ঢাকা ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে যুগপৎ সঙ্গীদের সাথে আলোচনায় বিএনপি হামজার পর এবার আসছেন কানাডার সামিত সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের আহ্বান উপদেষ্টা আসিফের সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা : গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের কাছেও হার বাংলাদেশের; কঠিন সমীকরণে বিশ্বকাপ ভাগ্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হাসিনাসহ ১২ জনের নামে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন মুসলিম সংখ্যলঘুদের নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের প্রত্যাখ্যান সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন নয় : গোলাম পরওয়ার

অপসারণ আতঙ্কে সদর উপজেলার প্রধান শিক্ষকরা

মোঃ হামিদুর রহমান লিমন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রংপুর সদর  প্রায় সকল স্কুল কলেজ ও মাদরাসা প্রধানরা অপসারণ আতঙ্কে রয়েছেন। রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তন হওয়ার পর পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছেন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এরই মধ্যে দাবির মুখে চন্দনপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। পাগলাপীর স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়ে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শ্যামপুর, হরিদেবপুর ও সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নে আন্দোলন তুষের আগুনের মতো জ্বলছে। যে কোন মূহুর্তে বিস্ফোরণ হতে পারে।
উপজেলা মাধ্যমিক অফিস সূত্র মতে, রংপুর সদর ও সিটি মিলে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৬টি ও মাদরাসা রয়েছে ৩১টি। কলেজ ২৮টি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থী। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের প্রভাব খাটিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া টানা ১৫ বছর দল ক্ষমতায় থাকার কারণে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ কমিটির সভাপতির পদ দখলে রাখেন সরকারদলীয় ব্যক্তিরা। প্রভাব খাটিয়ে করেন ব্যাপক অনিয়ম। তবে বর্তমানে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বিলুপ্ত করায় এসব অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ভার এসে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের ওপর। অনিয়মে জড়িত প্রত্যেক শিক্ষকদের অপসারণ দাবি করছেন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
গত রবিবার রংপুর সদর উপজেলা চন্দনপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগে বিদ্যালয়টিতে তদন্তে গেলে দুপুর ১টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াহিদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় স্থান ত্যাগ করেন। তার মাথায় চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত, সুষ্ঠু বিচার ও অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীনের পদত্যাগের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা ও ছাত্র সমর্থনকারীগণ। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাগলাপীর বন্দরে মানববন্ধন ও রংপুর দিনাজপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এ আল্টিমেটাম দেয় তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলের খেলার মাঠ চালু ও কলেজটিকে ডিগ্রি কলেজে করার দাবিও জানান। দাবি মানা না হলে আরো বড় কর্মসূচী দেয়ার হুশিয়ারী দেয় শিক্ষার্থীরা।
পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তির ১৪টি অভিযোগের বিবরণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।
মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আফতাবুর রহমান বলেন, যদি কোন স্কুলের অনিয়ম থাকে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে হবে।
সদরের ইউএনও নাইম হাসান খান যুগের আলোকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ও মাদ্রাসা প্রধানদের নিয়ে আলোচনা করেছি।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

অপসারণ আতঙ্কে সদর উপজেলার প্রধান শিক্ষকরা

আপডেট সময় ০৯:৫৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মোঃ হামিদুর রহমান লিমন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রংপুর সদর  প্রায় সকল স্কুল কলেজ ও মাদরাসা প্রধানরা অপসারণ আতঙ্কে রয়েছেন। রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তন হওয়ার পর পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছেন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
এরই মধ্যে দাবির মুখে চন্দনপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। পাগলাপীর স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়ে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শ্যামপুর, হরিদেবপুর ও সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নে আন্দোলন তুষের আগুনের মতো জ্বলছে। যে কোন মূহুর্তে বিস্ফোরণ হতে পারে।
উপজেলা মাধ্যমিক অফিস সূত্র মতে, রংপুর সদর ও সিটি মিলে মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭৬টি ও মাদরাসা রয়েছে ৩১টি। কলেজ ২৮টি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে প্রায় ২ লাখ শিক্ষার্থী। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলের প্রভাব খাটিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া টানা ১৫ বছর দল ক্ষমতায় থাকার কারণে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ কমিটির সভাপতির পদ দখলে রাখেন সরকারদলীয় ব্যক্তিরা। প্রভাব খাটিয়ে করেন ব্যাপক অনিয়ম। তবে বর্তমানে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বিলুপ্ত করায় এসব অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ভার এসে পড়েছে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের ওপর। অনিয়মে জড়িত প্রত্যেক শিক্ষকদের অপসারণ দাবি করছেন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
গত রবিবার রংপুর সদর উপজেলা চন্দনপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগে বিদ্যালয়টিতে তদন্তে গেলে দুপুর ১টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াহিদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় স্থান ত্যাগ করেন। তার মাথায় চারটি সেলাই দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত, সুষ্ঠু বিচার ও অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীনের পদত্যাগের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা ও ছাত্র সমর্থনকারীগণ। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাগলাপীর বন্দরে মানববন্ধন ও রংপুর দিনাজপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে এ আল্টিমেটাম দেয় তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলের খেলার মাঠ চালু ও কলেজটিকে ডিগ্রি কলেজে করার দাবিও জানান। দাবি মানা না হলে আরো বড় কর্মসূচী দেয়ার হুশিয়ারী দেয় শিক্ষার্থীরা।
পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক সভাপতি ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তির ১৪টি অভিযোগের বিবরণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।
মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার আফতাবুর রহমান বলেন, যদি কোন স্কুলের অনিয়ম থাকে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে হবে।
সদরের ইউএনও নাইম হাসান খান যুগের আলোকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ও মাদ্রাসা প্রধানদের নিয়ে আলোচনা করেছি।
আরো পড়ুন : পাগলাপীর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম