সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর আসছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাতের আমানতের সুদহারের সঙ্গে সমন্বয় করেই বাজারভিত্তিক নতুন সুদহার ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোর সুদের হার পুননির্ধারণের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করেছেন। যা শিগগিরই অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করবে।
বাজারে অন্যান্য আমানতের সুদহার বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদহারও ওঠানামা করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বাজারভিত্তিক সুদহার ঠিক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত অভ্যন্তরীণ ঋণের ঝুঁকি মোকাবিলায় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের সুদহার অন্তত এক শতাংশ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
অনুমোদিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, সরকারের নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি) জুন মাসে জানুয়ারি–জুন সময়ের জন্য এবং ডিসেম্বর মাসে জুলাই–ডিসেম্বর সময়ের জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদহার, মেয়াদপূর্তির পূর্বে নগদায়নের সুদহার এবং প্রিমিয়াম নির্ধারণ করবে। তবে ওয়েজ আর্নার বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এ সংস্কারের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ব্যাংকগুলো সাধারণত স্থায়ী আমানতে ৯ থেকে ১১ শতাংশ সুদ দেয়। তবে কিছু ব্যাংক ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ প্রদান করছে। অন্যদিকে সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে ১১ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ সুদ পান গ্রাহক।
আগে ব্যাংক আমানাতের চেয়ে সঞ্চয়পত্রে অনেক বেশি মুনাফা দেওয়া হতো। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, নতুন হারে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি বিনিয়োগকারীরা পাবেন সামান্য কম, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
অন্যগুলোর ক্ষেত্রেও এভাবে দুটি করে হার হবে। বরাবরের মতো নতুন হারেও সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন পেনশনার সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে বিনিয়োগকারীরা। ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে মেয়াদপূর্তির আগে ভাঙালে সব সঞ্চয়পত্রের বিপরীতেই মুনাফার হার কমবে।
নতুন হার ১ জানুয়ারি থেকে প্রযোজ্য হওয়ার কথা বলা হলেও এরই মধ্যে আট দিন পার হয়ে গেছে এবং আইআরডির প্রজ্ঞাপন হতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে। এই সময়ে বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরও হবে। সে ক্ষেত্রে কী হবে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, একটি উপায় বের করা হবে। আর আইআরডি প্রজ্ঞাপন করলে আগের তিন ধাপসংবলিত প্রজ্ঞাপনটি বাতিল হয়ে যাবে।