ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরুষের জন্যও পর্দা জরুরি

  • ইসলাম ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৩৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • 22

পর্দা ইসলামের একটি ফরজ বিধান। নারীদের জন্য যেমন পর্দা জরুরি, পুরুষদের জন্যও পর্দা জরুরি। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে প্রথম পুরুষদের পর্দার নির্দেশ দিয়েছেন, তারপর নারীদের পর্দার নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে পুরুষ এবং নারীর পর্দার ধরনে যে কিছুটা পার্থক্য আছে তাও কোরআনের নির্দেশনায় স্পষ্ট। পুরুষদের আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করতে এবং চরিত্রের হেফাজত করতে আর নারীদের নির্দেশ দিয়েছেন দৃষ্টি সংযত করার পাশাপাশি নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্য ঢেকে রাখতে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, মুমিন পুরুষদের বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা নুর: ৩০, ৩১)

আয়াতে পুরুষের প্রতি যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা থেকে বোঝা যায় পুরুষের জন্য নিজের চরিত্র হেফাজতের পাশাপাশি নিজের দৃষ্টির হেফাজত করা অর্থাৎ অন্যায় দৃষ্টিপাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা ফরজ। গায়রে মাহরাম কোনো নারীর শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতি ইচ্ছাকৃত দৃষ্টিপাত করা, তাকিয়ে থাকা পুরুষের জন্য হারাম। ভুলক্রমে দৃষ্টি পড়ে গেলে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সাথে সাথে দৃষ্টি নত করতে হবে। ভুলক্রমে দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর দৃষ্টি না সরিয়ে দেখতে থাকা বা আবার তাকানো গুনাহের কাজ।

বুরায়দা ইবনে আল-হাসিব (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (স.) আলীকে (রা.) বলেন, হে আলী! দৃষ্টির পর দৃষ্টি ফেলো না। অনিচ্ছাকৃত যে দৃষ্টি পড়ে এর জন্য তুমি ক্ষমা পাবে। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টির জন্য ক্ষমা পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ: ১/২৯২)

চোখের পর্দা রক্ষা না করাকে হাদিসে চোখের যিনা বা ব্যভিচার বলা হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, দুই চোখ জিনা করে, চোখের জিনা হলো হারাম দৃষ্টিপাত। (সহিহ বুখারি: ৬২৪৩) আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, নবিজি (সা.) আল্লাহ তাআলা থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টি ইবলিসের বিষাক্ত বাণ বিশেষ, যে আমার ভয়ে তা ছেড়ে দেবে, আমি তাকে এমন ঈমান দান করবো যার সুমিষ্ট স্বাদ সে অন্তরে অনুভব করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৪/৩১৩)

সুতরাং চোখের পর্দার বিষয়টিকে কোনোভাবেই কম গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ নেই। অন্যায় দৃষ্টিপাত এক প্রকার ব্যাভিচার এবং শয়তানের অস্ত্র যা মানুষকে আরও বড় গুনাহের দিকে নিয়ে যায়, ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে চোখের পর্দা রক্ষা করার তওফিক দিন।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

পুরুষের জন্যও পর্দা জরুরি

আপডেট সময় ১০:৩৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

পর্দা ইসলামের একটি ফরজ বিধান। নারীদের জন্য যেমন পর্দা জরুরি, পুরুষদের জন্যও পর্দা জরুরি। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে প্রথম পুরুষদের পর্দার নির্দেশ দিয়েছেন, তারপর নারীদের পর্দার নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে পুরুষ এবং নারীর পর্দার ধরনে যে কিছুটা পার্থক্য আছে তাও কোরআনের নির্দেশনায় স্পষ্ট। পুরুষদের আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত করতে এবং চরিত্রের হেফাজত করতে আর নারীদের নির্দেশ দিয়েছেন দৃষ্টি সংযত করার পাশাপাশি নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্য ঢেকে রাখতে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, মুমিন পুরুষদের বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা নুর: ৩০, ৩১)

আয়াতে পুরুষের প্রতি যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা থেকে বোঝা যায় পুরুষের জন্য নিজের চরিত্র হেফাজতের পাশাপাশি নিজের দৃষ্টির হেফাজত করা অর্থাৎ অন্যায় দৃষ্টিপাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা ফরজ। গায়রে মাহরাম কোনো নারীর শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতি ইচ্ছাকৃত দৃষ্টিপাত করা, তাকিয়ে থাকা পুরুষের জন্য হারাম। ভুলক্রমে দৃষ্টি পড়ে গেলে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী সাথে সাথে দৃষ্টি নত করতে হবে। ভুলক্রমে দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর দৃষ্টি না সরিয়ে দেখতে থাকা বা আবার তাকানো গুনাহের কাজ।

বুরায়দা ইবনে আল-হাসিব (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (স.) আলীকে (রা.) বলেন, হে আলী! দৃষ্টির পর দৃষ্টি ফেলো না। অনিচ্ছাকৃত যে দৃষ্টি পড়ে এর জন্য তুমি ক্ষমা পাবে। কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টির জন্য ক্ষমা পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ: ১/২৯২)

চোখের পর্দা রক্ষা না করাকে হাদিসে চোখের যিনা বা ব্যভিচার বলা হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, দুই চোখ জিনা করে, চোখের জিনা হলো হারাম দৃষ্টিপাত। (সহিহ বুখারি: ৬২৪৩) আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, নবিজি (সা.) আল্লাহ তাআলা থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টি ইবলিসের বিষাক্ত বাণ বিশেষ, যে আমার ভয়ে তা ছেড়ে দেবে, আমি তাকে এমন ঈমান দান করবো যার সুমিষ্ট স্বাদ সে অন্তরে অনুভব করবে। (মুসতাদরাকে হাকেম: ৪/৩১৩)

সুতরাং চোখের পর্দার বিষয়টিকে কোনোভাবেই কম গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ নেই। অন্যায় দৃষ্টিপাত এক প্রকার ব্যাভিচার এবং শয়তানের অস্ত্র যা মানুষকে আরও বড় গুনাহের দিকে নিয়ে যায়, ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে চোখের পর্দা রক্ষা করার তওফিক দিন।