ঢাকা ১১:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুরুঙ্গামারীতে কৃষি কর্মকর্তার পুষ্টিবাগান পরিদর্শন

কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় পারিবারিক পতিত জমি এবং বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল জব্বার । 
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকালে উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিংঝাড় ব্লকের কৃষাণী মোছাঃ সুরমা বেগমের বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় পুষ্টিবাগান পরিদর্শন করেন তিনি ।
এই প্রকল্প  কিষাণী সুরমা বেগমকে তিন মৌসুমের বিভিন্ন প্রকার বীজ, জৈব সারসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার, বাউন্ডারী বেড়া দেওয়ার জন্য নেট, সেচ দেওয়ার জন্য ঝাজরি( ঝর্না) ও ছয়টি বিভিন্ন ফলের চারা বিতরণ করা হয় এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
 এ প্রসঙ্গে কৃষাণী সুরমা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বসতবাড়ির পাশের জমিটি দীর্ঘদিন থেকে পতিত ছিল। কোন শাকসবজি বা ফলের গাছ লাগাইনি। স্থানীয় ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সু-পরামর্শে আমার বসতবাড়ির আঙ্গিনায়  বিভিন্ন শাকসবজি, ঢেঁড়স, বেগুন, মরিচ, লাল শাক বাঁধাকপি,পালং শাক, মাচায় লাউ ও মিষ্টি কুমড়া প্রভৃতি আবাদ করে নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকার অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করেও বেশ কিছু টাকার সবজি  বিক্রি করে অর্থ জমিয়েছি। এখন আমার প্রতিবেশীদের প্রতি সু- পরামর্শ হলো আমার মত সকলের যদি বাড়ির বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এরকম পুষ্টিবাগান স্থাপন করে তাহলে বাজার থেকে আর শাকসবজি ও তরকারি কিনে খেতে হবে না। পারিবারিক পুষ্টি যোগান হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হবে ও আত্মিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
উল্লেখ্য যে, কিষাণী সুরমা বেগমের পুষ্টি বাগান দেখে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় আরও ১২ জন পুষ্টি বাগান করেন।
 এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার  বলেন, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে  ১০০টি করে পুষ্টিবাগানের উপকরণ  বিতরণ ও স্থাপন চলমান  রয়েছে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া। সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সারোয়ার তৌহিদ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কৃষক কৃষাণীগণ এবং সাংবাদিক নুরুল আমিন।
‘পারিবারিক পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে’ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষকদের পতিত জমি ও আঙিনায় সবজি, ফলমূল এবং ভেষজ উদ্ভিদের চাষাবাদ উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পরিবারগুলো যেমন নিজের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারছে, তেমনি অতিরিক্ত উৎপাদন থেকে আর্থিক সচ্ছলতাও অর্জন করছে।
পরিদর্শনকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পরিবারভিত্তিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা এবং অপ্রচলিত বা পতিত জমিকে ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগানো। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বীজ ও সার সরবরাহ করে সহায়তা করছি।”
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবারকে মৌসুমি সবজি, পেঁপে, লেবু, মরিচ, লাউসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর ফসলের চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অনেকে ইতোমধ্যেই এই প্রকল্প থেকে সুফল পেতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষাণী হাজেরা বেগম বলেন, “আগে আমাদের বাড়ির পাশে জমি পড়ে থাকতো, এখন সেখানে লাউ, ঢেঁড়স আর পেঁপে চাষ করে আমরা নিজেরাও খাই, আবার বিক্রিও করতে পারি।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও কয়েকশত পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভুরুঙ্গামারীতে কৃষি কর্মকর্তার পুষ্টিবাগান পরিদর্শন

আপডেট সময় ০৭:১৫:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় পারিবারিক পতিত জমি এবং বসতবাড়ির আঙ্গিনায় পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আব্দুল জব্বার । 
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকালে উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিংঝাড় ব্লকের কৃষাণী মোছাঃ সুরমা বেগমের বসতবাড়ীর আঙ্গিনায় পুষ্টিবাগান পরিদর্শন করেন তিনি ।
এই প্রকল্প  কিষাণী সুরমা বেগমকে তিন মৌসুমের বিভিন্ন প্রকার বীজ, জৈব সারসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার, বাউন্ডারী বেড়া দেওয়ার জন্য নেট, সেচ দেওয়ার জন্য ঝাজরি( ঝর্না) ও ছয়টি বিভিন্ন ফলের চারা বিতরণ করা হয় এবং বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।
 এ প্রসঙ্গে কৃষাণী সুরমা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বসতবাড়ির পাশের জমিটি দীর্ঘদিন থেকে পতিত ছিল। কোন শাকসবজি বা ফলের গাছ লাগাইনি। স্থানীয় ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামের সু-পরামর্শে আমার বসতবাড়ির আঙ্গিনায়  বিভিন্ন শাকসবজি, ঢেঁড়স, বেগুন, মরিচ, লাল শাক বাঁধাকপি,পালং শাক, মাচায় লাউ ও মিষ্টি কুমড়া প্রভৃতি আবাদ করে নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকার অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করেও বেশ কিছু টাকার সবজি  বিক্রি করে অর্থ জমিয়েছি। এখন আমার প্রতিবেশীদের প্রতি সু- পরামর্শ হলো আমার মত সকলের যদি বাড়ির বসতবাড়ির আঙ্গিনায় এরকম পুষ্টিবাগান স্থাপন করে তাহলে বাজার থেকে আর শাকসবজি ও তরকারি কিনে খেতে হবে না। পারিবারিক পুষ্টি যোগান হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হবে ও আত্মিকভাবে স্বাবলম্বী হবে।
উল্লেখ্য যে, কিষাণী সুরমা বেগমের পুষ্টি বাগান দেখে নিজ উদ্যোগে স্থানীয় আরও ১২ জন পুষ্টি বাগান করেন।
 এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার  বলেন, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে  ১০০টি করে পুষ্টিবাগানের উপকরণ  বিতরণ ও স্থাপন চলমান  রয়েছে। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া। সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সারোয়ার তৌহিদ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় কৃষক কৃষাণীগণ এবং সাংবাদিক নুরুল আমিন।
‘পারিবারিক পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে’ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় কৃষকদের পতিত জমি ও আঙিনায় সবজি, ফলমূল এবং ভেষজ উদ্ভিদের চাষাবাদ উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পরিবারগুলো যেমন নিজের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারছে, তেমনি অতিরিক্ত উৎপাদন থেকে আর্থিক সচ্ছলতাও অর্জন করছে।
পরিদর্শনকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে পরিবারভিত্তিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা এবং অপ্রচলিত বা পতিত জমিকে ফলপ্রসূভাবে কাজে লাগানো। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বীজ ও সার সরবরাহ করে সহায়তা করছি।”
তিনি আরও জানান, প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবারকে মৌসুমি সবজি, পেঁপে, লেবু, মরিচ, লাউসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর ফসলের চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অনেকে ইতোমধ্যেই এই প্রকল্প থেকে সুফল পেতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় কৃষাণী হাজেরা বেগম বলেন, “আগে আমাদের বাড়ির পাশে জমি পড়ে থাকতো, এখন সেখানে লাউ, ঢেঁড়স আর পেঁপে চাষ করে আমরা নিজেরাও খাই, আবার বিক্রিও করতে পারি।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও কয়েকশত পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।