কিশোরগঞ্জ : সৈয়দ আলীউজ্জামাম মহসিন
সুজলা সুফলা শস্যশ্যামলা বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্যের লীলাভূমি কিশোরগঞ্জ হাওর অঞ্চল। কিশোরগঞ্জকে “উজান-ভাটির মিলিত ধারা, নদী-হাওর মাছে ভরা” বলা হলেও ধান উৎপাদনের আরেক নাম কিশোরগঞ্জ হাওর I
বছরের প্রায় অর্ধেক সময় ( কার্তিক থেকে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) জিরাতিরা নিজেদের উপকরণ বাঁশ,খড়,ছন দিয়ে তৈরি করা ছোট ছোট কুঁড়েঘরে মানবেতর জীবনযাপন করে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে।
লোকালয় থেকে বহু দূরে বিস্তীর্ণ হাওরে ধানখেতের মাঝখানে চোখে পড়ে এসব ছোট ছোট কুঁড়েঘর যেখানে গবাদিপশুর সাথেই গাদাগাদি করে রাত কাটান তারা।
ধান ঘরে তুলার সোনালী স্বপ্নে বিভোর এই জিরাতিরা প্রতিনিয়ত প্রকৃতি ও অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে দিন কাটান।
থাকেনা ভালো খাদ্যের যোগান বা পানীয় জল, নেই কোনো স্যানিটেশন ব্যবস্থা। আছে শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাতসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা।
জমি তৈরি থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই শেষ করে নতুন ধন সঙ্গে করে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে বাড়ি ফেরেন এই জিরাতিরা। ভালো ফলন হলে হাসি মুখে ভুলে যান পেছনের যুদ্ধ জয়ের কষ্ট ।
বছরের পর বছর নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এই খাদ্য সৈনিকদের খবর ক’জনইবা জানেন বা রাখেন।
হাওর ঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে আগাম বৃষ্টি হওয়াতে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে এবার। কোন রকম প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে না পারলে প্রায় ১২ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধান ঘরে তুলার সোনালী স্বপ্ন দেখছে জিরাতি কৃষকরা।
কৃষকরা জাানন হাওরের কৃষি মাঠে যোগাযোগর উন্নতি, ছয় মাসের জন্য খাদ্য পানি ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা গেলে তারা ধান উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে।