ঢাকা ০৫:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও কুমিল্লায় গাড়িচাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আন্তরিক নয় রাশিয়া : জেলেনস্কি দুই ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগা চ্যাম্পিয়ন হলো বার্সেলোনা গাজায় ইসরায়েলি হামলা একদিনে ১৪৩ জন নিহত, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার আন্দোলনে বন্ধ ঢাকার ব্যস্ত সড়ক, তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী সাম্য হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে : উপদেষ্টা আসিফ ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর, গাজায় আরও আগ্রাসী ইসরায়েল, একদিনে প্রাণহানি ৮৪ গুড়িয়ে দেয়া হলো ভারতের উত্তর প্রদেশের ৩০০ মসজিদ-মাদরাসা তিন দফা দাবি আদায়ে জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে

কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও

উপহার হিসেবে কাতার ৪০০ মিলিয়ন ডলারের যে বিমান দিতে চাচ্ছে, তা গ্রহণ করতে কতটা উদগ্রীব সে কথা এরইমধ্যে প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও এ বিষয়ে নিজের পক্ষে অনেককে যুক্ত করতে পেরেছেন তিনি। যেটাকে তার জন্য বড় অর্জন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে হোয়াইট হাউজের জন্য অস্বস্তির বিষয় হলো, বিপক্ষেও বড় ঐক্য তৈরি হয়েছে।

কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিলাসবহুল বিমান নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। এমনকি চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার আগেই এ নিয়ে সমালোচনা করছেন তার অনেক কট্টর সমর্থকও।

বড় মাপের ইনফ্লুয়েন্সাররা (যারা বিভিন্ন ইস্যুতে জনমত গঠন করেন) এই পদক্ষেপকে ঘুস, দুর্নীতি কিংবা উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করছেন, যেখানে অতীতে ট্রাম্প নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বহুবার।

কাতারের রাজপরিবার ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল বিমান, বোয়িং ৭৪৭-৮ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যা প্রেসিডেন্টের বিমান ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক মাধ্যম হিসেবে পরিচিত এয়ার ফোর্স ওয়ান বহরের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

বর্তমানে এই বহরে ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবহৃত দুটি ৭৪৭-২০০ জেট এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ছোট এবং অপেক্ষাকৃত গোপনীয় ৭৫৭ বিমানও রয়েছে।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নতুন বিমানটি- সংস্কার ও আপগ্রেড করতে বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে এবং লাখ লাখ ডলার খরচ হতে পারে। তাই ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে তা প্রেসিডেন্টের সংরক্ষণাগারে স্থানান্তর করা হবে।

রক্ষণশীল ডেইলি ওয়্যারের বক্তা বেন সাপিরো তার পডকাস্টে বলেন, আমি মনে করি, বিষয়টি ন্যক্কারজনক। কাতার কেবল নিজেদের মনের খুশির জন্যই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমানটি দিচ্ছে না, দ্বিপাক্ষিক উপায়ে নিজেদের পকেটে অর্থ ঢোকানোর চেষ্টাও রয়েছে তাদের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রভাবশালী আলোচক লরা লুমার, যিনি কিনা হোয়াইট হাউজের অপেক্ষাকৃত কম অনুগত শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তিনিও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করার জন্য ট্রাম্পপন্থি বার্তাগুলোর উন্মুক্ত প্রবাহকে দায়ী করেছেন।

প্রেসিডেন্টকে এখনো সমর্থন করার কথা বললেও বিমান চুক্তিকে তিনি একটি দাগ হিসেবেই উল্লেখ করছেন।বিমান উপহার নেওয়ার পরিকল্পনার জন্য মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছ থেকেও খুব কম সমর্থন পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউইয়র্ক পোস্ট, যাদেরকে আড়ালে ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করেন অনেকে, তারাও স্পষ্ট সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, কাতারের জেট বিনামূল্যের উপহার নয় এবং ট্রাম্পেরও উচিত হবে না এটিকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করা।

এসব সমালোচনার জবাবে হোয়াইট হাউসও দ্বিগুণ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রশাসন পূর্ণ স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, বিদেশি সরকারের কাছ থেকে যেকোনো উপহার সব সময় প্রয়োজনীয় সব আইন মেনেই গ্রহণ করা হয়।

যদিও বিমানের বিনিময়ে কোনো কিছুই লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসেনি, তবুও অনেকে বলেছেন, কোনো শর্ত বা আশা ছাড়াই কাতারের রাজপরিবার এত বিশাল উপহার দেবে এমনটা আশা করা বোকামি হবে।

রাজনৈতিক কৌশলবিদ ও রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সাবেক যোগাযোগ পরিচালক ডগ হেই বিবিসিকে বলছেন, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উপহার দিয়ে পুরস্কৃত করেন, তাহলে তা ভবিষ্যতে লাভজনক হতে পারে। চাটুকারিতার মাধ্যমে আপনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিতে একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবেন এবং এর উদাহরণ বারবার দেখা গেছে।

মার্কিন সংবিধানে একটি ধারা রয়েছে যা দেশটির কর্মকর্তাদের যেকোনো দেশের রাজা, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো ধরনের উপহার, বেতন, খেতাব গ্রহণে বাধা দেয়।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর, গাজায় আরও আগ্রাসী ইসরায়েল, একদিনে প্রাণহানি ৮৪

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

কাতারের বিমান উপহার গ্রহণ ট্রাম্পের; সমালোচনায় তার সমর্থকরাও

আপডেট সময় ১১:০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

উপহার হিসেবে কাতার ৪০০ মিলিয়ন ডলারের যে বিমান দিতে চাচ্ছে, তা গ্রহণ করতে কতটা উদগ্রীব সে কথা এরইমধ্যে প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও এ বিষয়ে নিজের পক্ষে অনেককে যুক্ত করতে পেরেছেন তিনি। যেটাকে তার জন্য বড় অর্জন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে হোয়াইট হাউজের জন্য অস্বস্তির বিষয় হলো, বিপক্ষেও বড় ঐক্য তৈরি হয়েছে।

কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিলাসবহুল বিমান নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। এমনকি চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার আগেই এ নিয়ে সমালোচনা করছেন তার অনেক কট্টর সমর্থকও।

বড় মাপের ইনফ্লুয়েন্সাররা (যারা বিভিন্ন ইস্যুতে জনমত গঠন করেন) এই পদক্ষেপকে ঘুস, দুর্নীতি কিংবা উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করছেন, যেখানে অতীতে ট্রাম্প নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বহুবার।

কাতারের রাজপরিবার ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল বিমান, বোয়িং ৭৪৭-৮ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যা প্রেসিডেন্টের বিমান ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক মাধ্যম হিসেবে পরিচিত এয়ার ফোর্স ওয়ান বহরের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

বর্তমানে এই বহরে ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবহৃত দুটি ৭৪৭-২০০ জেট এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ছোট এবং অপেক্ষাকৃত গোপনীয় ৭৫৭ বিমানও রয়েছে।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নতুন বিমানটি- সংস্কার ও আপগ্রেড করতে বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে এবং লাখ লাখ ডলার খরচ হতে পারে। তাই ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে তা প্রেসিডেন্টের সংরক্ষণাগারে স্থানান্তর করা হবে।

রক্ষণশীল ডেইলি ওয়্যারের বক্তা বেন সাপিরো তার পডকাস্টে বলেন, আমি মনে করি, বিষয়টি ন্যক্কারজনক। কাতার কেবল নিজেদের মনের খুশির জন্যই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমানটি দিচ্ছে না, দ্বিপাক্ষিক উপায়ে নিজেদের পকেটে অর্থ ঢোকানোর চেষ্টাও রয়েছে তাদের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রভাবশালী আলোচক লরা লুমার, যিনি কিনা হোয়াইট হাউজের অপেক্ষাকৃত কম অনুগত শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তিনিও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করার জন্য ট্রাম্পপন্থি বার্তাগুলোর উন্মুক্ত প্রবাহকে দায়ী করেছেন।

প্রেসিডেন্টকে এখনো সমর্থন করার কথা বললেও বিমান চুক্তিকে তিনি একটি দাগ হিসেবেই উল্লেখ করছেন।বিমান উপহার নেওয়ার পরিকল্পনার জন্য মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছ থেকেও খুব কম সমর্থন পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিউইয়র্ক পোস্ট, যাদেরকে আড়ালে ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করেন অনেকে, তারাও স্পষ্ট সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, কাতারের জেট বিনামূল্যের উপহার নয় এবং ট্রাম্পেরও উচিত হবে না এটিকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করা।

এসব সমালোচনার জবাবে হোয়াইট হাউসও দ্বিগুণ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রশাসন পূর্ণ স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, বিদেশি সরকারের কাছ থেকে যেকোনো উপহার সব সময় প্রয়োজনীয় সব আইন মেনেই গ্রহণ করা হয়।

যদিও বিমানের বিনিময়ে কোনো কিছুই লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসেনি, তবুও অনেকে বলেছেন, কোনো শর্ত বা আশা ছাড়াই কাতারের রাজপরিবার এত বিশাল উপহার দেবে এমনটা আশা করা বোকামি হবে।

রাজনৈতিক কৌশলবিদ ও রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির সাবেক যোগাযোগ পরিচালক ডগ হেই বিবিসিকে বলছেন, যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উপহার দিয়ে পুরস্কৃত করেন, তাহলে তা ভবিষ্যতে লাভজনক হতে পারে। চাটুকারিতার মাধ্যমে আপনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিতে একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবেন এবং এর উদাহরণ বারবার দেখা গেছে।

মার্কিন সংবিধানে একটি ধারা রয়েছে যা দেশটির কর্মকর্তাদের যেকোনো দেশের রাজা, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো ধরনের উপহার, বেতন, খেতাব গ্রহণে বাধা দেয়।

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর, গাজায় আরও আগ্রাসী ইসরায়েল, একদিনে প্রাণহানি ৮৪