ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণে ২৯ মে পর্যন্ত আল্টিমেটাম

২৯ মের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার জন্য সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সোমবার (২৬ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

এর আগে রোববার (২৫ মে) কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছিল তারা। আজ আবার সেই দাবিতে আল্টিমেটাম দিলেন এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) শাহদাৎ জামিল শাওন ও উপ কর কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) রইসুন নেসা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এ দাবি তোলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ জানায়, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঠিক তথ্য না দিয়ে আড়াল করেছেন। এতদিন তার অপসারণের দাবি থাকলেও কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, এবারই প্রথমবার সময় বেঁধে দেওয়া হলো।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ’ যথারীতি অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা আশা করি, রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার কর-রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, কর-রাজস্ব আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় জ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব কর্ম-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব প্রদান করবে।

এতে কয়েকদিনের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কর্মসূচিকে সফল করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এর অধীন টিনার, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের দপ্তরের গ্রেড-২০ থেকে শুরু করে গ্রেড-১ পর্যন্ত সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, রিটায়ার্ড বিসিএস কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (আরব্যেকডে), রিটায়ার্ড ট্যাক্সেস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (রেটোয়া), বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এক্সিকিউটিভ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকায়েত), কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট মিনিস্টেরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএম), বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতি (বাকাস), বাংলাদেশ মাকসেস ইন্সপেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাক্সেস এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অ্যাক্সেস ১৭-২০ তম গ্রেড সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, স্টেনোটাইপিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, স্টেনোগ্রাফার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাসোসিয়েশন, গাড়িচালক সমিতিসহ অন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

রোববার (২৫ মে) রাতে এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঐক্য পরিষদ। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের ব্যাপারে কিছুই জানায়নি মন্ত্রণালয়।

এর পরপর এক সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে চলা আন্দোলন কর্মসূচি ১৩ দিন পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। চারটি দাবির মধ্যে তিনটি দাবি পূরণ হওয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে অনড় রয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

ঐক্য পরিষদের চারটি দাবি ছিল– অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা; অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা; রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করা।

সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যাতে তিনটি বিষয় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।

দ্বিতীয়ত, বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের কাঠামো কীরূপে প্রণীত হবে-তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।

তৃতীয়ত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই তারিখের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সকল সংশোধনী আনা হবে। উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।

ঐক্য পরিষদ বলছে, এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে স্পষ্ট যে এনবিআর বিলুপ্ত হবে না। বরং এটিকে সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় আরও শক্তিশালী করা হবে। রাজস্ব নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে আলাদা একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না। রাজস্ব সংস্কারের লক্ষ্যে সরকারের এ ঘোষণাকে ঐক্য পরিষদ স্বাগত জানিয়েছে।

এর আগে ২৫ মে বিকেলে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এবং ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি-রপ্তানি ছাড়া সোমবার থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

গত ১৩ মে আগারগাঁওয়ে এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুসারে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। আলোচনার আশ্বাসে ২০ মে আন্দোলন স্থগিত রেখে ২১ মে থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসে। গত ২২ মে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর গত ২৪ মে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করে ঐক্য পরিষদ।

এনবিআরে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণে ২৯ মে পর্যন্ত আল্টিমেটাম

আপডেট সময় ০৬:৩৮:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

২৯ মের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করার জন্য সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সোমবার (২৬ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

এর আগে রোববার (২৫ মে) কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছিল তারা। আজ আবার সেই দাবিতে আল্টিমেটাম দিলেন এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) শাহদাৎ জামিল শাওন ও উপ কর কমিশনার (দ্বিতীয় সচিব) রইসুন নেসা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এ দাবি তোলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ জানায়, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঠিক তথ্য না দিয়ে আড়াল করেছেন। এতদিন তার অপসারণের দাবি থাকলেও কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, এবারই প্রথমবার সময় বেঁধে দেওয়া হলো।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ’ যথারীতি অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা আশা করি, রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার কর-রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, কর-রাজস্ব আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় জ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব কর্ম-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব প্রদান করবে।

এতে কয়েকদিনের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কর্মসূচিকে সফল করায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও এর অধীন টিনার, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের দপ্তরের গ্রেড-২০ থেকে শুরু করে গ্রেড-১ পর্যন্ত সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, রিটায়ার্ড বিসিএস কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (আরব্যেকডে), রিটায়ার্ড ট্যাক্সেস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (রেটোয়া), বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এক্সিকিউটিভ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকায়েত), কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট মিনিস্টেরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএম), বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতি (বাকাস), বাংলাদেশ মাকসেস ইন্সপেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাক্সেস এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অ্যাক্সেস ১৭-২০ তম গ্রেড সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, স্টেনোটাইপিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, স্টেনোগ্রাফার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাসোসিয়েশন, গাড়িচালক সমিতিসহ অন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

রোববার (২৫ মে) রাতে এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। সেই আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঐক্য পরিষদ। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের ব্যাপারে কিছুই জানায়নি মন্ত্রণালয়।

এর পরপর এক সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়, এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে চলা আন্দোলন কর্মসূচি ১৩ দিন পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। চারটি দাবির মধ্যে তিনটি দাবি পূরণ হওয়ায় কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে অনড় রয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

ঐক্য পরিষদের চারটি দাবি ছিল– অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা; অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা; রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করা।

সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যাতে তিনটি বিষয় ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।

দ্বিতীয়ত, বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের কাঠামো কীরূপে প্রণীত হবে-তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।

তৃতীয়ত, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই তারিখের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সকল সংশোধনী আনা হবে। উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।

ঐক্য পরিষদ বলছে, এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে স্পষ্ট যে এনবিআর বিলুপ্ত হবে না। বরং এটিকে সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় আরও শক্তিশালী করা হবে। রাজস্ব নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে আলাদা একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারি করা অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না। রাজস্ব সংস্কারের লক্ষ্যে সরকারের এ ঘোষণাকে ঐক্য পরিষদ স্বাগত জানিয়েছে।

এর আগে ২৫ মে বিকেলে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এবং ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি-রপ্তানি ছাড়া সোমবার থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

গত ১৩ মে আগারগাঁওয়ে এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে অনুসারে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও ১৯ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। আলোচনার আশ্বাসে ২০ মে আন্দোলন স্থগিত রেখে ২১ মে থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা আসে। গত ২২ মে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর গত ২৪ মে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করে ঐক্য পরিষদ।

এনবিআরে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি