ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
১৪ ফেব্রুয়ারি শবে বরাত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ও সংশ্লিষ্টদের ৩৬৮ কোটি টাকার জমি ক্রোকের নির্দেশ হরতাল হবে না, জনগণ আপনাদের শাস্তির অপেক্ষা করছে : রিজভী গুম-হত্যা মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী ৩ দিনের রিমান্ডে সিরাজগঞ্জে চলন্ত ট্রাকে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ; টাক চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড ইজতেমায় নিরাপত্তা আগের চেয়ে বেশি জোরদার করা হয়েছে: আইজিপি হেডম থাকলে দেশে এসে বিচার করেন, গোলাম রাব্বানীকে হাসনাত যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রীবাহী প্লেনের সাথে হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীদের গুয়ান্তানামো কারাগারে পাঠাবেন ট্রাম্প মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৪৯ শিক্ষার্থী প্রমাণ দেখাতে আসেননি

বাটোয়ারা দলিল: জমির বিরোধ মেটানোর অমূল্য হাতিয়ার

জমি ও সম্পত্তি বণ্টনকে কেন্দ্র করে বিরোধ ও ঝামেলার ইতিহাস বহু পুরনো। আধুনিক যুগে জমি সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর প্রধান কারণগুলোর একটি হলো বাটোয়ারা দলিল বা বণ্টন দলিলের অভাব।
বাটোয়ারা দলিলের প্রয়োজনীয়তা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
১. জমি বিরোধের অবসান:
বাটোয়ারা দলিলের অনুপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। অতীতে মুখে মুখে জমি বণ্টন করাই ছিল প্রচলিত, কিন্তু বর্তমান সমাজে মানুষের বিশ্বাস এবং জবানের মূল্য অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। লিখিত দলিলের অভাবে সকালের এক কথা বিকালে অস্বীকার করার ঘটনা ঘটছে, যা বিরোধের সৃষ্টি করে।
২. সম্পত্তি বণ্টনের আইনি প্রমাণ:
ওয়ারিশান সম্পত্তি বণ্টনের জন্য বাটোয়ারা দলিল একটি মৌলিক প্রমাণ। মুসলিম ফারায়েজ অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টন না হলেও, পক্ষগণ যদি পরস্পর সম্মতিতে দলিল সম্পাদন করেন, তবে সেটি সর্বদা গ্রহণযোগ্য।
৩. ভূমি রেজিস্ট্রেশন এবং নামজারি:
জমির সুনির্দিষ্ট মালিকানা নিশ্চিত করতে এসি ল্যান্ড অফিসে বাটোয়ারা দলিল জমা দিতে হয়। এটি নামজারি এবং হালনাগাদ খতিয়ান তৈরি করতে সহায়ক।
৪. ভবিষ্যৎ বিরোধ রোধ:
বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হলে সমস্ত অংশীদারদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হতে হয়। এতে করে কেউ ঠকানোর সুযোগ পায় না এবং দলিলের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে কেউ পুনরায় জমির মালিকানা দাবি করতে পারে না।
৫. জমি বিক্রির ক্ষেত্রে সহায়ক:
ওয়ারিশান জমি বিক্রি করার সময় বাটোয়ারা দলিল প্রদর্শন করা অপরিহার্য। এটি ক্রেতার কাছে জমির মালিকানা ও বণ্টনের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
৬. ভূমি জরিপ ও হালনাগাদ মালিকানা:
ভূমি জরিপকালীন সঠিক মালিকানা লিপিবদ্ধ করতে এবং নিজ নামে খতিয়ান পেতে বাটোয়ারা দলিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. পরিবারের সম্প্রীতি রক্ষায় বাটোয়ারা দলিলের ভূমিকা:
বাটোয়ারা দলিল কেবল আইনি নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্যও অপরিহার্য। এতে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয় এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে স্থায়িত্ব আসে।
উপসংহার:
একটি সঠিকভাবে প্রস্তুতকৃত বাটোয়ারা দলিল জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যৎ বিরোধ প্রতিরোধে এক অনন্য হাতিয়ার। তাই, জমি বণ্টনের সময় দলিল রেজিস্ট্রেশন করা শুধু প্রয়োজনীয় নয়, বরং পরিবারের সম্প্রীতি এবং আইনি নিশ্চয়তার জন্য অপরিহার্য।
লেখক : আইন সচিব, মানবাধিকার তথ্য ও পর্যবেক্ষণ সোসাইটি।

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

রংপুরে আহত যোদ্ধাদের মাঝে ১ কোটি ৭২ লাখ টাকার চেক বিতরণ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

বাটোয়ারা দলিল: জমির বিরোধ মেটানোর অমূল্য হাতিয়ার

আপডেট সময় ০৫:১৩:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
জমি ও সম্পত্তি বণ্টনকে কেন্দ্র করে বিরোধ ও ঝামেলার ইতিহাস বহু পুরনো। আধুনিক যুগে জমি সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর প্রধান কারণগুলোর একটি হলো বাটোয়ারা দলিল বা বণ্টন দলিলের অভাব।
বাটোয়ারা দলিলের প্রয়োজনীয়তা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
১. জমি বিরোধের অবসান:
বাটোয়ারা দলিলের অনুপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। অতীতে মুখে মুখে জমি বণ্টন করাই ছিল প্রচলিত, কিন্তু বর্তমান সমাজে মানুষের বিশ্বাস এবং জবানের মূল্য অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। লিখিত দলিলের অভাবে সকালের এক কথা বিকালে অস্বীকার করার ঘটনা ঘটছে, যা বিরোধের সৃষ্টি করে।
২. সম্পত্তি বণ্টনের আইনি প্রমাণ:
ওয়ারিশান সম্পত্তি বণ্টনের জন্য বাটোয়ারা দলিল একটি মৌলিক প্রমাণ। মুসলিম ফারায়েজ অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টন না হলেও, পক্ষগণ যদি পরস্পর সম্মতিতে দলিল সম্পাদন করেন, তবে সেটি সর্বদা গ্রহণযোগ্য।
৩. ভূমি রেজিস্ট্রেশন এবং নামজারি:
জমির সুনির্দিষ্ট মালিকানা নিশ্চিত করতে এসি ল্যান্ড অফিসে বাটোয়ারা দলিল জমা দিতে হয়। এটি নামজারি এবং হালনাগাদ খতিয়ান তৈরি করতে সহায়ক।
৪. ভবিষ্যৎ বিরোধ রোধ:
বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে হলে সমস্ত অংশীদারদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হতে হয়। এতে করে কেউ ঠকানোর সুযোগ পায় না এবং দলিলের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে কেউ পুনরায় জমির মালিকানা দাবি করতে পারে না।
৫. জমি বিক্রির ক্ষেত্রে সহায়ক:
ওয়ারিশান জমি বিক্রি করার সময় বাটোয়ারা দলিল প্রদর্শন করা অপরিহার্য। এটি ক্রেতার কাছে জমির মালিকানা ও বণ্টনের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
৬. ভূমি জরিপ ও হালনাগাদ মালিকানা:
ভূমি জরিপকালীন সঠিক মালিকানা লিপিবদ্ধ করতে এবং নিজ নামে খতিয়ান পেতে বাটোয়ারা দলিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭. পরিবারের সম্প্রীতি রক্ষায় বাটোয়ারা দলিলের ভূমিকা:
বাটোয়ারা দলিল কেবল আইনি নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্যও অপরিহার্য। এতে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দূর হয় এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে স্থায়িত্ব আসে।
উপসংহার:
একটি সঠিকভাবে প্রস্তুতকৃত বাটোয়ারা দলিল জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যৎ বিরোধ প্রতিরোধে এক অনন্য হাতিয়ার। তাই, জমি বণ্টনের সময় দলিল রেজিস্ট্রেশন করা শুধু প্রয়োজনীয় নয়, বরং পরিবারের সম্প্রীতি এবং আইনি নিশ্চয়তার জন্য অপরিহার্য।
লেখক : আইন সচিব, মানবাধিকার তথ্য ও পর্যবেক্ষণ সোসাইটি।