে যায়। (আল-জামে ১ : ৬১) বস্তুত যে ব্যক্তি কথাকে আমল মনে করে নিশ্চয়ই সে অল্প কথা বলে। (আয-জুহুদ-৩৮৩)

কথায় জান্নাত কথায় জাহান্নাম
কথার ভিত্তিতে মানুষের জান্নাত হবে, কথার ভিত্তিতে হবে জাহান্নাম। যে কথায় সৃষ্টি জীবের উপকার হয়, সে কথায় আল্লাহ খুশি হন। আর যে কথায় ক্ষতি হয়, তাতে আল্লাহ ক্রোধান্বিত হন। কুরআনে এসেছে- ‘তাদের অধিকাংশ শলাপরামর্শ (কথাবার্তা) ভালো নয়, কিন্তু যে কথাবার্তা দান-খয়রাত, সৎকাজ কিংবা মানুষের মধ্যে সন্ধি স্থাপনের জন্য হয় তা ভিন্ন। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এমনটি করে, আমি তাকে বিরাট সওয়াব দান করব।’ (সূরা নিসা-১১৪) নবীজী বলেছেন, ‘অনেক কথার কারণে আল্লাহ বান্দার সম্মান বৃদ্ধি করে এবং জান্নাত দেন এবং অনেক কথার কারণে বান্দাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়।’ (আল-জামে-৪০৭)

অধিক কথায় ফেতনা
কথার আধিক্য ব্যক্তিকে বিভিন্ন ফেতনা ও বিপদের সম্মুখীন করে। নিত্যনতুন সমস্যায় জর্জরিত করে। হজরত ইয়াজিদ ইবনে হাবিব রহ: বলেন, অধিক বাগ্মিতা ব্যক্তিকে ফেতনায় আক্রান্ত করে আর নীরব ও নিস্তব্ধতা ব্যক্তিকে রহমতের উপযুক্ত করে। (আল-জামে-৪৩৯) ফেতনা বিমুখ ব্যক্তিমাত্রই অধিক-কথন পরিহারকারী। জিহ্বার হিফাজতকারী সম্পর্কে নবীজী বলেছেন, ‘আল্লাহ যাকে দুটো জিনিসের খারাবি থেকে রক্ষা করবেন তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। জিহ্বা (কথাবার্তা) এবং লজ্জাস্থানের খারাবি।’ (বুখারি-৬৪৭৪)

বেশি কথায় বেশি ভুল
হজরত ইবনে ওয়াহাব রহ: বলেন, যে ব্যক্তির কথা বেশি তার ভুলও বেশি। (আল-জামে-৪৯৫) প্রকৃতপক্ষে ত্রুটিমুক্ত কথা বলতে অধিক জ্ঞানের প্রয়োজন। আর যখন কোনো ব্যক্তি প্রকৃত জ্ঞানের অধিকারী হয়, তখন তার কথা কমে যায়। বনি ইসরাইলের একজন তাপস বলেছেন, নারীর সৌন্দর্য লজ্জায় আর জ্ঞানীর সৌন্দর্য অল্প কথায়। (আয-জুহুদ-৩৮৩)

নীরবতা নিরাপদ
নবীজী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিরাপদ থাকতে পছন্দ করে, সে যেন চুপ থাকাকে আবশ্যকীয়ভাবে অবলম্বন করে। (আত-তারগিব : ৪ : ২৬) একবার হজরত আবুজার রা:-কে নবীজী বললেন, আমি তোমাকে এমন দুটো স্বভাবের কথা জানিয়ে দেবো? যা প্রকাশ সহজ তবে মিজানে ভারী।’ তিনি বললেন, হ্যাঁ। নবীজী বলেন, ‘সুন্দর ব্যবহার এবং চুপ থাকা।’ (আয-জুহুদ-৩৮৪)

সফলতার পূর্বশর্ত
সূরা মুমিনুনে সফলকাম মুমিনের গুণাবলির বর্ণনায় আল্লাহ বলেন- ‘যারা অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকে’ (৩)। নবীজী বলেছেন, ‘অনর্থক কথা-কাজ পরিহার করাই মুসলিম ব্যক্তির সৌন্দর্য।’ (তিরমিজি-২৩১৭)

যে কথা বলা উচিত
অনর্থক কথাবার্তায় সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। তবে সত্য কথায় চুপ থাকা অনুচিত। সাহাবি আবু জার রা: বলেছেন, সত্য কথায় চুপ থাকার থেকে বলা উত্তম। আর অনর্থক কথা বলার থেকে চুপ থাকা উত্তম। (আল-জামে-৪৫৭) নবীজী সা: বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই কথকের জিহ্বার পাশে আল্লাহর অবস্থান। অতএব, কথাবার্তার ক্ষেত্রে মানুষ যেন আল্লাহকে ভয় করে।’ (আল-জামে লি-ইবনে ওয়াহাব-৪৫০)

লেখক : খতিব, বায়তুল আজিম জামে মসজিদ, রংপুর

আরো পড়ুন : হজে যাওয়ার আগে যে ৫ কাজ করা জরুরি