সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। আয়নাঘর নামে পরিচিত একটি ঘর থেকে ছয় মাস নিখোঁজ থাকা দুইজন—শিল্পী খাতুন ও বৃদ্ধ আব্দুল জুব্বার—অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন।
শুক্রবার (২ মে) ভোরে উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সোনারাম পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।মুক্তিপ্রাপ্ত শিল্পী খাতুন লক্ষীবিষ্ণুপ্রসাদ গ্রামের মুনসুর আলীর স্ত্রী এবং আব্দুল জুব্বার পূর্বপাইকড়া গ্রামের মৃত রুস্তম শেখের ছেলে।শিল্পী খাতুন জানান, তাকে পাঁচ-ছয় মাস ধরে বন্দি রাখা হয়েছিল। এক মাস একটি অজানা স্থানে রাখা হয়। মাঝে মাঝে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখা হতো এবং শরীরের অঙ্গ বিক্রির হুমকি দেওয়া হতো।
তিনি অভিযোগ করেন, এই অপকর্মের সাথে পল্লি চিকিৎসক আরাফাত, স্থানীয় মেম্বার শরীফ, কামরুল ইসলাম, হাফিজুল, পান্নাসহ আরও কয়েকজন জড়িত। এদের মধ্যে অনেকেই মুখোশ পরে থাকতেন।
বৃদ্ধ আব্দুল জুব্বার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার হন এবং তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার পরিবার জানায়, তিনি প্রায় ছয় মাস আগে নিখোঁজ হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাদেরকে চান্দাইকোনার সোনারাম পূর্বপাড়ার সুমনের বাড়ির আয়নাঘরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র আটকে রেখেছিল। দীর্ঘ ছয় মাস বন্দি থাকার পর শুক্রবার রাত তিনটায় তারা কাঁচি দিয়ে মাটি খুঁড়ে সুরঙ্গ তৈরি করে পালাতে সক্ষম হন।
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম আরাফাতের পশ্চিম লক্ষ্মীখোলা বাড়িতে হামলা চালায়, ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়নাঘর চিহ্নিত করেন। ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম আরাফাতকে গোয়েন্দা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে।
রায়গঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং একটি অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তারা দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।