ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরী মণি।
আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ এই আদেশ দেন। এর আগে আজ সকাল ১০টায় পরী মণি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নিতে হাজির হন। এসময় পরী মণি মানুষের জটলা দেখে হাসতে হাসতে আদালতের এজলাসের ভিতরে প্রবেশ করেন।
পরী মণি আদালতে যাওয়ার পর আদালতের বিচারক উঠলে তার আইনজীবী জামিনের বিষয়ে বলেন, মাননীয় বিচারক, পরী মণি জামিনে ছিল। গতকাল সময়ের আবেদন আদালত নাকচ করার পরে জামিন বাতিল হয়। আজ আদালতে স্বেচ্ছায় এসেছি, জামিন চাচ্ছি। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন ১ হাজার টাকা মুচলেকায় মঞ্জুর করেন।
জামিন শুনানি শেষে পরী মণি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, এটা মিথ্যা মামলা। আমি ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।
এর আগে গতকাল রোববার (২৬ জানুয়ারি) তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়।
২০২১ সালের ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরী মণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পরী মণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামীদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ না করে চলে যান। পরী মণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০২১ সালের ৯ জুন দিবাগত রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরী মণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরী মণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরী মণি বাদীকে গালমন্দ করেন। বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরী মণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথায় ও বুকে আঘাত পান।
বাদী মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, পরী মণি ও তার সহযোগীরা তাকে মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছে এবং ভাঙচুর করেছে। এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরী মণি সাভার থানায় বাদীসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
ব্যবসায়ী নাসিরের করা এ মামলায় গত বছরের ১৮ মার্চ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মনির হোসেন।
গত ২৫ জুন আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং পরী মণি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।