হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরে আঘাত হানার পর ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দিচ্ছে একের পর এক বিদেশি এয়ারলাইন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলের ফ্লাইট স্থগিত করার কথা জানিয়েছে।
এদের মধ্যে রয়েছে: অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস, এয়ার ফ্রান্স, রায়ানএয়ার, আজারবাইজান এয়ারলাইনস, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং এয়ার ইউরোপা। এয়ার ইন্ডিয়া, উইজ এয়ার, লুফথানসা, সুইস এবং আইটিএ এয়ারলাইনস আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলি ‘অ্যারো’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হুথিদের এই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। ফলে ক্ষেপণাস্ত্রটির আঘাতে আটজন আহত হন। তবে পুরো ঘটনার বিস্তারিত এখনো পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হামলা চালিয়ে আসা ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরকে ‘আর নিরাপদ নয়’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ঘটনার পরপরই হুথি গোষ্ঠীর শীর্ষস্থানীয় সদস্য মোহাম্মদ আল-বাহিতি কাতারভিত্তিক আল আরাবি টেলিভিশনকে বলেন, বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরে হামলা আমাদের ইসরায়েলের সুরক্ষিত স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার সামর্থ্য প্রমাণ করে।
হামলার পর বিমানবন্দরের সব প্রবেশপথ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং বিমানবন্দরগামী ট্রেন চলাচলও স্থগিত করা হয়। আরও হামলার আশঙ্কায় কিছু ফ্লাইটকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। মধ্য ইসরায়েলজুড়ে বেড়ে ওঠে সাইরেন, প্রাণভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় অনেক ইসরায়েলি।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি বিমানবন্দরের একটি সংযোগ সড়কে আঘাত হানে এবং তার ধ্বংসাবশেষ আশপাশের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে।
হামলার জেরে ইসরায়েলের ফ্লাইট সূচিতে বড় ধরনের বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টা এর প্রভাব চলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে বলেছেন, যারা আমাদের আক্রমণ করবে, আমরা তাদের সাতগুণ জবাব দেবো।
ইসরায়েল রেজিলিয়েন্স পার্টির নেতা ও সাবেক যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ বলেন, হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করা উচিত। তিনি বলেন, ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে ইরান, এবং তাদের এর দায় নিতে হবে। তবে তিনি এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি।
ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়াইর গোলান বলেছেন, লাখ মানুষ আবার আশ্রয়কেন্দ্রে, গাজায় বন্দি ইসরায়েলিরা মরছে, জীবনযাত্রার ব্যয় সাধারণ পরিবারকে চূর্ণ করছে এবং রিজার্ভ বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধের ভারে ভেঙে পড়ছে। এগুলো নেতানিয়াহুর জন্য ভালো, সরকারের জন্য ভালো। কিন্তু আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে, যুদ্ধের ইতি টানতে হবে।
সূত্র: হারেৎজ, আল-জাজিরা