ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌন হয়রানির অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষক বরখাস্ত

ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

তারা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী বলেন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৮৪ তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষকের মধ্যে রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক ও সাজন সাহাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়েছে।

অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে।

ওই বিভাগের প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে ওইসব ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিচারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে ওই শিক্ষকদের বিচার দাবি করছিলেন একই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

ঘটনা তদন্তে ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। পরদিন আন্দোলনকারীরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেট ভাঙচুর ও বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানায়। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা এবং বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।একইসঙ্গে শুভ্রকে বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়।

কিন্তু বরখাস্ত না করে দুই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দেড়টার দিকে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ ও উপাচার্যের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাখানেক মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখেন।

উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গেলে সড়কে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষকদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা তাদের স্লোগান বন্ধ করেন এবং দাবি পূরণে উপাচার্যের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে আসেন।

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

যৌন হয়রানির অভিযোগে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষক বরখাস্ত

আপডেট সময় ০৬:০২:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হুমায়ুন কবীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

তারা হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী বলেন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৮৪ তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই শিক্ষকের মধ্যে রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক ও সাজন সাহাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়েছে।

অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে।

ওই বিভাগের প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে ওইসব ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিচারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে ওই শিক্ষকদের বিচার দাবি করছিলেন একই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

ঘটনা তদন্তে ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ট্রেজারার ড. আতাউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। পরদিন আন্দোলনকারীরা মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় তারা ওই বিভাগের শিক্ষকদের নেমপ্লেট ভাঙচুর ও বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানায়। পরে দাবি মেনে তদন্ত কমিটি পুর্নগঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা এবং বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।একইসঙ্গে শুভ্রকে বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়।

কিন্তু বরখাস্ত না করে দুই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দেড়টার দিকে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কলা অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ ও উপাচার্যের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাখানেক মহাসড়কটি অবরোধ করে রাখেন।

উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গেলে সড়কে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষকদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা তাদের স্লোগান বন্ধ করেন এবং দাবি পূরণে উপাচার্যের আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে আসেন।