ঢাকা ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও কুমিল্লায় গাড়িচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আন্তরিক নয় রাশিয়া : জেলেনস্কি দুই ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগা চ্যাম্পিয়ন হলো বার্সেলোনা গাজায় ইসরায়েলি হামলা একদিনে ১৪৩ জন নিহত, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার আন্দোলনে বন্ধ ঢাকার ব্যস্ত সড়ক, তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী সাম্য হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে : উপদেষ্টা আসিফ ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর, গাজায় আরও আগ্রাসী ইসরায়েল, একদিনে প্রাণহানি ৮৪ গুড়িয়ে দেয়া হলো ভারতের উত্তর প্রদেশের ৩০০ মসজিদ-মাদরাসা তিন দফা দাবি আদায়ে জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে

ইউক্রেনের সাথে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের প্রতি সহায়তার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (৫ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াল্টজ বলেন, ‘আমরা কিছুটা পিছু হটেছি।’ তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্কের সব দিক পর্যালোচনা করছে।

এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক টেলিভিশন ভাষণে জানিয়েছেন, ইউরোপীয় সামরিক প্রধানদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্যারিসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পাশে থাকবে। তবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, যদি তা না হয়।’

ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, ইউরোপ একটি ‘নতুন যুগে’ প্রবেশ করেছে। তিনি ইউরোপীয় নেতাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানান। ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স, ইউক্রেনসহ অন্যান্য দেশ মিলে একটি টেকসই শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের প্রথম দিক থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করে আসছিল। তবে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত আলোচনার পরপরই গত সোমবার মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়। সেই বৈঠকে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ট্রাম্প তাকে বেরিয়ে যেতে বলেন।

তবে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি স্থগিতকরণ পুরোপুরি নাকি আংশিক এবং এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা স্পষ্ট নয়।

সিআইএ পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনের শান্তি আলোচনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘আসুন কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেই, আপনাকে এই বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিতে চাই।’

জন র‍্যাটক্লিফ আরও বলেন, জেলেনস্কি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে জানিয়েছেন তিনি শান্তির জন্য প্রস্তুত। র‍্যাটক্লিফ যোগ করেন, ‘সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তার ক্ষেত্রে এই বিরতির ফলে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং এটি শীঘ্রই প্রত্যাহার করা হবে।’

ওয়াল্টজও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আরও নমনীয় মনোভাবের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, শান্তি আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হলে এবং কিছু আস্থা তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া গেলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সামরিক সহায়তা স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়নি, বরং ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হচ্ছে।

ইউক্রেন ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এই সহায়তা স্থগিত হলে যুদ্ধক্ষেত্রে তা বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলগত ও সামরিক সক্ষমতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যের ওপর নির্ভর করে ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও হামলা পরিকল্পনা করে থাকে।

সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত সিআইএ কর্মকর্তা মিক মালরয় বিবিসিকে জানান, গোয়েন্দা তথ্য বন্ধ হলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ দুর্বল হয়ে পড়বে।

মিক মালরয় আরও বলেন, ‘আমাদের ইউরোপীয় মিত্রদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সক্ষমতা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘এটি রাশিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে আরও আগ্রাসী হতে উৎসাহিত করবে এবং তারা ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলের প্রচেষ্টা আরও বাড়াবে।’

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ইউক্রেনের সাথে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ১২:১৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের প্রতি সহায়তার ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (৫ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ নিশ্চিত করেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াল্টজ বলেন, ‘আমরা কিছুটা পিছু হটেছি।’ তিনি জানান, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্কের সব দিক পর্যালোচনা করছে।

এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক টেলিভিশন ভাষণে জানিয়েছেন, ইউরোপীয় সামরিক প্রধানদের নিয়ে আগামী সপ্তাহে প্যারিসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পাশে থাকবে। তবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, যদি তা না হয়।’

ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, ইউরোপ একটি ‘নতুন যুগে’ প্রবেশ করেছে। তিনি ইউরোপীয় নেতাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানান। ম্যাক্রোঁ জানান, ফ্রান্স, ইউক্রেনসহ অন্যান্য দেশ মিলে একটি টেকসই শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের প্রথম দিক থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করে আসছিল। তবে ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে উত্তপ্ত আলোচনার পরপরই গত সোমবার মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করা হয়। সেই বৈঠকে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ট্রাম্প তাকে বেরিয়ে যেতে বলেন।

তবে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি স্থগিতকরণ পুরোপুরি নাকি আংশিক এবং এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা স্পষ্ট নয়।

সিআইএ পরিচালক জন র‍্যাটক্লিফ ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইউক্রেনের শান্তি আলোচনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘আসুন কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেই, আপনাকে এই বিষয়ে চিন্তা করার সুযোগ দিতে চাই।’

জন র‍্যাটক্লিফ আরও বলেন, জেলেনস্কি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে জানিয়েছেন তিনি শান্তির জন্য প্রস্তুত। র‍্যাটক্লিফ যোগ করেন, ‘সামরিক ও গোয়েন্দা সহায়তার ক্ষেত্রে এই বিরতির ফলে আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং এটি শীঘ্রই প্রত্যাহার করা হবে।’

ওয়াল্টজও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে আরও নমনীয় মনোভাবের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, শান্তি আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হলে এবং কিছু আস্থা তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া গেলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই স্থগিতাদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, সামরিক সহায়তা স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়নি, বরং ‘পুনর্বিবেচনা’ করা হচ্ছে।

ইউক্রেন ২০২২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। এই সহায়তা স্থগিত হলে যুদ্ধক্ষেত্রে তা বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে কৌশলগত ও সামরিক সক্ষমতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যের ওপর নির্ভর করে ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও হামলা পরিকল্পনা করে থাকে।

সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত সিআইএ কর্মকর্তা মিক মালরয় বিবিসিকে জানান, গোয়েন্দা তথ্য বন্ধ হলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ দুর্বল হয়ে পড়বে।

মিক মালরয় আরও বলেন, ‘আমাদের ইউরোপীয় মিত্রদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সক্ষমতা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘এটি রাশিয়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে আরও আগ্রাসী হতে উৎসাহিত করবে এবং তারা ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলের প্রচেষ্টা আরও বাড়াবে।’