৭১’র চেতনায় ফুটেছে যে ফুল
প্রাকৃতজ শামিমরুমি টিটন
দূর বহুদূর দিগন্ত প্রসারিত অগাধ অকুল সমুদ্দুর!
বঙ্গোপসাগরের কোলে যে উর্বী বদ্বীপ বাংলাদেশের বুক,
যে তারুণ্যের তোড়ে আকাশ ছুঁয়েছে মহি মহান একাত্তর
সে ঐক্যের সুর; যেন মহাবিশ্বের মাঝে নক্ষত্রের ছায়ালোক!
সবিস্ময়ে দেখে মা-জননী বাংলাদেশ নতুন প্রজন্মের মুখ
দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠায় বুক চিতিয়ে ধরে সাঈদের বুক।
৭১’র চেতনায় ফুটেছে যে ফুল-এ সৌরভে মুগ্ধ ব্যাকুল
সুভাষিত সত্য মা গো, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবে স্বাধীনতার সুখ!
জেগেছে নবীন যৌবন, আত্মত্যাগী বীর সত্য নিষ্পাপ নির্ভীক,
যুবক-যুবতী প্রেমিক ভেদাভেদহীন—সর্ব অসম্প্রদায়িক-
বৈষম্যবিরোধী সবে—ছাত্র-জনতা মিলে ভুলে গেছে রাতদিন
রক্তে লেগেছে আগুন! চাই ন্যায্য অধিকার-হই মুক্ত-স্বাধীন।
আসে প্রত্যাশিত চির সত্যের দিন!-কর্মফলের পরিণতি-হু!
যবে নষ্ট চিন্তায় মন-মগজে পচা পুঁজ, পদলেহী চেটে খায়—
স্বেচ্ছাচারী ঘোগে,-স্বৈরাচারি নির্যাতনে চুষে রাজকীর দম্ভ-ইগু,
যবে মিথ্যা-কুফরে ঢেকে ফেলে সত্য মানবিক চেতনার রুহু!
ঠিক তখন, সত্য আসে-উলঙ্গ হয়ে আসে-অলংঘ্য পরিণতি
কর্মফল হাতে, ল্যাংটা শিশুটির মতো হাসে! মানতেই হয়! হা
অনিবার্য বিচার-সত্যের জয় মিথ্যার লয়-ভুয়া ফ্যাসিবাদ
ধ্বংস হয় স্বৈরশাসন। বিশ্ব দেখে নতুন বাংলাদেশের রূপ
মুক্তিকামী মানুষ লিখে রক্ত-শিরায় পবিত্র ওহির স্বরূপ!
২৪’র বুকে যাঁরা এঁকেছে পুত রক্ত দিয়ে সুমহান জুলাই!
তাঁরা জাতীয় বীর, পথ-প্রদর্শক-নতুন বাংলাদেশ গড়ার
শহিদের রক্তে লেখা সাম্য-সম মানবিক বাংলাদেশ সবার।
মম বিশ্বভূমে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়ায় মহী একুশ একাত্তর!
বলব কী আর, বেদনার ভিসুভিয়াস জ্বলে বুকের ভিতর
ধ্বংস বেশুমার! নির্বিচারে লুটপাট-গড়ে দুর্নীতির পাহাড়
কত রূপে -কাণ্ড! পুড়ছে সূর্যের মতো অবিরত দিবারাত;
এখনো ঘোর তমশায়, অন্ধ-রাতে ডাকে পুংস শৃগাল কুকুর
কলহ-বিবাদে মাতে উল্টা-বাদুর-ঠকে মেহনতি-মজদুর।
আবার ফিরেছে মা, সত্য অমলিন একুশ একাত্তরের ঋণ
চির কবিতার দিন, কবিদের জাগরণে লিখে মুক্ত স্বাধীন
প্রত্যাশিত এ-দিন, প্রেমিক-প্রেমিকার বুকে ভালোবাসায় লীন!
লিখে ত্রিলোক নিশিভোর স্বপ্ন-আশা-প্রেমে শান্তির প্রত্যাশা যত
এসো তরুণ নবীন, যৌবনে পরো প্রিয় দেশপ্রেমিকের মালা
আদি-অন্তে প্রেমের সত্য-—কবি বিস্ময়কর-অক্ষত ধ্রুব তারা!
লাল-সবুজের পতাকা আজ কবিদের কলমের মাথায় পরা
যথার্থে বাকস্বাধীনতা-কাব্য-কবির ভুবনে বাংলাদেশ লেখা,
রুখে দিয়েছে অনাচার, তরুণ যৌবন বেগ দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ!
কিন্তু লো, ট্রিকি-ট্যাগে যারা নষ্ট করে ভ্রূণ উর্বর ফসলি জমি,
আপনার বিবেক বিধ্বংসকারী খুনি, ভ্রষ্টদেরে আমরা চিনি!
ডাস্টবিনে পড়ে থাকে বারোয়ারি বায়াস, বুলশিটে এঁটো সংবাদ।
প্রিয় মাতৃভূমির বুক আজ ক্ষত-বিক্ষত, সারাটা অঙ্গে রোগ
মাৎস্যন্যায় ঘটেছে!-কী শুনি কী মানিনা, মূর্খ্য-ভোদাই জানি না!
এসো মেধা প্রজ্ঞা জ্ঞানী, মিলমিশে আজ দেশটাকে গঠন করি
তথৈব সবিশেষ-অর্থনীতি-রাজনীতি, শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি
অনন্য উচ্চতায় তুলে ধরি বাংলাদেশ, থাকবে না কোনো দুঃখী
সহনশীল আচরণে ধৈর্য-বিনয়-ত্যাগে-ফিরে আসে সত্য-শান্তি।
কিন্তু রে, চুপে-গুপে কথা কয় ফিসফিস শয়তান, থু ধোকাবাজ!
মানি মানুষের সত্য-প্রোথিত অন্তরে খুদা-স্রষ্টা-সৃষ্টি-খোদা
পথ দেখাবে আমার সত্য, যেমন পবিত্র দেশের সংবিধান,
চিন্তাশীল গবেষণা-বহুমাত্রিক জ্ঞান-সৃষ্টিশীল সঞ্জননে—
তবু নতুন আসুক, মা-জননী বাংলাদেশ বর্ণে বর্ণে সাজুক
প্রাণ-পৃথিবীর মতো মায়ের কোলে ভূমিষ্ঠ শিশুটি হাসুক।
আরো পড়ুন : আল মাহমুদ দীর্ঘ হয়ে ওঠে