বাংলাদেশ দলের সাফল্যের খাতা ওয়ানডেতেই ভারী। আগামী ফেব্রুয়ারিতে হাইব্রিড মডেলে গড়াতে চলেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ওয়ানডে ফরম্যাটে হওয়ায় টিম টাইগার্সের কাছে প্রত্যাশা বেশি থাকাই স্বাভাবিক। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা। আসন্ন আইসিসি প্রতিযোগিতায় টাইগারদের নিয়ে খুব বেশি আশা করতে নিষেধ তার।
বিপিএলের সিলেটপর্ব চলছে, চায়ের সাম্রাজ্যে চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে কথা হয় আশরাফুলের। একান্ত আলাপনে এমনই বললেন সাবেক ব্যাটার। পেছনের যুক্তিও দিয়েছেন আশরাফুল। ক্রিকেটাররা যাতে সেরাটা দিয়ে খেলতে পারেন, সেই আশাও করছেন তিনি।
‘দেখেন, গতবছর আমাদের ওয়ানডে রেকর্ডটা অত ভালো না। আমরা মনে হয়, আট-নয়টা ম্যাচ খেলে একটা-দুটা ম্যাচ জিতেছি। যদিও লাস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আমরা দুটা ম্যাচ ২৯০ এবং তিনশ করেছিলাম, তারপরও হেরেছিলাম। তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অবশ্যই বেশি আশা না করি।’
২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের খুব একটা সাফল্য নেই। চারটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে কেবল একটিতে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পেরেছে টিম টাইগার্স। বাকি তিন সিরিজে হেরেছে, হোয়াইটওয়াশও হয়েছে একবার।
ভারত বিশ্বকাপের পরে সাদা বলের সংস্করণে ১২ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জয়ের সংখ্যাটা অল্পই। কেবল চার ম্যাচে জিতেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জয় পেয়েছে একটি। ২০২৪ সালে মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচ সিরিজের দুটিতে জয় তোলে টিম টাইগার্স।
এরপর ছন্দপতন। গত নভেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে শারজায় ২-১ ব্যাবধানে হারে বাংলাদেশ। ডিসেম্বরে ক্যারিবীয় দ্বীপে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় লাল-সবুজের দল।
খেলার মাঠে অবশ্য পরিসংখ্যান বড় কিছু নয়। ঠিকঠাক পারফর্ম করতে পারলে সাফল্য ধরা দেবে। বাংলাদেশ বোলিংয়ে উন্নতি করলেও ব্যাটিংয়ে ভুগছে। টপঅর্ডারে রান না পাওয়া নিয়মিত ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে উদ্বোধনী জুটিতে। গতবছরে খেলা ৯ ওয়ানডেতে কেবল দুটি ম্যাচে ৫০ বা তার বেশি রান এসেছে উদ্বোধনীতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৩ রান তুলেছিলেন সৌম্য সরকার ও তানজিদ হাসান তামিম। এটাই গত একবছরে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচে ৫০ রান করেন এনামুল হক বিজয় ও তানজিদ তামিম।
গত একবছরে ওয়ানডেতে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের রানসংখ্যা ক্রমান্বয়ে- ৯, ২৬, ৩৪, ৫৩, ২৮, ১২, ৫০, ০ ও ১। টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে ওপেনিংয়ে এমন জুটি শোভনীয় নয়। বোলারদের সাফল্য চোখ জুড়ানোর মতো। তবে নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে বাংলাদেশ যদি সেরাটা দিতে পারে, সাফল্যও আসতে পারে বলছেন আশরাফুল। তার মতে, ফলাফল যাই হোক না কেনো নিজেদের সেরাটা দিয়ে শেষপর্যন্ত ভালো করতে পারে টিম টাইগার্স।
‘খেলোয়াড়রা যেন তাদের বেস্ট ক্রিকেটটা খেলতে পারে, এটাই আশা থাকবে। রেজাল্ট যাই হোক আমরা যেন ফাইট করতে পারি, সে জিনিসটা আশা করতে পারি।’ বলেন আশরাফুল।