লেবাননের রাজধানী বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে একটি জনবহুল এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে।
লেবাননের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষ নেতাকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। খবর এএফপির।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ইরানপন্থি হিজবুল্লাহ আন্দোলনের ঘাঁটি ও শীর্ষ নেতাদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে এলেও এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো গতকাল বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে হামলা চালানো হয়।
এ ব্যপারে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলি শত্রুরা রাজধানী বৈরুতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হামলা চালিয়ে ২২ জনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১১৭ জন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে লেবাননের নিরাপত্তা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে একজন হিজবুল্লাহ কর্মকর্তাকে লক্ষ্য করে যিনি নিয়মিতভাবে হামলা চালানোর স্থানটিতে যাতায়াত করতেন। তবে ওই কর্মকর্তা হামলায় মারা গেছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) জানিয়েছে, বৈরুতের নাওয়েরি ও বাসতা এলাকায় ইসরায়েল এই বিমান হামলা চালায়।
এএএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈরুতের নাওয়েরি এলায় চালানো প্রথম হামলাটিতে একটি আটতলা ভবনের চতুর্থ তলায় আঘাত করা হয়। এরপর বাসতা আল-ফোকা এলাকার একটি পাঁচতলা ভবন লক্ষ্য করে দ্বিতীয় হামলা চালানো হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিক জানান, হামলায় বাসতা এলাকার দুটি বহুতল ভবন ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া আশপাশের ভবনগুলো হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হামলার পর উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয় অধিবাসীরা ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর পাহাড়সম জঞ্জালের ভেতর থেকে বেঁচে যাওয়া লোকজনকে উদ্ধারে অভিযান চালায়। আহত লোকজনকে স্ট্রেচারে করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
নাওয়েরি এলাকায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক ভবনগুলোর আগুন নেভাতে দেখা যায় অগ্নি-নির্বাপন কর্মীদের। এ সময় মইয়ের সাহায্যে অনেককে নামিয়ে আনতেও দেখা যায়।
গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লেবাননের হিজবুল্লাহ মিলিশিয়াদের সঙ্গে সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা বিনিময়ের ঘটনা প্রায় প্রতিনিয়ত ঘটে আসছে। তবে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপকভাবে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ শুরু করে যার ফলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হয় এবং হামলায় ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।
আরো পড়ুন : ফ্লোরিডায় ঘূর্ণিঝড় মিল্টনের আঘাত