ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদিবাসী ছাত্রদের উপর হামলায় চবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

আদিবাসী ছাত্র-জনতার এনসিটিবি ভবন ঘেরাও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক সংগঠনের সদস্যদের হামলার ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারপূর্বক যথাযথ বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেছে৷

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সমাবেশটি শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাল্লাং এনরিকো মারাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী সানুবাই মারমা।

অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চবি শাখার সভাপতি অন্তর চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম (টিএসএফ), চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পাভেল ত্রিপুরা, রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী, চবির সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরাম, চবির সাধারণ সম্পাদক সুখীজয় তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয় ননন্ন, চবি সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল (বিএমএসসি), চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাথুঅং মারমা, শিক্ষার্থী ফুংপ্রে ম্রো, মাছেন হ্লা রাখাইন, ধনরঞ্জন ত্রিপুরা প্রমুখ।

সমাবেশে অন্তর চাকমা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফুটিয়ে তুলতে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করতে আদিবাসী সম্বলিত গ্রাফিতি বইয়ে যোগ করা হয়েছিল। গ্রাফিতি বাতিল করে প্রশাসন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। আদিবাসীদের উপর হামলা পরিকল্পিত ছিল। প্রশাসনের সামনে আদিবাসীদের উপর হামলা ন্যাক্কারজনক। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল হোতারা ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংবিধান সংস্কারের যে সুপারিশ করা হয়েছে সেখানে আদিবাসীদের যুক্ত করতে হবে। আদিবাসীদের অধিকারকে অবহেলা করা হলে সংগ্রাম দীর্ঘতম ও কঠোর হবে।

সেখানে পহেলা চাকমা বলেন, রাষ্ট্র আমাদের পরিচয় নির্ধারন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের বারবার পরিচয়ের দাবিতে দাঁড়াতে হয়। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সেটেলাররা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে সেটেলাররা বারবার হামলা করার উৎসাহ পায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত এই ধরনের হামলা সংঘটিত হচ্ছে। আমরা যখনই অধিকারের কথা বলি, তখনই সন্ত্রাসী ট্যাগ দেওয়া হয়। দেশের সকল সচেতন গণতান্ত্রিক চেতনাশীল নাগরিকদের এ বিষয়ে আওয়াজ তোলা উচিৎ।

সভাপতির বক্তব্যে ভুবন চাকমা বলেন, আমরা জুলাই আন্দোলন পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আদিবাসী ও বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। যেখানে আদিবাসীদের অধিকার ও আত্মপরিচয় স্বীকৃত হবে। কিন্তু এই রাষ্ট্র আদিবাসী জনগণের ওপর আরও শোষণ-নিপীড়ন চাপিয়ে দিয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানাই এবং ঢাকায় আদিবাসী ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর নৃশংস হামলার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানাই।

সভাপতি বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশটি একটি মিছিলের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলটি শহীদ মিনার হতে কলার ঝুপড়ি দিয়ে প্রশাসনিক ভবন হয়ে আবার শহীদ মিনারে এসে সমাপ্ত হয়।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

আদিবাসী ছাত্রদের উপর হামলায় চবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

আপডেট সময় ০৫:৫১:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

আদিবাসী ছাত্র-জনতার এনসিটিবি ভবন ঘেরাও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি নামক সংগঠনের সদস্যদের হামলার ঘটনায় অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারপূর্বক যথাযথ বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আদিবাসী শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল করেছে৷

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সমাবেশটি শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাল্লাং এনরিকো মারাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী সানুবাই মারমা।

অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চবি শাখার সভাপতি অন্তর চাকমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম (টিএসএফ), চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পাভেল ত্রিপুরা, রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠী, চবির সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরাম, চবির সাধারণ সম্পাদক সুখীজয় তঞ্চঙ্গ্যা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয় ননন্ন, চবি সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল (বিএমএসসি), চবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাথুঅং মারমা, শিক্ষার্থী ফুংপ্রে ম্রো, মাছেন হ্লা রাখাইন, ধনরঞ্জন ত্রিপুরা প্রমুখ।

সমাবেশে অন্তর চাকমা বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফুটিয়ে তুলতে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করতে আদিবাসী সম্বলিত গ্রাফিতি বইয়ে যোগ করা হয়েছিল। গ্রাফিতি বাতিল করে প্রশাসন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। আদিবাসীদের উপর হামলা পরিকল্পিত ছিল। প্রশাসনের সামনে আদিবাসীদের উপর হামলা ন্যাক্কারজনক। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল হোতারা ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংবিধান সংস্কারের যে সুপারিশ করা হয়েছে সেখানে আদিবাসীদের যুক্ত করতে হবে। আদিবাসীদের অধিকারকে অবহেলা করা হলে সংগ্রাম দীর্ঘতম ও কঠোর হবে।

সেখানে পহেলা চাকমা বলেন, রাষ্ট্র আমাদের পরিচয় নির্ধারন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের বারবার পরিচয়ের দাবিতে দাঁড়াতে হয়। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সেটেলাররা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে সেটেলাররা বারবার হামলা করার উৎসাহ পায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত এই ধরনের হামলা সংঘটিত হচ্ছে। আমরা যখনই অধিকারের কথা বলি, তখনই সন্ত্রাসী ট্যাগ দেওয়া হয়। দেশের সকল সচেতন গণতান্ত্রিক চেতনাশীল নাগরিকদের এ বিষয়ে আওয়াজ তোলা উচিৎ।

সভাপতির বক্তব্যে ভুবন চাকমা বলেন, আমরা জুলাই আন্দোলন পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আদিবাসী ও বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম। যেখানে আদিবাসীদের অধিকার ও আত্মপরিচয় স্বীকৃত হবে। কিন্তু এই রাষ্ট্র আদিবাসী জনগণের ওপর আরও শোষণ-নিপীড়ন চাপিয়ে দিয়েছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানাই এবং ঢাকায় আদিবাসী ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর নৃশংস হামলার সুষ্ঠু বিচার ও অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানাই।

সভাপতি বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশটি একটি মিছিলের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলটি শহীদ মিনার হতে কলার ঝুপড়ি দিয়ে প্রশাসনিক ভবন হয়ে আবার শহীদ মিনারে এসে সমাপ্ত হয়।