জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সীমান্ত হত্যা আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে এক পথসভায় তিনি একথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গত ১৬ বছর ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে গুম-খুন এবং নির্যাতনের রাজত্ব চালিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু আর নয়, এবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, সীমান্ত হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। বাংলাদেশের মানচিত্র, মাটি ও জনগণ রক্ষার দায়িত্ব দেশের ছাত্র, তরুণ ও যুবসমাজের কাঁধে। সেই দায়িত্ব নিয়েই এনসিপি মাঠে নেমেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের আধিপত্যবাদ আমাদের মানবিক মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব বার বার ক্ষুণ্ণ করেছে। পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে এ জাতিকে বার বার অবনমন করা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গত ৫৪ বছর ধরে নিরপরাধ মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। আজ চুয়াডাঙ্গার দর্শনার এক কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা শুনেছি- সাতদিন আগে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। সাতদিন পর লাশ ফেরত এসেছে।
এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, গত ৫৪ বছরে সীমান্তে হাজারের বেশি মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। যার মধ্যে চুয়াডাঙ্গায়ই দুই শতাধিক জেনেছি। গরু পাচারকারী কিংবা চোরাচালানি আখ্যা দিয়ে বিএসএফ নির্বিচারে নিরীহ কৃষক হত্যা করছে। অথচ গত ৫৪ বছরে কোনো সরকারই কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, যদি ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চায়, তাহলে সেই সম্পর্ক হতে হবে সমতা, ন্যায্যতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে। কেবল বাংলাদেশ নয়, ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষাও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। এটা ভারতকে বুঝতে হবে।
জুলাই বিপ্লব প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটি বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আজও দেশে চাঁদাবাজি, দখলদারত্ব ও রাজনৈতিক সংঘাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা ভয় পাই না, হিন্দু-মুসলিম, নারী-পুরুষ, ছাত্রজনতা সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়বে।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রধান সমন্বয়কারী খাজা আমিরুল বাশার বিপ্লব, ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলাম প্রমুখ।