ঢাকা ০১:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে মোংলা বন্দর

বিভিন্ন মামলা আর দুর্নীতিসহ নানাবিধ অভিযেগে আাত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা এখনও মোংলা বন্দরের পণ্য খালাশ ও পরিবহনের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পলাতক থাকা বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবত এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ  বিগত সরকারের কাছ থেকে দলীয় সুবিধা আদায়কারী কতিপয় ষ্টিভিডোরস ও হ্যান্ডলিং মালিকদের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও মোংলা বন্দরে একচেটিয়া প্রভাব তৈরি করে সরকারি খাদ্যশস্যসহ নানা ধরনের পণ্য বোঝাই খালাস কাজ করছেন। বর্তমানে তাদের ভয়ে অন্য নিরীহ সাধারণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। সম্প্রতি সাধারণ ব্যবসায়ীরা নৌ পরিবহন উপদেষ্টাসহ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়গলো লিখিতভাবে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অভিযোগের বিষয়গুলি নিয়ে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং মোংলা বন্দর ষ্টিভিডারিং শ্রমিক ঠিকাদার মেসার্স খালিদ ব্রাদার্স এন্ড কোম্পানির মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন গত ১৭ বছরে খুলনার সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের সঙ্গে বন্দরের পণ্য বোঝাই খালাসসহ পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুথানে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা এবং বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা রয়েছে। তিনি এখন আত্মগেহাপণে পলাতক থেকেও প্রভাব বিস্তার করে বন্দরের বার্থ অপারেটরের কাজ নিয়ন্ত্রণ করছেন। অভিযোগ উঠেছে, সে পলাতক থাকা সত্বেও খালিদ ব্রাদার্স নামক তার প্রতিষ্ঠান দেশ ট্রেডিং ও বার্থ ট্রেডিং সহ বেশ কয়েকজন আমদানিকারকের কাজ একতরফা ভাবে করে আসছে। এ ছাড়া ক্লিংকার, কয়লা, সারসহ নানা ধরনের আমদানীকৃত পণ্যর একটি বড় অংশ এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সবাইকে ম্যানেজ করে খালাস করে যাচ্ছে।  এ ব্যাপারে কোম্পানী মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন দাবি করেন, বর্তমানে তার নামে কোন মামলা নেই। এ ছাড়া তিনি বিগত সরকারের আমলে সরকার দলীয় প্রভাব বিস্তার নয়, নিজ যোগ্যতায় বন্দরে ব্যবসা করেছেন। এখন যারা বন্দরে কোন কাজ পাচ্ছেন না তারা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন।
এদিকে গত জুলাই আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের মিছিলে গুলি, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে বরিশালের সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াতের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি। কিন্তু খোকন সেরনিয়াবতেরমোংলঅ বন্দরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ এখনও বন্দরে দাপটের সঙ্গে কাজ করছে। এখন তার হয়ে মোংলা বন্দরে ষ্টিভিডোরিং ও হ্যান্ডলিং ব্যবসা পরিচালনা করছেন শ্যালক মোংলা বন্দর বার্থ ও শিপ অপারেটর এ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্ট মোস্তাক মিঠু। এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবত আত্মগোপণে থাকায় শ্যালক মোস্ত াক মিঠু এখন এখন আকিজ গ্রুপ, ম্যাংগো শিপিং লাইন্স এবং রেনু শিপিং আমদানিকারকগন বা সরকারি ভাবে যে সকল খাদ্য শস্য গম ও চাল বাংলাদশে আমদানি করা হয় এবং মোংলার নামে এলসি কৃত সকল গম ও চাল শেখ পরিবারের ক্ষমতার দাপটে তাদের ষ্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠান ‘ইউনিয়ন এন্টারইজ’ এর মাধ্যম খালাশ করে থাকে। যা বন্দররে বিধি বিধান ও নিয়ম শৃঙ্খলার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। তা ছাড়াও বিভিন্ন আমদানীকারক ও শিপিং এজেন্ট এর কাজ কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার জোরে একক ভাবে মেসার্স ইউনিয়ন এন্টাপ্রাইজ ষ্টিভিডোরিং কোম্পানরি লাইসেন্সে এ সম্পাদন করে আসছে।
এ বিষয়ে এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবতের বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তার শ্যালক ও কোম্পানীর বর্তমান পরিচালক মোস্তাক মিঠুকে কয়েকবার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। এরপর হোয়াটস অ্যাপে এ বিষয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাতে কোন সাড়া মেলেনি।
এ দিকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দররে আর এক মাফিয়া মেসার্স গ্রীণ এন্টারপ্রাইজরে মালিকের সন্তান এবং পরিচালনাকারী সামসুজ্জামান রাসেল ফ্যাসিবাদি সরকারের সময়ে চট্টগ্রাম ষ্টিভিডোরস এ্যাসোসয়িশেনরে সভাপতি এবং ৩ সদস্য এলোকশেন কমটিরি আহবায়ক ছিলেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই সামসুজ্জামান রাসেল বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর জিম্মিকারীদের অন্যতম হোতা ছিলেন। জুলাই বিপ্লবের পর গ্রীণ এন্টারপ্রাইজ এর চট্টগ্রামের অফিস ছাত্র জনতা পুড়িয়ে দেওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে থাকলেও মোংলা বন্দরে তার দেদারছে ব্যবসা চলছে। কয়েকটি বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের সাথে এক চেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা না গেলেও মোংলা অফিসের ম্যানেজার জিল্লুর রহমান বাবু এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে গত সপ্তাহে সাধারণ ব্যবসায়ীদের নৌ পরিবহন উপদেষ্টাসহ বন্দর চেয়ারম্যানকে দেওয়া অভিযোগ সমুহে আরো বলা হয়েছে, বিগত ১৭ বছররে শোষন নিপীড়ন নির্যাাতন গুম খুনের ভয়েতে কোন ষ্টিভিডোরস কোম্পানি এই প্রভাবশালী কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে মুখ খুলে কথা বলার সাহস পায়নি। এরা সে সময়ে ক্ষমতার দাপটে মোংলা বন্দরে এক চেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু বিগত সরকারের পতন হলেও এখন পর্যন্ত এই প্রভাবশালীদের ভয়েতে মোংলা বন্দররে সকল ষ্টিভিডোরিং কোম্পানি বাকরুদ্ধ বা প্রতিবন্ধী বোবার মতো অসহায় অবস্থায় রয়েছে। এসব ছাড়াও প্রভাবশালী কুচক্রী মহলটি তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে যে কোন সময় মোংলা বন্দরকে অচল করে দিয়ে দেশ জাতি ও বিশে^র কাছে র্বতমান সরকাররে ভাবর্মূতি ক্ষুন্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত আওয়ামী রিজমের এসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগহ সমুহ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে সরকারের শীর্ষ মহলে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
মোংলা থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সুবিকধাপ্রাপ্ত কোন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বন্দরে যাতে কোন ধরনের নাশকতা বা বিশৃংখা তৈরী করতে না পারে সে জন্য পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা কঠোর নজরদারী করছে। ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে পুলিশ অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় অভিযান চালিয়ে সরোয়ার হোসেন নামের বন্দরের জাহাঙ্গীর পুলের একজন শ্রমিক সর্দার ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা জানিয়ে বলেন, এসব ব্যাপারে ইতিমধ্যে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়েছে। বন্দরের ট্রাফিক পরিচালকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

৫ দফা দাবিতে প্রবাসী অধিকার পরিষদের স্মারকলিপি প্রদান

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

আওয়ামী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে মোংলা বন্দর

আপডেট সময় ০৬:০৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
বিভিন্ন মামলা আর দুর্নীতিসহ নানাবিধ অভিযেগে আাত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা এখনও মোংলা বন্দরের পণ্য খালাশ ও পরিবহনের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পলাতক থাকা বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবত এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ  বিগত সরকারের কাছ থেকে দলীয় সুবিধা আদায়কারী কতিপয় ষ্টিভিডোরস ও হ্যান্ডলিং মালিকদের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও মোংলা বন্দরে একচেটিয়া প্রভাব তৈরি করে সরকারি খাদ্যশস্যসহ নানা ধরনের পণ্য বোঝাই খালাস কাজ করছেন। বর্তমানে তাদের ভয়ে অন্য নিরীহ সাধারণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। সম্প্রতি সাধারণ ব্যবসায়ীরা নৌ পরিবহন উপদেষ্টাসহ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়গলো লিখিতভাবে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অভিযোগের বিষয়গুলি নিয়ে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং মোংলা বন্দর ষ্টিভিডারিং শ্রমিক ঠিকাদার মেসার্স খালিদ ব্রাদার্স এন্ড কোম্পানির মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন গত ১৭ বছরে খুলনার সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের সঙ্গে বন্দরের পণ্য বোঝাই খালাসসহ পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুথানে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা এবং বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা রয়েছে। তিনি এখন আত্মগেহাপণে পলাতক থেকেও প্রভাব বিস্তার করে বন্দরের বার্থ অপারেটরের কাজ নিয়ন্ত্রণ করছেন। অভিযোগ উঠেছে, সে পলাতক থাকা সত্বেও খালিদ ব্রাদার্স নামক তার প্রতিষ্ঠান দেশ ট্রেডিং ও বার্থ ট্রেডিং সহ বেশ কয়েকজন আমদানিকারকের কাজ একতরফা ভাবে করে আসছে। এ ছাড়া ক্লিংকার, কয়লা, সারসহ নানা ধরনের আমদানীকৃত পণ্যর একটি বড় অংশ এই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সবাইকে ম্যানেজ করে খালাস করে যাচ্ছে।  এ ব্যাপারে কোম্পানী মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন দাবি করেন, বর্তমানে তার নামে কোন মামলা নেই। এ ছাড়া তিনি বিগত সরকারের আমলে সরকার দলীয় প্রভাব বিস্তার নয়, নিজ যোগ্যতায় বন্দরে ব্যবসা করেছেন। এখন যারা বন্দরে কোন কাজ পাচ্ছেন না তারা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন।
এদিকে গত জুলাই আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের মিছিলে গুলি, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে বরিশালের সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াতের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি। কিন্তু খোকন সেরনিয়াবতেরমোংলঅ বন্দরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ এখনও বন্দরে দাপটের সঙ্গে কাজ করছে। এখন তার হয়ে মোংলা বন্দরে ষ্টিভিডোরিং ও হ্যান্ডলিং ব্যবসা পরিচালনা করছেন শ্যালক মোংলা বন্দর বার্থ ও শিপ অপারেটর এ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্ট মোস্তাক মিঠু। এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবত আত্মগোপণে থাকায় শ্যালক মোস্ত াক মিঠু এখন এখন আকিজ গ্রুপ, ম্যাংগো শিপিং লাইন্স এবং রেনু শিপিং আমদানিকারকগন বা সরকারি ভাবে যে সকল খাদ্য শস্য গম ও চাল বাংলাদশে আমদানি করা হয় এবং মোংলার নামে এলসি কৃত সকল গম ও চাল শেখ পরিবারের ক্ষমতার দাপটে তাদের ষ্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠান ‘ইউনিয়ন এন্টারইজ’ এর মাধ্যম খালাশ করে থাকে। যা বন্দররে বিধি বিধান ও নিয়ম শৃঙ্খলার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। তা ছাড়াও বিভিন্ন আমদানীকারক ও শিপিং এজেন্ট এর কাজ কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার জোরে একক ভাবে মেসার্স ইউনিয়ন এন্টাপ্রাইজ ষ্টিভিডোরিং কোম্পানরি লাইসেন্সে এ সম্পাদন করে আসছে।
এ বিষয়ে এ কে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে খোকন সেরনিয়াবতের বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তার শ্যালক ও কোম্পানীর বর্তমান পরিচালক মোস্তাক মিঠুকে কয়েকবার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। এরপর হোয়াটস অ্যাপে এ বিষয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তাতে কোন সাড়া মেলেনি।
এ দিকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দররে আর এক মাফিয়া মেসার্স গ্রীণ এন্টারপ্রাইজরে মালিকের সন্তান এবং পরিচালনাকারী সামসুজ্জামান রাসেল ফ্যাসিবাদি সরকারের সময়ে চট্টগ্রাম ষ্টিভিডোরস এ্যাসোসয়িশেনরে সভাপতি এবং ৩ সদস্য এলোকশেন কমটিরি আহবায়ক ছিলেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই সামসুজ্জামান রাসেল বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর জিম্মিকারীদের অন্যতম হোতা ছিলেন। জুলাই বিপ্লবের পর গ্রীণ এন্টারপ্রাইজ এর চট্টগ্রামের অফিস ছাত্র জনতা পুড়িয়ে দেওয়ার পর তিনি আত্মগোপনে থাকলেও মোংলা বন্দরে তার দেদারছে ব্যবসা চলছে। কয়েকটি বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপের সাথে এক চেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা না গেলেও মোংলা অফিসের ম্যানেজার জিল্লুর রহমান বাবু এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিকে গত সপ্তাহে সাধারণ ব্যবসায়ীদের নৌ পরিবহন উপদেষ্টাসহ বন্দর চেয়ারম্যানকে দেওয়া অভিযোগ সমুহে আরো বলা হয়েছে, বিগত ১৭ বছররে শোষন নিপীড়ন নির্যাাতন গুম খুনের ভয়েতে কোন ষ্টিভিডোরস কোম্পানি এই প্রভাবশালী কোম্পানীগুলোর বিরুদ্ধে মুখ খুলে কথা বলার সাহস পায়নি। এরা সে সময়ে ক্ষমতার দাপটে মোংলা বন্দরে এক চেটিয়া ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। কিন্তু বিগত সরকারের পতন হলেও এখন পর্যন্ত এই প্রভাবশালীদের ভয়েতে মোংলা বন্দররে সকল ষ্টিভিডোরিং কোম্পানি বাকরুদ্ধ বা প্রতিবন্ধী বোবার মতো অসহায় অবস্থায় রয়েছে। এসব ছাড়াও প্রভাবশালী কুচক্রী মহলটি তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে যে কোন সময় মোংলা বন্দরকে অচল করে দিয়ে দেশ জাতি ও বিশে^র কাছে র্বতমান সরকাররে ভাবর্মূতি ক্ষুন্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, বন্দর ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত আওয়ামী রিজমের এসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগহ সমুহ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে সরকারের শীর্ষ মহলে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
মোংলা থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের কাছ থেকে বিশেষ সুবিকধাপ্রাপ্ত কোন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বন্দরে যাতে কোন ধরনের নাশকতা বা বিশৃংখা তৈরী করতে না পারে সে জন্য পুলিশসহ আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা কঠোর নজরদারী করছে। ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে পুলিশ অপারেশন ডেভিল হান্টের আওতায় অভিযান চালিয়ে সরোয়ার হোসেন নামের বন্দরের জাহাঙ্গীর পুলের একজন শ্রমিক সর্দার ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা জানিয়ে বলেন, এসব ব্যাপারে ইতিমধ্যে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়েছে। বন্দরের ট্রাফিক পরিচালকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।