টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের পর এবার নকলা ও শেরপুর সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে নতুন করে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে।
ঢলের সাথে বৃষ্টি থাকায় বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় ২ লাখ মানুষ। আজ রোববার (৬ অক্টোবর) ভোগাই নদীর পানি নাকুগাঁও পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
অন্যদিকে, পাহাড়ি ঢলের স্রোতে নালিতাবাড়ীতে নিখোঁজ হওয়ার ২৪ ঘন্টা পর শনিবার সন্ধ্যায় নন্নীর কুতুবাকুড়া এলাকায় ধানক্ষেত থেকে হাতেম ও আলমগীর নামে আরও দুই সহোদর ভাইয়ের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এনিয়ে পাহাড়ি ঢলে নালিতাবাড়ীতে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। নিখোঁজ রয়েছে আরও ৩ জন।
নিন্মাঞ্চলে ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নালিতাবাড়ী-নকলা সড়কের ওপর দিয়ে পানি গড়িয়ে যাচ্ছে। ওই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করলেও শেরপুর-নালিতাবাড়ী ভায়া গাজীর খামার সড়কে ঢলের কারণে শনিবার থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নালিতাবাড়ী-শেরপুর ভায়া তিনানী সড়কটির রানীগাঁও এলাকায় ঢলের তোড়ে ভেঙে একদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ভাঙা অংশে রোববার বালির বস্তা ফেলে সাময়িকভাবে সড়ক যোগাযোগ চালুর চেষ্টা করছে। উজানের বাড়িঘর থেকে বন্যার নেমে যাওয়ায় নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে ঢলের তাণ্ডবে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে ওঠেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ডুবে গেছে ফসলি জমি। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, চলতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমির আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর জমির সবজির আবাদ পানির নিচে তালিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জানা যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।