সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী, প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার (৪ মে) বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের জুনিয়র আইনজীবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। তিনি বলেন, ‘স্যার দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। জানাজা ও দাফনের বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের দুই ছেলে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইমরান আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী। দুজনই সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী।
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের পক্ষে আইনজীবী প্যানেলের প্রধান হিসেবে কাজ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১২টায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দেশত্যাগ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এরপর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন তিনি। বিদেশে থাকাকালীন তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন এবং আমার বাংলাদেশ পার্টিতে (এবি পার্টি) প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন। গত বছরের ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের পক্ষে ডিফেন্স টিমের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। যে টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন বর্তমান চিফ প্রসিকিউটরের দায়িত্বে থাকা আইনজীবী মুহাম্মদ তাজুল ইসলামও।
তার জন্ম ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮০ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত তিনি লন্ডনেই আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। দেশে ফিরে ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৪ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৯০ সালে তিনি দ্য ল’ কাউন্সেল নামে একটি আইনি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে হন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী।
লন্ডনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। তখন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বার্তায় বলেছিলেন, তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমরা আশা করি তার সঙ্গে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।
পরিস্থিতি এমন যেন নির্বাচনের দাবি জানানোটাও অপরাধ : তারেক রহমান