অবশেষে হাসার উপলক্ষ পেলেন কিলিয়ান এমবাপে। হতাশার মেঘ সরিয়ে ঠিকরে বেরোল তার পারফরম্যান্সের আলো। তাতে উচ্ছ্বসিত কোচ কার্লো আনচেলত্তি। এমবাপেকে এমন সক্রিয় ও বিপজ্জনক চেহারাতেই দেখতে চান রেয়াল মাদ্রিদ কোচ।
লা লিগায় রোববার গেতাফের বিপক্ষে রেয়াল মাদ্রিদের জয়ে দারুণ এক গোল করেন এমবাপে। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের পেনাল্টি এগিয়ে নেয় রেয়ালকে। আট মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁতকে গড়ানো শটে ব্যবধান বাড়ান এমবাপে। ওই দুই গোলই জয় এনে দেয় চ্যাম্পিয়নদের।
গোলের সুযোগ এমবাপে পেয়েছিলেন আরও। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। নিজের সেরা বিধ্বংসী চেহারায় ছিলেন না এ দিনও। তবে যা করেছেন, তাতেই রেয়ালের জন্য আশার উপকরণ আছে অনেক।
লা লিগায় এমবাপের অষ্টম গোল এটি। ভিনিসিউসের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি লিগে রেয়ালের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে গোল হলো তার দশটি। তবে তার কাছ থেকে প্রত্যাশা তো আরও বড় কিছু, বেশি কিছুর।
এই ম্যাচের আগে সবশেষ ৯ ম্যাচে তার গোল ছিল কেবল ২টি। গত ম্যাচেই লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেয়ালের পরাজয়ে পেনাল্টি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন তিনি। সব মিলিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
সব পারিপার্শ্বিকতা ভাবনায় নিয়েই এই ম্যাচে এমবাপের পারফরম্যান্সে ইতিবাচক অনেক কিছু দেখছেন আনচেলত্তি। শুধু গোল করার জন্যই নয়, ম্যাচজুড়ে এই ফরোয়ার্ডের পারফরম্যান্সে খুশি কোচ।
“কিলিয়ান ছিল বিপজ্জনক। গুরুত্বপূর্ণ একটি গোল করে সে আমাদেরকে সহায়তা করেছে ম্যাচকে নিয়ন্ত্রণে নিতে। দ্বিতীয়ার্ধেও সে সুযোগ তৈরি করেছে। ম্যাচজুড়েই দারুণ সক্রিয় ছিল সে। তার কাছ থেকে আমরা এসবই দেখতে চাই।”
“হ্যাঁ, সবার জন্যই এটা (এমবাপের গোল) স্বস্তিদায়ক, কারণ এটা ছিল দুর্দান্ত এক গোল। দারুণভাবে কাজটা করেছে সে। গোলের বাইরেও তার সামগ্রিক খেলা ছিল ভালো।”
এমবাপের পারফরম্যান্স নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কাটাছেঁড়া অনেক হলেও সমর্থকদের বড় একটি অংশ তাকে দারুণভাবে উৎসাহ জুগিয়েছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন আনচেলত্তি।
“দল ও ফুটবলারদের নিয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো জানে সমর্থকেরাই। অ্যানফিল্ডের ম্যাচের পর তারা এমবাপের পাশে থেকেছে এবং এটিই ছিল সত্যিকারের সঠিক কাজ।”
রেয়ালের জন্য আরেকটি স্বস্তির জায়গা ছিল চোট কাটিয়ে রদ্রিগোর ফেরা। ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গারের খেলার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দলের পারফরম্যান্সে।
এখনও অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ একগাদা ফুটবলার মাঠের বাইরে। ডাভিড আলাবা, এদের মিলিতাও, দানি কার্ভাহাল, ভিনিসিউস জুনিয়র, অহেলিয়া চুয়ামেনির সঙ্গে সবশেষ সংযোগ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। ম্যাচের পর ম্যাচ জোড়াতালি দিয়ে দল চালাচ্ছেন কোচ। তার পরও দল যেভাবে নিজেদের মেলে ধরছে, তাতে গর্বিত আনচেলত্তি।
“যতগুলি চোট সমস্যার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের, পরিস্থিতি খুব কঠিন। তার পরও আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। মনোযোগ ধরে উজ্জীবিত আছি আমরা এবং এই মানসিকতাই আমাকে ভরসা ও বিশ্বাস জোগাচ্ছে। আস্তে আস্তে আমরা সমস্যা সমাধান করব। ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।”
এই ম্যাচে কিছুটা শঙ্কা জেগেছিল বেলিংহ্যামকে নিয়েও। চোট পাওয়ার পর তাকে তুলে নেন আনচেলত্তি। তবে ম্যাচের পর কোচ জানালেন, ইংলিশ এই ফুটবলার ঘাড়ে একটু চোট পেয়েছিলেন, সেটি গুরুতর কিছু নয়।
এই জয়ের পর ১৪ ম্যাচ খেলে রেয়ালের পয়েন্ট ৩৩। এক ম্যাচ বেশি খেলে এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। পরের ম্যাচে বুধবার আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে জিতলেই সবার ওপরে উঠে যাবে আনচেলত্তির দল।