বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল সবসময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি চেয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যে, নির্বাচনের দাবি জানানোও যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার (২ মে) আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সভায় এই মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
পাঁচ আগস্টের পর রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নতুন ২৫টি দলকে স্বাগত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে দেশের স্বার্থে সকল দল এক হয়ে কাজ করবে, এমন প্রত্যাশা আমরা রাখি।
তারেক রহমান বলেন, বিরাজনীতিকরণ দেশের গণতন্ত্রের জন্য এক গভীর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন বিষয়ে কেন সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে? এর ফলে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সামনে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারেক রহমান প্রশ্ন করেন, সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে? তিনি আরও বলেন, যদি বর্তমান সরকার ব্যবস্থা না নেয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার অবশ্যই স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
ফ্যাসিবাদ রোধে কিতাবি সংস্কার যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। একমাত্র জবাবদিহিমূলক সরকারই দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস যেন কেউ না দেখায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে। তবে, রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা করলে তা দেশকে বিরাজনীতিকরণের দিকে ঠেলে দেবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের আদালতে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুটি অর্জন হল ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান। এই দুই অর্জনের মাধ্যমে আমরা যে বার্তা পেয়েছি তা হলো, বাংলাদেশ কখনোই দিল্লির তাবেদার রাষ্ট্র হতে পারে না, মন্তব্য করেন তিনি। পলাতক স্বৈরাচারের বিষয়ে তিনি বলেন, একসময় স্বৈরাচার দেশকে ভারতের তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সবসময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি চেয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যে, নির্বাচনের দাবি জানানোও যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বার্থের প্রশ্নে সকল রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক ও অভিন্ন। ব্লেইম গেম দিয়ে এ সরকারের দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নতুন যে সরকার গঠিত হবে, তারা পলাতক স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।