ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মানবিক সংকটের শঙ্কা

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে দুই হাজার ৮০০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে দেশটির দুর্গম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার ফলে বহু গ্রাম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। খবর স্কাই নিউজের।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, রোববার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১ টা ৪৭ মিনিটে কুনারে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদের কাছে, মাত্র আট কিলোমিটার গভীরে। এ ধরনের অগভীর ভূমিকম্প সাধারণত বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে।

প্রায় ২০ মিনিট পর একই প্রদেশে ৪.৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প ও পরে ৫.২ মাত্রার আরও একটি আফটারশক অনুভূত হয়। কুনার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, ভূমিকম্পে মাটির তৈরি বেশিরভাগ বাড়িঘর ধসে পড়েছে। দেশটির নুর গুল, সোকি, ওয়াটপুর, মানোগি ও চাপাদরে জেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। অনেক গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

আফগানিস্তানের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান জানিয়েছেন, অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জেলাগুলোতে উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানী কাবুল থেকে চিকিৎসা দলও সেখানে পৌঁছেছে। তবে, দুর্গম এলাকা হওয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।

আফগানিস্তানের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জরুরি সহায়তা প্রদান করছেন। অন্যদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক পোস্টে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মিশন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, চীন আফগানিস্তানের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুসারে এই দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

তবে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি সরকার উদ্ধার বা ত্রাণ কাজে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করেনি।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এই দুর্যোগকে একটি নিখুঁত ঝড় হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কারণ দেশটি এমনিতেই বহুবিধ সংকটের মুখোমুখি। তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে সীমিত সম্পদ রয়েছে ও এটি বিশ্বের দরিদ্রতম ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি।

কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, নারীদের প্রতি তালেবানের নীতির কারণে দাতা দেশগুলো থেকে তহবিল হ্রাস পেয়েছে। অক্সফামের প্রধান নির্বাহী হালিমা বেগম বলেছেন, আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার ভালোভাবে সুরক্ষিত না হওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানো খুব কঠিন, জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ঠেলে দিচ্ছে ভারত : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মানবিক সংকটের শঙ্কা

আপডেট সময় ০৯:০৭:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে দুই হাজার ৮০০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে দেশটির দুর্গম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার ফলে বহু গ্রাম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। খবর স্কাই নিউজের।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, রোববার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১ টা ৪৭ মিনিটে কুনারে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল নানগারহার প্রদেশের জালালাবাদের কাছে, মাত্র আট কিলোমিটার গভীরে। এ ধরনের অগভীর ভূমিকম্প সাধারণত বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে।

প্রায় ২০ মিনিট পর একই প্রদেশে ৪.৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প ও পরে ৫.২ মাত্রার আরও একটি আফটারশক অনুভূত হয়। কুনার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, ভূমিকম্পে মাটির তৈরি বেশিরভাগ বাড়িঘর ধসে পড়েছে। দেশটির নুর গুল, সোকি, ওয়াটপুর, মানোগি ও চাপাদরে জেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। অনেক গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

আফগানিস্তানের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান জানিয়েছেন, অনেক গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ও মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জেলাগুলোতে উদ্ধারকর্মীরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজধানী কাবুল থেকে চিকিৎসা দলও সেখানে পৌঁছেছে। তবে, দুর্গম এলাকা হওয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।

আফগানিস্তানের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জরুরি সহায়তা প্রদান করছেন। অন্যদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক পোস্টে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মিশন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, চীন আফগানিস্তানের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুসারে এই দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

তবে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি সরকার উদ্ধার বা ত্রাণ কাজে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করেনি।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এই দুর্যোগকে একটি নিখুঁত ঝড় হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কারণ দেশটি এমনিতেই বহুবিধ সংকটের মুখোমুখি। তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে সীমিত সম্পদ রয়েছে ও এটি বিশ্বের দরিদ্রতম ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি।

কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, নারীদের প্রতি তালেবানের নীতির কারণে দাতা দেশগুলো থেকে তহবিল হ্রাস পেয়েছে। অক্সফামের প্রধান নির্বাহী হালিমা বেগম বলেছেন, আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার ভালোভাবে সুরক্ষিত না হওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানো খুব কঠিন, জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ঠেলে দিচ্ছে ভারত : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ