ঢাকা ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মমতার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের সাধু-সন্তদের একাংশ

লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা ব্যানার্জী দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন সন্ন্যাসীর রাজনীতির সাথে সম্পর্ক নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সাধু-সন্তরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

সনাতন সংসদ নামে সাধু-সন্তদের একটি সঙ্ঘের সহ -সভাপতি সর্বানন্দ মহারাজ বিবিসিকে বলেছেন, “সেবামূলক কাজ করতে সংসার ছেড়ে এসে যে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন অপমানিত হতে হবে, তা কল্পনাও করি নি।”

মঙ্গলবার সাধু-সন্তদের একটি প্রভাবশালী সংগঠন ঘোষণা করেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ২৪শে মে কয়েকশো সন্ন্যাসী খালি পায় কলকাতার রাস্তায় নামবেন তারা।

ভোটের প্রচারে গিয়ে দিন তিনেক আগে মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন যে, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েকজন সন্ন্যাসী বিজেপিকে সহায়তা করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

তৃণমূল নেত্রীর এই মন্তব্যের পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে পুরো বিজেপি নেতৃত্বই মমতা ব্যানার্জীকে পাল্টা আক্রমণ করতে শুরু করেছেন।

মমতা ব্যানার্জীর ওই একটা মন্তব্য ভোটের প্রচারে বিজেপির হাতে নতুন করে মেরুকরণের অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কী বলেছিলেন মমতা?
গত শনিবার এক নির্বাচনী সভায় মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন, “বহরমপুরে (মুর্শিদাবাদের জেলা সদর) একজন মহারাজ আছেন। তার ব্যাপারে অনেক দিন ধরে শুনছি। কার্তিক মহারাজ বলেন যে তিনি বুথে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেবেন না। আমি তাকে সন্ন্যাসী বলে গণ্যই করি না কারণ তিনি সরাসরি রাজনীতি করছেন এবং দেশের সর্বনাশ করছেন। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতি আমার খুব শ্রদ্ধা আছে। আমি যে সব প্রতিষ্ঠানকে শ্রদ্ধা করি, সেই তালিকায় এই সঙ্ঘ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে।“

তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রসঙ্গও তোলেন সেদিন।

তিনি বলেছিলেন, “কেন সন্ন্যাসীরা এর মধ্যে ঢুকছেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই শ্রদ্ধা করে। আমি জানি রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা ভোট দেন না। কিন্তু আপনারা কেন অন্যদের বলছেন বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথা? সবাই নয়, কিন্তু কয়েকজন (সন্ন্যাসী) এটা করছেন।“

স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আর ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী প্রণবানন্দ।

দুটি প্রতিষ্ঠানই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। এরা ধর্মীয় সংগঠন হলেও সেবামূলক কাজ, শিক্ষার প্রসার আর বিপর্যয়ের সময়ে ত্রাণ সহায়তার কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির গবেষক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান হিসাবে রাজনীতির কোনও যোগ না থাকলেও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধীন ‘হিন্দু মিলন মন্দির’গুলিকে নিয়মিতই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো আরএসএসের সংগঠনগুলি কাজে লাগিয়ে থাকে।

আরো পড়ুন : ঝড়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানে ঝাঁকুনি; নিহত-১, আহত-৩০

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মমতার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের সাধু-সন্তদের একাংশ

আপডেট সময় ১২:৪৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪

লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা ব্যানার্জী দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন সন্ন্যাসীর রাজনীতির সাথে সম্পর্ক নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সাধু-সন্তরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

সনাতন সংসদ নামে সাধু-সন্তদের একটি সঙ্ঘের সহ -সভাপতি সর্বানন্দ মহারাজ বিবিসিকে বলেছেন, “সেবামূলক কাজ করতে সংসার ছেড়ে এসে যে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন অপমানিত হতে হবে, তা কল্পনাও করি নি।”

মঙ্গলবার সাধু-সন্তদের একটি প্রভাবশালী সংগঠন ঘোষণা করেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ২৪শে মে কয়েকশো সন্ন্যাসী খালি পায় কলকাতার রাস্তায় নামবেন তারা।

ভোটের প্রচারে গিয়ে দিন তিনেক আগে মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন যে, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েকজন সন্ন্যাসী বিজেপিকে সহায়তা করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।

তৃণমূল নেত্রীর এই মন্তব্যের পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে পুরো বিজেপি নেতৃত্বই মমতা ব্যানার্জীকে পাল্টা আক্রমণ করতে শুরু করেছেন।

মমতা ব্যানার্জীর ওই একটা মন্তব্য ভোটের প্রচারে বিজেপির হাতে নতুন করে মেরুকরণের অস্ত্র তুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কী বলেছিলেন মমতা?
গত শনিবার এক নির্বাচনী সভায় মমতা ব্যানার্জী বলেছিলেন, “বহরমপুরে (মুর্শিদাবাদের জেলা সদর) একজন মহারাজ আছেন। তার ব্যাপারে অনেক দিন ধরে শুনছি। কার্তিক মহারাজ বলেন যে তিনি বুথে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেবেন না। আমি তাকে সন্ন্যাসী বলে গণ্যই করি না কারণ তিনি সরাসরি রাজনীতি করছেন এবং দেশের সর্বনাশ করছেন। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতি আমার খুব শ্রদ্ধা আছে। আমি যে সব প্রতিষ্ঠানকে শ্রদ্ধা করি, সেই তালিকায় এই সঙ্ঘ দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে।“

তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রসঙ্গও তোলেন সেদিন।

তিনি বলেছিলেন, “কেন সন্ন্যাসীরা এর মধ্যে ঢুকছেন? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই শ্রদ্ধা করে। আমি জানি রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা ভোট দেন না। কিন্তু আপনারা কেন অন্যদের বলছেন বিজেপিকে ভোট দেওয়ার কথা? সবাই নয়, কিন্তু কয়েকজন (সন্ন্যাসী) এটা করছেন।“

স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আর ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী প্রণবানন্দ।

দুটি প্রতিষ্ঠানই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। এরা ধর্মীয় সংগঠন হলেও সেবামূলক কাজ, শিক্ষার প্রসার আর বিপর্যয়ের সময়ে ত্রাণ সহায়তার কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির গবেষক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য অবশ্য বলছেন, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান হিসাবে রাজনীতির কোনও যোগ না থাকলেও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধীন ‘হিন্দু মিলন মন্দির’গুলিকে নিয়মিতই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো আরএসএসের সংগঠনগুলি কাজে লাগিয়ে থাকে।

আরো পড়ুন : ঝড়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানে ঝাঁকুনি; নিহত-১, আহত-৩০