ঢাকা ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরাইলি অবরোধ; অপুষ্টিতে ৬৬ শিশুর মৃত্যু

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান অবরোধ ও হামলার মধ্যে অপুষ্টির শিকার হয়ে কমপক্ষে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ ইসরাইলি অবরোধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই দখলদার ইসরাইলের অবরোধের মুখে সেখানে শিশুদের জন্য দুধ, পুষ্টিকর খাদ্য এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।

রোববার (২৯ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের এই অবরোধ একটি ‘যুদ্ধাপরাধ’। তারা বেসামরিক নাগরিকদের নির্মূল করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

দফতরটি ‘গাজার শিশুদের ওপর চলমান এই অপরাধ এবং শিশুদের দুর্ভোগের বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের লজ্জাজনক নীরবতার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ এই মানবিক বিপর্যয়ের জন্য শুধু ইসরাইলকেই নয়, বরং তার পশ্চিমা মিত্রদের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকেও দায়ী করেছে। একইসাথে, তারা জাতিসঙ্ঘকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে গাজার সব সীমান্তপথ খুলে দেয়া হয়।

এর আগে, জাতিসঙ্ঘের শিশু-বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে। চলতি বছরের মে মাসেই ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী অন্তত পাঁচ হাজার ১১৯ শিশুকে তীব্র অপুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে ভর্তি করা হয়েছে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, এটি গত এপ্রিল মাসের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৫০ শতাংশ বেশি। মূলত ফেব্রুয়ারিতে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল এবং এ সময় কিছু সহায়তা গাজায় প্রবেশ করেছিল।

ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক এদুয়ার বেইগবেদার বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৫০ দিনে ১৬ হাজার ৭৩৬ শিশু, অর্থাৎ দিনে গড়ে ১১২ জন শিশু অপুষ্টির চিকিৎসা পেয়েছে। অথচ, এদের প্রতিটি ঘটনাই ছিল প্রতিরোধযোগ্য। প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানি, পুষ্টি সবকিছুই সীমান্তে আটকে আছে। মানবসৃষ্ট সিদ্ধান্তের ফলেই এই মৃত্যুগুলো হচ্ছে। ইসরাইলকে অবিলম্বে সব সীমান্ত দিয়ে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে।’

এদিকে অবরোধের মধ্যেই শনিবার ইসরাইল গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়ে অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে ২০ জনই গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনী ওই এলাকায় দুটি বিমান হামলা চালিয়ে একাধিক আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে নয়টি শিশুও রয়েছে।

গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরো ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

গাজায় ইসরাইলি অবরোধ; অপুষ্টিতে ৬৬ শিশুর মৃত্যু

আপডেট সময় ১১:৫১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান অবরোধ ও হামলার মধ্যে অপুষ্টির শিকার হয়ে কমপক্ষে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ ইসরাইলি অবরোধের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই দখলদার ইসরাইলের অবরোধের মুখে সেখানে শিশুদের জন্য দুধ, পুষ্টিকর খাদ্য এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।

রোববার (২৯ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের এই অবরোধ একটি ‘যুদ্ধাপরাধ’। তারা বেসামরিক নাগরিকদের নির্মূল করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

দফতরটি ‘গাজার শিশুদের ওপর চলমান এই অপরাধ এবং শিশুদের দুর্ভোগের বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের লজ্জাজনক নীরবতার’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষ এই মানবিক বিপর্যয়ের জন্য শুধু ইসরাইলকেই নয়, বরং তার পশ্চিমা মিত্রদের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকেও দায়ী করেছে। একইসাথে, তারা জাতিসঙ্ঘকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে গাজার সব সীমান্তপথ খুলে দেয়া হয়।

এর আগে, জাতিসঙ্ঘের শিশু-বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে। চলতি বছরের মে মাসেই ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী অন্তত পাঁচ হাজার ১১৯ শিশুকে তীব্র অপুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে ভর্তি করা হয়েছে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, এটি গত এপ্রিল মাসের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৫০ শতাংশ বেশি। মূলত ফেব্রুয়ারিতে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল এবং এ সময় কিছু সহায়তা গাজায় প্রবেশ করেছিল।

ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক এদুয়ার বেইগবেদার বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৫০ দিনে ১৬ হাজার ৭৩৬ শিশু, অর্থাৎ দিনে গড়ে ১১২ জন শিশু অপুষ্টির চিকিৎসা পেয়েছে। অথচ, এদের প্রতিটি ঘটনাই ছিল প্রতিরোধযোগ্য। প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানি, পুষ্টি সবকিছুই সীমান্তে আটকে আছে। মানবসৃষ্ট সিদ্ধান্তের ফলেই এই মৃত্যুগুলো হচ্ছে। ইসরাইলকে অবিলম্বে সব সীমান্ত দিয়ে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে।’

এদিকে অবরোধের মধ্যেই শনিবার ইসরাইল গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়ে অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে ২০ জনই গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনী ওই এলাকায় দুটি বিমান হামলা চালিয়ে একাধিক আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে নয়টি শিশুও রয়েছে।

গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরো ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত