ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফেরাতে বিচারিক আদালতের নির্দেশ মেনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দুদক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
আক্তার হোসেন বলেন, টিউলিপের মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যে কোনো আসামি যদি নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত না হয়ে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। টিউলিপ সিদ্দিকি যদি আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথা বলতে চান তাহলে অবশ্যই তাকে আদালতে হাজির হয়ে বলতে হবে। আগামী ২৭ ও ২৯ এপ্রিল তার আদালতে উপস্থিত হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে তিনি উপস্থিত না হলে আদালত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
রাজধানীর গুলশানের ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ফ্ল্যাট অবৈধভাবে নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার তিন আসামি হলেন টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান এবং সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা-১ সরদার মোশারফ হোসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো টাকা পরিশোধ না করেই অবৈধ পারিতোষিক হিসাবে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে গুলশান-২ এর ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং বি/২০১, বাড়ি নং ৫এ ও ৫বি (পুরাতন), বর্তমানে- ১১৩, ১১বি (নতুন), রোড নং ৭১) দখল নিয়ে ও পরে রেজিস্ট্রি মূলে খতিয়ান গ্রহণ বা প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
উক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০বি/৪০৯/১৬১/১৬২/১৬৩/১৬৪/১৬৫(ক)/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারে সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আটটি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দেয় সংস্থাটি। যা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।