অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা যে সময় বলেছেন, সে সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা দেখবেন সুন্দর পরিবেশে পিসফুল একটা নির্বাচন হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কোনো নির্বাচনের তুলনায় ভালো নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে। এটা সবার জন্য। কোনো প্রার্থী বলতে পারবেন না যে, তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) ময়নামতি অডিটোরিয়ামে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ল’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় দলগুলোর সঙ্গে বসে (এ বিষয়ে) সিদ্ধান্ত নেবে। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলমান। অনেক বিষয়ই ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। যেখানে এসব বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েক বছর লেগে যায়, কিন্তু আমরা তা স্বল্প সময় ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবো।’
তিনি বলেন, ‘আটটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সাতটি বিষয় নিয়ে কথাবার্তা চলমান। কিন্তু আমরা মনে করি, প্রত্যেকটি বিষয়েই একটা ভালো ফলাফল আসবে। এরপরই আমরা আশা করবো, জুলাই সনদে সবাই সই করবেন। বৃষ্টির মৌসুমের পরই দেখবেন বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে আনাচে-কানাচে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্ম ভোট দিতে পারেনি। সামনের নির্বাচন ঘিরে তরুণ প্রজন্মের অনেক আগ্রহ।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটা ঘটনার পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
গোপালগঞ্জ ইস্যুতে শফিকুল আলম বলেন, ‘গোপালগঞ্জের মানুষ এদেশেরই মানুষ। সরকার কারও ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। যারা আইন ভায়োলেট করেছে সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হবে না। যারা বলছে, গোপালগঞ্জে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, আমি তাদের বলবো, সাংবাদিকদের নিয়ে গোপালগঞ্জ ঘুরে আসুন। ওখানে কোনো কিছুই আইনের ব্যত্যয় ঘটছে না।’
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার কাজ করে যাচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র আসতে পারে।’
বিগত সরকারের সময় ‘আয়নাঘর’ তৈরি করে বিরোধী মত দমন করা হতো বলেও অভিযোগ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, আমরা চাই না ভবিষ্যতে আর কোনো ‘আয়নাঘর’ তৈরি হোক। এ প্রজন্ম সেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
দরিদ্রতা নিয়ে ইউনূস সরকারের অবস্থান তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, ‘একাত্তর এবং জুলাই বিপ্লবের পরও আমাদের প্রধান সমস্যা রয়ে গেছে দারিদ্র্য। ড. ইউনূস সরকারের লক্ষ্য হলো দারিদ্র্য জাদুঘরে পাঠানো। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’
‘দ্য নেক্সট ওয়েব’ প্রতিপাদ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্পিকার হিসেবে ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী।