আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাঈদ-মুগ্ধরা যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলেন, সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আবরার ফাহাদের দেখানো বাংলাদেশপন্থি পথ, ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী পথ, আগ্রাসন বিরোধী পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করছে। সেই পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল। আবরার থেকে আবু সাঈদ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে গত ১৬ বছরে যারা গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; আমরা সেসব শহীদ ও নির্যাতিত মানুষকে ধারণ করি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায় আমরা সেই শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করি।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে আবরার হত্যা একটি বড় ঘটনা ছিল জাতীয় রাজনীতিতে। আবরার ফাহাদের মৃত্যুর প্রতিবাদের আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছিল। আবরার ফাহাদের মৃত্যুর প্রতিবাদের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইটা আবার শুরু হয়েছিল। ‘দিল্লি না ঢাকা’ স্লোগান উঠেছিল।”
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে নিহত আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে পৌঁছান তারা। পরে ১টার দিকে তারা আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ও মা রোকেয়া খাতুনসহ স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপর পদযাত্রায় যোগ দিতে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন এনসিপির নেতাকর্মীরা। কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে পদযাত্রা শেষে পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর জেলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তারা।
জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার এবং নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার কুষ্টিয়ায় পথসভা ও পদযাত্রা করেন তারা। এর আগে সোমবার (৭ জুলাই) দিনগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কুষ্টিয়া শহরে পৌঁছান দলটির শীর্ষ নেতারা।
প্রচণ্ড বৃষ্টিকে উপক্ষো করেই কুষ্টিয়ার পদযাত্রা, আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত ও মতবিনিময় কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী এবং কেন্দ্রীয় সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস ছাড়াও এনসিপির অঙ্গসংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতাকর্মী এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
৩ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ গড়ার রূপরেখা ঘোষণা করা হবে : নাহিদ ইসলাম