অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার পর তেহরানও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। ইরান বলছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের কারণে অস্ট্রেলিয়া এই পদক্ষেপ নিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক স্তরে যেকোনো অনুপযুক্ত ও অযৌক্তিক পদক্ষেপের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ দাবি করেছেন, গত অক্টোবরে সিডনির একটি কোশার ক্যাফেতে আগুন দেওয়া ও ডিসেম্বরে মেলবোর্নের একটি সিনাগগে অগ্নিসংযোগের পেছনে ইরানের হাত ছিল। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তবে, তেহরান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, অস্ট্রেলিয়া ইসরায়েলকে সীমিত সমালোচনা করার ক্ষতিপূরণ দিতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফোয়াদ ইজাদি আলজাজিরাকে বলেন, বহিষ্কৃত রাষ্ট্রদূত আহমেদ সাদেঘি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তার সমর্থনে সোচ্চার ছিলেন, এটিই তাকে বহিষ্কারের মূল কারণ।
অস্ট্রেলিয়া ইরানের রাষ্ট্রদূত আহমেদ সাদেঘিকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে তাকে ও আরও তিন কর্মকর্তাকে সাত দিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া কোনো রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করলো।
অস্ট্রেলিয়া তেহরান থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকেও প্রত্যাহার করে নিয়েছে, ১৯৬৮ সালে খোলা দূতাবাসের কার্যক্রমও স্থগিত করেছে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওং বলেন, দুই দেশের মধ্যে কিছু কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা হবে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আলবানিজকে ‘দুর্বল রাজনীতিবিদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যিনি ইসরায়েলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এর কারণ ছিল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সমালোচনা। ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক তলানিতে যাওয়ার পরই ইরানের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ইজাদি মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ান সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ তারা ইসরায়েলের প্রতি তাদের সমর্থন নিয়ে জনগণের প্রশ্ন এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরোধিতা করার জন্য সরকারের ওপর চাপ নিয়ে চিন্তিত।