ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জি এম কাদের রাতের আঁধার জোর করে চেয়ারম্যান হয়েছেন : চুন্নু

রাতের আঁধারে জোর করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বাক্ষর নিয়ে জি এম কাদের জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য অব্যাহতি পাওয়া দলটির মহাসচিব ও কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সদ্য অব্যাহতি পাওয়া দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমিও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলাম। স্বয়ং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন এরশাদ আমাকে সংবাদ সম্মেলন করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অথচ, জি এম কাদের রাতের আঁধারে চেয়ারম্যান হয়েছেন। এরশাদ সাহেব অসুস্থ ছিলেন, তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তখন আমরা এমনিতেই নানাভাবে জর্জরিত ছিলাম, তাই অনেক কথাই আমরা বলতে পারিনি।’

মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক পার্টির দায়িত্ব হস্তান্তর কখনো রাতের আঁধারে হয় না। আর সেটাই করেছেন জি এম কাদের। অথচ, জীবিত থাকাকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রুহুল আমিনকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে চাইলেও তিনি (রুহুল আমিন) নিতে চাননি।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার যে প্রেসিডিয়াম সভার কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ। তাই, আমরা এখনও স্বপদে আছি। গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, মহাসচিব চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাহী কমিটি প্রেসিডিয়াম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান ও আলোচনা বিষয় নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ, মহাসচিবই এসব করবেন। ২৮ জুন দেওয়া হয় চিঠি, তখনও আমরা প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বপদে ছিলাম। যেহেতু চেয়ারম্যানের সভার ডাকার এখতিয়ার নেই, তাই সিদ্ধান্তও অবৈধ। কাজেই আমরা এখনও স্বপদে বহাল আছি।’

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদেরকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা নাকি পার্টি ভাঙার চেষ্টা করেছি, কী করেছি আমরা সেটি বলা হয়নি। আমরা পার্টির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, আর্থিক স্বচ্ছতা ও ঐক্যবদ্ধতার কথা বলেছি। অপরাধ আমাদের এটাই।’

একই অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দলকে সুসংগঠিত করে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা বলেছিলাম, দলে অনেক বিভক্তি হয়েছে, সেগুলো ঠিক করে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। গত ২০ মে প্রেসিডেন্ট সভায় ২০ (ক) এর ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়। এই ধারার কারণে পার্টি শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ২৮ জুন কাউন্সিল করার শেষ ছিল, কিন্তু তা হয়নি। একটা দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে সেটি দেশের যৌক্তিক আন্দোলনে থাকতে পারে না।’

এ সময় রহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ৯ বছর দেশ শাসন করেছে। সে সময় উন্নয়ন, কল্যাণ ও মানুষের ভাগ্য বদলে কাজ করেছি আমরা। কিন্তু ৯০ এর পর থেকে আমরা সংগ্রাম করেছি। একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের ফলশ্রুতিতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। এগুলো কাজ এরশাদ সাহেবের ভাই হিসেবে জি এম কাদের কীভাবে করলেন এখনও চিন্তা করি। আমাদের হয়তো কোনো ভুলের কারণে এই নিষ্ঠুর মানুষের হাতে জাতীয় পার্টি পড়েছে।’

রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘মানুষ দলকে ক্ষমতায় আনতে দলকে সুসংগঠিত করে, তৃণমূলে নিয়ে যায়। এটাই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি। কিন্তু গত আট বছরে দলের নেতাকর্মীকে নিয়ে কোথাও কোনো সভা সমাবেশ করা হয়নি। ঢাকার কোনো গলিতে বসে, পত্রিকায় কিংবা রংপুরে গিয়ে একেকটা বক্তব্য দিয়ে দেশের মানুষকে আহত করেছেন, ব্যথিত করেছেন, দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।’

সাবেক এই মহাসচিব বলেন, আমরা আপনাকে (জি এম কাদের) ফেলে দিতে চাই না, আপনি আসেন আমরা আপনাকে সম্মান দেবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে চাই, কিন্তু দল ভাঙবে এমন রাজনীতি আমরা করব না। আমরা চিঠি পেয়েছি, এটি কোনো সুস্থ রাজনীতি হতে পারে না। এমনকি, প্রাথমিক সদস্য পদ পর্যন্ত আমাদের রাখেননি আপনি, এটি কোনো রাজনৈতিক আচরণ হতে পারে না।’

আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

জি এম কাদের রাতের আঁধার জোর করে চেয়ারম্যান হয়েছেন : চুন্নু

আপডেট সময় ০৬:১৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

রাতের আঁধারে জোর করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বাক্ষর নিয়ে জি এম কাদের জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য অব্যাহতি পাওয়া দলটির মহাসচিব ও কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সদ্য অব্যাহতি পাওয়া দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমিও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলাম। স্বয়ং দলের চেয়ারম্যান হুসেইন এরশাদ আমাকে সংবাদ সম্মেলন করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। অথচ, জি এম কাদের রাতের আঁধারে চেয়ারম্যান হয়েছেন। এরশাদ সাহেব অসুস্থ ছিলেন, তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তখন আমরা এমনিতেই নানাভাবে জর্জরিত ছিলাম, তাই অনেক কথাই আমরা বলতে পারিনি।’

মুজিবুল হক চুন্নু আরও বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক পার্টির দায়িত্ব হস্তান্তর কখনো রাতের আঁধারে হয় না। আর সেটাই করেছেন জি এম কাদের। অথচ, জীবিত থাকাকালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রুহুল আমিনকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিতে চাইলেও তিনি (রুহুল আমিন) নিতে চাননি।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার যে প্রেসিডিয়াম সভার কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অবৈধ। তাই, আমরা এখনও স্বপদে আছি। গঠনতন্ত্রে বলা হয়েছে, মহাসচিব চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নির্বাহী কমিটি প্রেসিডিয়াম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভা আহ্বান ও আলোচনা বিষয় নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ, মহাসচিবই এসব করবেন। ২৮ জুন দেওয়া হয় চিঠি, তখনও আমরা প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বপদে ছিলাম। যেহেতু চেয়ারম্যানের সভার ডাকার এখতিয়ার নেই, তাই সিদ্ধান্তও অবৈধ। কাজেই আমরা এখনও স্বপদে বহাল আছি।’

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদেরকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা নাকি পার্টি ভাঙার চেষ্টা করেছি, কী করেছি আমরা সেটি বলা হয়নি। আমরা পার্টির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন, আর্থিক স্বচ্ছতা ও ঐক্যবদ্ধতার কথা বলেছি। অপরাধ আমাদের এটাই।’

একই অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দলকে সুসংগঠিত করে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা বলেছিলাম, দলে অনেক বিভক্তি হয়েছে, সেগুলো ঠিক করে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। গত ২০ মে প্রেসিডেন্ট সভায় ২০ (ক) এর ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়। এই ধারার কারণে পার্টি শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত ২৮ জুন কাউন্সিল করার শেষ ছিল, কিন্তু তা হয়নি। একটা দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা না থাকলে সেটি দেশের যৌক্তিক আন্দোলনে থাকতে পারে না।’

এ সময় রহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ৯ বছর দেশ শাসন করেছে। সে সময় উন্নয়ন, কল্যাণ ও মানুষের ভাগ্য বদলে কাজ করেছি আমরা। কিন্তু ৯০ এর পর থেকে আমরা সংগ্রাম করেছি। একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের ফলশ্রুতিতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। এগুলো কাজ এরশাদ সাহেবের ভাই হিসেবে জি এম কাদের কীভাবে করলেন এখনও চিন্তা করি। আমাদের হয়তো কোনো ভুলের কারণে এই নিষ্ঠুর মানুষের হাতে জাতীয় পার্টি পড়েছে।’

রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘মানুষ দলকে ক্ষমতায় আনতে দলকে সুসংগঠিত করে, তৃণমূলে নিয়ে যায়। এটাই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি। কিন্তু গত আট বছরে দলের নেতাকর্মীকে নিয়ে কোথাও কোনো সভা সমাবেশ করা হয়নি। ঢাকার কোনো গলিতে বসে, পত্রিকায় কিংবা রংপুরে গিয়ে একেকটা বক্তব্য দিয়ে দেশের মানুষকে আহত করেছেন, ব্যথিত করেছেন, দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।’

সাবেক এই মহাসচিব বলেন, আমরা আপনাকে (জি এম কাদের) ফেলে দিতে চাই না, আপনি আসেন আমরা আপনাকে সম্মান দেবো। আমরা ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে চাই, কিন্তু দল ভাঙবে এমন রাজনীতি আমরা করব না। আমরা চিঠি পেয়েছি, এটি কোনো সুস্থ রাজনীতি হতে পারে না। এমনকি, প্রাথমিক সদস্য পদ পর্যন্ত আমাদের রাখেননি আপনি, এটি কোনো রাজনৈতিক আচরণ হতে পারে না।’

আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম