ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলন নিয়ে ৮ সিনেমা; নির্মাতা চূড়ান্ত বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন : প্রেস সচিব পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন আন্দোলনে আহত ১০০ জন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ১৪৪ ধারা ভেঙে সচিবালয় ঘেরাওয়ের চেষ্টা, পুলিশের ধাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার কাজের তালিকা দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ সরকার গঠনের পর অভিযুক্ত কাউকে দেশত্যাগ করতে দেয়া হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ট্রুডো কেন হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন? কে হতে যাচ্ছে তার উত্তরসূরি? গঠিত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’,  ইরানে হিজাব খুলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতিবাদ শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩

ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সরানোর পরিকল্পনায়’ ট্রাম্প

ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে সই করতে পারেন, সেই প্রস্তুতি চলার খবর দিয়েছেন একজন স্বাস্থ্য আইন বিশেষজ্ঞ।

ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথের অধ্যাপক এবং ডাব্লুএইচও কলাবোরেটিং সেন্টারের পরিচালক লরেন্স গোস্টিন বলেছেন, “উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই আমি খবরটা পেয়েছি। তিনি (যুক্তরাষ্ট্রকে) প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছেন, সম্ভবত দায়িত্বের প্রথম দিন বা একেবারে শুরুর দিকেই।”

এর আগে ফিনান্সিয়াল টাইমস দুইজন বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনার খবর দিয়েছিল।

ট্রাম্পের ট্রানজিশন দল এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

ডনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমালোচনা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। জাতিসংঘের এ সংস্থা থেকে সরে আসার পরিকল্পনা তিনি বাস্তবায়ন করলে তা হবে মার্কিন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন। মহামারীর মত দুর্যোগ মোকাবেলার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা থেকে ওয়াশিংটনকে তা আরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর শীর্ষপদে ট্রাম্প যাদের মনোনীত করেছেন, তাদের কয়েকজন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কড়া সমালোচক। ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী যিনি হচ্ছেন, সেই রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ভ্যাকসিনবিরোধী হিসেবে পরিচিতি। সিডিসি ও এফডিএসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ তার মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকবে।

আগের মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ই ২০২০ সালে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তার উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছয় মাসের মাথায় সেই সিদ্ধান্ত উল্টে দেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ, কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক বিস্তারের জন্য চীনকে অভিযুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তিনি বারবার এ বিশ্ব সংস্থাকে ‘বেইজিংয়ের পুতুল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং নিজের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই পদক্ষেপ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র। তবে তিনি এ বিষয়ে গত ১০ ডিসেম্বর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুসের মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।

ওই ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন যে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিতে চায়, সে বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন কি না।

তেদ্রোস সে সময় বলেছিলেন, ওই ‘ট্রানজিশনের’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সময় দিতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে মহামারী চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করা হলে তা বিশ্বব্যাপী রোগ বিস্তারের ওপর নজরদারি এবং জরুরি সাড়াদানের ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেবে।

গোস্টিন বলেন, “সেরকম হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব হারাবে। সেই শূন্যতা পূরণ করবে চীন। আমি শক্তিশালী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়া একটি বিশ্ব কল্পনা করতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার ডব্লিউএইচওকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে দেবে।”

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সরানোর পরিকল্পনায়’ ট্রাম্প

আপডেট সময় ১১:২০:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে সই করতে পারেন, সেই প্রস্তুতি চলার খবর দিয়েছেন একজন স্বাস্থ্য আইন বিশেষজ্ঞ।

ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথের অধ্যাপক এবং ডাব্লুএইচও কলাবোরেটিং সেন্টারের পরিচালক লরেন্স গোস্টিন বলেছেন, “উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেই আমি খবরটা পেয়েছি। তিনি (যুক্তরাষ্ট্রকে) প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছেন, সম্ভবত দায়িত্বের প্রথম দিন বা একেবারে শুরুর দিকেই।”

এর আগে ফিনান্সিয়াল টাইমস দুইজন বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে ট্রাম্পের ওই পরিকল্পনার খবর দিয়েছিল।

ট্রাম্পের ট্রানজিশন দল এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

ডনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমালোচনা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। জাতিসংঘের এ সংস্থা থেকে সরে আসার পরিকল্পনা তিনি বাস্তবায়ন করলে তা হবে মার্কিন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন। মহামারীর মত দুর্যোগ মোকাবেলার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা থেকে ওয়াশিংটনকে তা আরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর শীর্ষপদে ট্রাম্প যাদের মনোনীত করেছেন, তাদের কয়েকজন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কড়া সমালোচক। ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী যিনি হচ্ছেন, সেই রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ভ্যাকসিনবিরোধী হিসেবে পরিচিতি। সিডিসি ও এফডিএসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ তার মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকবে।

আগের মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ই ২০২০ সালে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তার উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছয় মাসের মাথায় সেই সিদ্ধান্ত উল্টে দেন।

ট্রাম্পের অভিযোগ, কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক বিস্তারের জন্য চীনকে অভিযুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তিনি বারবার এ বিশ্ব সংস্থাকে ‘বেইজিংয়ের পুতুল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং নিজের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্রাম্পের সম্ভাব্য এই পদক্ষেপ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র। তবে তিনি এ বিষয়ে গত ১০ ডিসেম্বর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুসের মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।

ওই ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ট্রাম্প প্রশাসন যে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিতে চায়, সে বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন কি না।

তেদ্রোস সে সময় বলেছিলেন, ওই ‘ট্রানজিশনের’ জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সময় দিতে হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে মহামারী চুক্তি চূড়ান্ত করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করা হলে তা বিশ্বব্যাপী রোগ বিস্তারের ওপর নজরদারি এবং জরুরি সাড়াদানের ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেবে।

গোস্টিন বলেন, “সেরকম হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব হারাবে। সেই শূন্যতা পূরণ করবে চীন। আমি শক্তিশালী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছাড়া একটি বিশ্ব কল্পনা করতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার ডব্লিউএইচওকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে দেবে।”