ঢাকা ১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ১১ আগস্ট ক্যানবেরায় এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন। ছবি: এএফপি

আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার পর এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটি। আজ সোমবার (১১ আগস্ট) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এ ঘোষণা দেন। খবর বিবিসির।

আলবানিজ জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণ করবে, সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে থাকবে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতার চক্র ভাঙতে এবং গাজায় চলমান সংঘাত, দুর্ভোগ ও দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটাতে মানবতার জন্য সর্বোত্তম পন্থা।”

গাজায় যুদ্ধ বন্ধের চাপের মুখে থাকা ইসরায়েল বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার থেকে গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে। ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া মানে তাদের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে বৈশ্বিক সমর্থন বাড়ছে।

আলবানিজ আরও জানান, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতের কোনো রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। গত দুই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে তা কাজে লাগাবে।”

গত রোববার (১০ আগস্ট) সিডনি হারবার ব্রিজে একটি প্রো-ফিলিস্তিন বিক্ষোভে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ। আদালতের অনুমতির পর এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে না, কারণ এতে হামাসকে পুরস্কৃত করা হবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, কার্যকর সরকার না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পরিকল্পনা করছে না।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করা দেশগুলোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “ইউরোপীয় দেশ ও অস্ট্রেলিয়া যে এই অন্ধগর্তে প্রবেশ করছে, তা হতাশাজনক এবং আসলে লজ্জাজনক। তারা জানে, মেলবোর্ন বা সিডনির পাশে যদি এমন ভয়াবহ হামলা ঘটত, তাহলে আপনারা অন্তত আমাদের মতোই পদক্ষেপ নিতেন।”

সম্প্রতি গাজা সিটি দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূতরা। তবে নেতানিয়াহু বলছেন, যুদ্ধ শেষ করার ‘সবচেয়ে ভালো উপায়’ এটি।

গত বছর স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যাতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি উৎসাহিত হয়। বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা রয়েছে, যা অংশগ্রহণের সুযোগ দেয় তবে ভোটাধিকারের সুযোগ দেয় না।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

জনপ্রিয় সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে অস্ট্রেলিয়া

আপডেট সময় ১১:৪২:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার পর এ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটি। আজ সোমবার (১১ আগস্ট) অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এ ঘোষণা দেন। খবর বিবিসির।

আলবানিজ জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা দেশটিকে নিরস্ত্রীকরণ করবে, সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে থাকবে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতার চক্র ভাঙতে এবং গাজায় চলমান সংঘাত, দুর্ভোগ ও দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটাতে মানবতার জন্য সর্বোত্তম পন্থা।”

গাজায় যুদ্ধ বন্ধের চাপের মুখে থাকা ইসরায়েল বলেছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার থেকে গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৭ জনে। ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে নিহত হয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া মানে তাদের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারে বৈশ্বিক সমর্থন বাড়ছে।

আলবানিজ আরও জানান, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতের কোনো রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। গত দুই সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে তা কাজে লাগাবে।”

গত রোববার (১০ আগস্ট) সিডনি হারবার ব্রিজে একটি প্রো-ফিলিস্তিন বিক্ষোভে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ। আদালতের অনুমতির পর এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে না, কারণ এতে হামাসকে পুরস্কৃত করা হবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, কার্যকর সরকার না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পরিকল্পনা করছে না।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করা দেশগুলোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, “ইউরোপীয় দেশ ও অস্ট্রেলিয়া যে এই অন্ধগর্তে প্রবেশ করছে, তা হতাশাজনক এবং আসলে লজ্জাজনক। তারা জানে, মেলবোর্ন বা সিডনির পাশে যদি এমন ভয়াবহ হামলা ঘটত, তাহলে আপনারা অন্তত আমাদের মতোই পদক্ষেপ নিতেন।”

সম্প্রতি গাজা সিটি দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছে জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূতরা। তবে নেতানিয়াহু বলছেন, যুদ্ধ শেষ করার ‘সবচেয়ে ভালো উপায়’ এটি।

গত বছর স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যাতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি উৎসাহিত হয়। বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা রয়েছে, যা অংশগ্রহণের সুযোগ দেয় তবে ভোটাধিকারের সুযোগ দেয় না।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত