ঢাকা ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে যুগপৎ সঙ্গীদের সাথে আলোচনায় বিএনপি হামজার পর এবার আসছেন কানাডার সামিত সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের আহ্বান উপদেষ্টা আসিফের সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা : গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের কাছেও হার বাংলাদেশের; কঠিন সমীকরণে বিশ্বকাপ ভাগ্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হাসিনাসহ ১২ জনের নামে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন মুসলিম সংখ্যলঘুদের নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের প্রত্যাখ্যান সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন নয় : গোলাম পরওয়ার

ভয়াবহ বন্যায় টালমাটাল দেশের কয়েক জেলা

ভয়াবহ বন্যার কবলে টালমাটাল দেশের কয়েকটি জেলা। পানিবন্দি অবস্থায় দিন পার করছেন লাখ লাখ মানুষ ফেনীতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ দিন কাটাচ্ছেন পানিবন্দি অবস্থায়। রয়েছে খাবারের প্রচণ্ড সংকট।

জেলার বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও বিঘ্নিত। অনেকেই স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাদের প্রতিটি মূহুর্ত কাটছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।

ফেনী অংশে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি ওঠায় চরমভাবে ব্যাহত যান চলাচল। যানজটও পৌঁছেছে চরমে। পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজির দুর্গত এলাকার মধ্যেই ৫ হাজার বাসিন্দাকে ইতোমধ্যে বাসাবাড়ির ছাদ ও নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বিভিন্ন বাহিনী।

অন্যদিকে বানের জলে তলিয়ে আছে নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়িসহ মোট ৭ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বাড়িঘর-রাস্তাঘাটও তলিয়ে আছে পানির নিচে। এই জেলার দুর্গত এলাকাগুলোয় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি।

তবে, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। এখনও বাড়িঘরে পানি থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন অনেকে। দুর্গত এলাকাগুলোয় এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে।

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, বুড়িরচংসহ ১৪ উপজেলার ১১৮টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়েছে। সেসব জায়গায় পানিবন্দি আছেন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ।

জেলায় সাড়ে পাঁচশ’ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৪৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে। অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি থাকায় কুমিল্লা অংশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৭ লাখ মানুষ রয়েছেন পানিবন্দি অবস্থায়। প্রায় দুইশ’ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন ২০ হাজার মানুষ। তবে বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্রেও উঠেছে পানি। চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে বানভাসীদের। প্রকট আকার ধারণ করেছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

তবে, মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার প্লাবিত এলাকা থেকে ধীর গতিতে পানি নামছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছেন অনেকে। তবে এখনও পানিবন্দি আছে নিম্নাঞ্চলের কিছু মানুষ। নিচু এলাকার বাড়িঘর-রাস্তাঘাট এখনও জলমগ্ন।

হবিগঞ্জে ধীর গতিতে নামছে খোয়াই নদীর পানি। তবে এখনও প্লাবিত জেলার ১৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। বাড়িঘর-দোকানপাটে উঠেছে পানি। রাস্তাঘাটও তলিয়েছে পানির নিচে। চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে বানভাসীদের। খোলা হয়েছে ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এরইমধ্যে প্লাবিত ৫ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি সরেছে। তবে এতে দুর্ভোগ কমেনি গ্রামের মানুষের। বানের জল কমে আসায় স্পষ্ট হতে শুরু করেছে ক্ষতচিহ্ন। উজানের ঢলে ভেঙে যাওয়া হাওড়া নদীর বাঁধ দিয়ে এখনও পানি ঢুকছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে বন্যায় ১৩ জনের প্রানহানি নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে– কুমিল্লায় ৪ জন, কক্সবাজারে ৩, ফেনীতে ১, চট্টগ্রামে ২, নোয়াখালীতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়াইয় ১ ও লক্ষ্মীপুরের একজন রয়েছেন।

আরও পড়ুন : ১১ জেলায় পানিবন্দি ৪৫ লাখ মানুষ, নিহত ১৩

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভয়াবহ বন্যায় টালমাটাল দেশের কয়েক জেলা

আপডেট সময় ১১:৩১:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

ভয়াবহ বন্যার কবলে টালমাটাল দেশের কয়েকটি জেলা। পানিবন্দি অবস্থায় দিন পার করছেন লাখ লাখ মানুষ ফেনীতে প্রায় ৩ লাখ মানুষ দিন কাটাচ্ছেন পানিবন্দি অবস্থায়। রয়েছে খাবারের প্রচণ্ড সংকট।

জেলার বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও বিঘ্নিত। অনেকেই স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাদের প্রতিটি মূহুর্ত কাটছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।

ফেনী অংশে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি ওঠায় চরমভাবে ব্যাহত যান চলাচল। যানজটও পৌঁছেছে চরমে। পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজির দুর্গত এলাকার মধ্যেই ৫ হাজার বাসিন্দাকে ইতোমধ্যে বাসাবাড়ির ছাদ ও নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে বিভিন্ন বাহিনী।

অন্যদিকে বানের জলে তলিয়ে আছে নোয়াখালী সদর, বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়িসহ মোট ৭ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বাড়িঘর-রাস্তাঘাটও তলিয়ে আছে পানির নিচে। এই জেলার দুর্গত এলাকাগুলোয় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি।

তবে, নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। এখনও বাড়িঘরে পানি থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন অনেকে। দুর্গত এলাকাগুলোয় এখনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে জানা গেছে।

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, বুড়িরচংসহ ১৪ উপজেলার ১১৮টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়েছে। সেসব জায়গায় পানিবন্দি আছেন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ।

জেলায় সাড়ে পাঁচশ’ আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ৪৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে। অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পানি থাকায় কুমিল্লা অংশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৭ লাখ মানুষ রয়েছেন পানিবন্দি অবস্থায়। প্রায় দুইশ’ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন ২০ হাজার মানুষ। তবে বেশিরভাগ আশ্রয়কেন্দ্রেও উঠেছে পানি। চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে বানভাসীদের। প্রকট আকার ধারণ করেছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

তবে, মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার প্লাবিত এলাকা থেকে ধীর গতিতে পানি নামছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছেন অনেকে। তবে এখনও পানিবন্দি আছে নিম্নাঞ্চলের কিছু মানুষ। নিচু এলাকার বাড়িঘর-রাস্তাঘাট এখনও জলমগ্ন।

হবিগঞ্জে ধীর গতিতে নামছে খোয়াই নদীর পানি। তবে এখনও প্লাবিত জেলার ১৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। বাড়িঘর-দোকানপাটে উঠেছে পানি। রাস্তাঘাটও তলিয়েছে পানির নিচে। চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে বানভাসীদের। খোলা হয়েছে ১১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। এরইমধ্যে প্লাবিত ৫ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি সরেছে। তবে এতে দুর্ভোগ কমেনি গ্রামের মানুষের। বানের জল কমে আসায় স্পষ্ট হতে শুরু করেছে ক্ষতচিহ্ন। উজানের ঢলে ভেঙে যাওয়া হাওড়া নদীর বাঁধ দিয়ে এখনও পানি ঢুকছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে বন্যায় ১৩ জনের প্রানহানি নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে– কুমিল্লায় ৪ জন, কক্সবাজারে ৩, ফেনীতে ১, চট্টগ্রামে ২, নোয়াখালীতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়াইয় ১ ও লক্ষ্মীপুরের একজন রয়েছেন।

আরও পড়ুন : ১১ জেলায় পানিবন্দি ৪৫ লাখ মানুষ, নিহত ১৩